ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মৃত্যুর মুখ থেকে স্বজনদের কাছে, আনন্দ উচ্ছ্বাস

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০১:৩০ এএম
আপডেট: ১৫ মে ২০২৪, ০৮:২৩ এএম
মৃত্যুর মুখ থেকে স্বজনদের কাছে, আনন্দ উচ্ছ্বাস
চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর সন্তানকে জড়িয়ে ধরে আবেগাপ্লুত এক নাবিক। ছবি : মোহাম্মদ হানিফ

জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিককে উষ্ণ অভ্যর্থনার মাধ্যমে বরণ করা হয়েছে। দীর্ঘ ৬২ দিন নানা শঙ্কা ও উৎকণ্ঠায় কাটিয়ে অবশেষে চট্টগ্রামের ভূমিতে নেমেছেন নাবিকরা। চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটিতে তাদের স্বজন, জাহাজের মালিকপক্ষ ও বন্দরের কর্মকর্তাদের আনন্দ উচ্ছ্বাসের অবতারণা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেল ৪টায় কেএসআরএম গ্রুপের অপর লাইটার জাহাজ এমভি জাহান মণি-৩ কুতুবদিয়া থেকে নাবিকদের নিয়ে বন্দরে আসে। জাহাজ ভেড়ার আগেই নাবিকরা ব্রিজের ওপর এসে হাত নাড়তে থাকেন। এদিক থেকে স্বজনরা হাত নেড়ে অভ্যর্থনা জানান। পরে ওই জাহাজের সঙ্গে একটি সিঁড়ি যুক্ত করা হলে একে একে ২৩ নাবিক নেমে আসেন। প্রথমেই নামেন জাহাজের ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবদুর রশিদ বলেন, ‘জীবন নিয়ে ফিরে আসব, সেটা কখনো ভাবিনি। নিজের ভেতরে ভয় ছিল, তবু সাহসের সঙ্গে জলদস্যুদের হ্যান্ডেল করেছি। জিম্মি হওয়ার দিন আমার বুকে একে ৪৭ রাইফেল ধরেছিল। আমার অন্য নাবিকরা ভয় পেয়ে যান। প্রথমেই আমি বলেছি আমরা মুসলিম, আমরা রোজা রেখেছি। তোমরা আমাদের ক্ষতি করো না। জলদস্যুরা আমাদের ওপর পরে তেমন খারাপ আচরণ করেনি। তারা সব সময় অস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় ছিল, যা দেখলে যে কেউ ভয় পাবে।’

বন্দরের জেটিতে নাবিকদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভির আহমদের মা জ্যোৎসা বেগম ছেলের বউকে নিয়ে উপস্থিত হন। তাদের চোখেমুখে আনন্দের উচ্ছ্বাস। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ছেলের জন্য উপস্থিত হয়েছেন মা। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ছেলের জন্য শিমের বিচি, গরুর মাংস, শুঁটকি রান্না করেছেন। কারণ তার ছেলে এগুলো পছন্দ করেন। বাসায় ফিরে তা দিয়ে ভাত খেতে দেবেন ছেলেকে।

বন্দরে উপস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জিম্মি হওয়ার পর থেকে আমরা খুবই বিচলিত ছিলাম। কখন কী হবে, আমাদের নাবিকরা ফিরে আসতে পারবেন কি না। কখন ফিরে আসবেন? সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে তারা দেশে ফিরে এসেছেন। এটিই আমাদের বড় পাওয়া। সরকারের কূটনৈতিক পদক্ষেপের জন্য আজ তারা দেশে ফিরে এসেছেন। আজ আমি আনন্দিত। আবেগ ধরে রাখতে পারিনি বলেই আমি ছুটে এসেছি। আমি নাবিকদের সুস্থতা কামনা করি।’

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এর আগে এত দ্রুত জাহাজ মুক্ত হয়নি। এ জাহাজ মুক্ত করার জন্য বিদেশি জাহাজ বলপ্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা অনুমতি দিইনি। জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপও সেটা চায়নি। এতে জাহাজের নাবিকরা মৃত্যুর শঙ্কায় পড়তে হতো। আমরা নাবিকদের জীবনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ফলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে আজ নাবিকরা আমাদের দেশে ফিরে এসেছেন। এটি আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফসল। আমি ধন্যবাদ জানাই বন্দর কর্তৃপক্ষ, জাহাজের মালিক কেএসআরএম গ্রুপকে।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারা একটি বড় অর্জন। কারণ জলদস্যুরা খুব জঘন্য হয়, নির্যাতন ও মারধর করে। এর মধ্যে আমাদের নাবিকরা একেবারেই অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসেছেন।’

মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার জাহান বলেন, ‘আমাদের ভাইয়েরা দেশে ফিরে এসেছেন। এটি আমাদের দেশের জন্য বড় অর্জন। আমরা সমুদ্র জয় করেছি। এবার জিম্মি জাহাজের নাবিকদেরও জয় করেছি। কারণ নাবিকদের ফিরে আনা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার ছিল। তবে আমরা যখন যেটি সরকারকে বলেছি তাতে দ্রুত সাড়া পেয়েছি। নাবিকরা দেশে ফিরেছেন, এটি দেশের জয়।’

কবির গ্রুপের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, ‘জিম্মি হওয়ার পর থেকেই জাহাজ কীভাবে মুক্ত করব, সেই বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আন্তর্জাতিক সব অ্যাঙ্গেলে চেষ্টা করেছি জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের। অবশেষে সফল হয়েছি। খুব কম সময়ের মধ্যে নাবিকরা ফিরে এসেছেন।  আল্লাহর কাছে শোকরিয়া।’

এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় জাহাজটি নোঙর করেছিল কুতুবদিয়ায়। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় নাবিকদের। এরপর ২৩ নাবিক চলে যান পরিবারের কাছে।

প্রসঙ্গত, আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার জলদস্যুরা ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করেছিল। গত ১৪ এপ্রিল ভোররাতে জাহাজটি জলদস্যুমুক্ত হয়। এ সময় ৬৫ জন জলদস্যু জাহাজটি থেকে বোটে নেমে যায়।

গত ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে জাহাজটি দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে ভেড়ে। কয়লা খালাস শেষে ২৭ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নতুন ট্রিপের পণ্য লোড করতে ইউএইর মিনা সাকার বন্দরে যায় জাহাজটি। সেখান থেকে চুনাপাথর নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

প্রায় ৬ মাস পর পরিবারের কাছে ফিরেছেন ২৩ নাবিক। গত ২৯ নভেম্বর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে উঠেছিলেন তারা। কোরিয়া থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকে যায় জাহাজটি। ৪ মার্চ মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ হাইজ্যাক হয় এটি।

৪ মার্চ থেকে টানা ৭০ দিন নাবিকদের সময় কাটে জিম্মিদশায়, নানা দুশ্চিন্তা-দুর্দশায়। নাবিকরা হলেন জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুরুদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।

এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল কেএসআরএম গ্রুপের এসআর শিপিং লিমিটেডের আরেকটি জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সে সময় ৪০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হলেও এবার কত টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। 

> ‘আমাদের দিয়ে রান্না করিয়ে দস্যুরা খেয়ে ফেলত’
> জীবনটা অস্ত্রময় হয়ে উঠেছিল
> মেহেদিরাঙা হাতে ফুল ও কেক নিয়ে নুরকে বরণ করলেন স্ত্রী
> ‘মায়ের ছেলে মায়ের বুকে ফিরেছে’
> মৃত্যুর হুমকি ছিল, কিন্তু সাহস রেখেছি : এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন
> বাবাকে ছাড়তেই চাইছিল না দুই মেয়ে, বুকে জড়িয়ে থাকে বহুক্ষণ
> ছেলের জন্য গরুর মাংস, শুঁটকি ও শিমের বিচি রান্না করে এনেছি

রাজশাহীতে ৯ জনের করোনা শনাক্ত

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:১৫ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
রাজশাহীতে ৯ জনের করোনা শনাক্ত
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে নতুন করে ৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্য অধিকাংশই চিকিৎসক।

সোমবার (২ জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পিসিআর ল্যাবে ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এ ফলাফল পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৬০ শতাংশ।

রামেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক খন্দকার মো. ফয়সল আলম বলেন, ‘আক্রান্তদের মধ্য সাতজন চিকিৎসক বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবাই হালকা উপসর্গে ভুগছেন। তবে শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে এবং সুস্থ হতে সময় লাগছে। তাদের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে- হালকা জ্বর, সর্দি ও কাশি।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার বেড়েছে। যদিও অধিকাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। তবে বয়স্ক ও ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েছে।’ 

৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের শরীরে উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে নমুনা জমা দিয়ে পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। এতে সরকারি ফি ১০০ টাকা নির্ধারিত এবং দুপুরের মধ্যে ফল পাওয়া যাচ্ছে। মাস্ক পরে যাওয়া বাধ্যতামূলক।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস জানান, বর্তমানে একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অন্যদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় তারা বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এনায়েত/পপি/

সব চাকরিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক চায় ইসি: এনআইডি মহাপরিচালক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:০০ পিএম
সব চাকরিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক চায় ইসি: এনআইডি মহাপরিচালক
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ সব চাকরিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক করা দরকার বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) নির্বাচন ভবনে এনআইডি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর।

এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবী যাদের আইবাসের মাধ্যমে বেতন হয়ে থাকে চাকরিকালীন দেওয়া তথ্যের সঙ্গে তাদের এনআইডির তথ্যের অসঙ্গতির কারণে অনেকের বেতন আটকে আছে বা বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। এতে তারা এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দারস্থ হচ্ছেন। চাকরি দেওয়ার সময়ে এনআইডি বাধ্যতামূলক থাকলে তাদের এ সমস্যায় পড়তে হতো না। এজন্য চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে এনআইডি বাধ্যতামূলক করা দরকার বলে আমরা মনে করি।’

এ বিষয়ে সোমবার (২ জুন) সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে চাকরিজীবীদের এনআইডি সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেছে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। 

এ সময় চাকরির আইনে এনআইডি বাধ্যতামূলক করা না হলেও এনআইডির তথ্য অমিল থাকা বা এনআইডিকে প্রাধান্য দিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কারণ অনেকের একাডেমিক সার্টিফিকেটের সঙ্গে এনআইডির তথ্য অমিল থাকায় চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংশোধনীর জন্য বলা হয়েছে। 

এ সময় এনআইডির হালনাগাদ কার্যক্রমের অগ্রগতি জানতে চাইলে মহাপরিচালক জানান, আইনগত কিছু বিষয় থাকায় হালনাগাদের কিছু কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে নতুন ভোটার করার কাজ চলমান। 

তিনি জানান, আগামী জুলাইয়ের ১৫ তারিখের মধ্য জাপানে ভোটার তালিকার কাজ শুরু হবে।

এলিস/পপি/

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: সিপিডি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: সিপিডি
জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ বিশ্লেষণ। ছবি: খবরের কাগজ

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখার প্রস্তাব জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। 

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজের জন্য হয়েছিল। বাজেটের প্রত্যয়টা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার, সেটার সঙ্গে এই প্রস্তাব চরমভাবে সাংঘর্ষিক। কেননা এতে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হোন। যারা নিয়মিত নৈতিকভাবে কর দেন, তাদের নৈতিকতাতে আঘাত করা হয়েছে। এতে বৈধপথে উপার্জনকারীদের সঙ্গে বৈষম্য তৈরি হবে। তা ছাড়া এই পদক্ষেপে সরকারের খুব বেশি রাজস্ব আয় হবে বলেও মনে হয় না। এই সুযোগ থাকলে মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য প্লট বা ফ্ল্যাট কেনা অসম্ভব হয়ে যাবে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য আরও বাড়বে।’ 

মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর এক হোটেলে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ বিশ্লেষণ নিয়ে সিপিডির মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো গোলাম মোয়াজ্জেমসহ সংশ্লিষ্টরা। 

প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাজেটে অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে গেলে সেখানে অপ্রদর্শিত আয় দেখিয়ে বর্ধিত হারে বিশেষ কর দিয়ে সেটি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আমরা সব সময় বলে এসেছি কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব একেবারেই বন্ধ করা উচিত। এটা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়, আমরা এটা সমর্থন করছি না।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে মানুষের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এসব উদ্দেশ্যের পেছনে ব্যবস্থা বা পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। এ ছাড়া বাজেটের থিম ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠন। কিন্তু এর সঙ্গে কিছু রাজস্ব ব্যবস্থা সাংঘর্ষিক।’

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেট আকারের দিক থেকে ব্যতিক্রমী, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ছোট। প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক উদ্যোগ প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মধ্যে কর ছাড়, বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ ও প্রণোদনা এবং ক্ষতিকর কার্যকলাপের ওপর উচ্চহারে কর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেট চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে সামগ্রিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা জনগণ ও ব্যবসার জন্য বাস্তবিক স্বস্তি আনতে পারত। 

এতে আরও বলা হয়, বাজেটের থিম একটি ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠন। কিন্তু এর সঙ্গে কিছু রাজস্ব ব্যবস্থা সাংঘর্ষিক।

সিপিডি আশা করে, অর্থ উপদেষ্টা বাজেটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব, বিশেষ করে অঘোষিত আয় বৈধ করার মতো বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা ও সংশোধন করবেন। এই কঠিন সময়ে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।

মৃত্তিকা/পপি/

রংটং দিয়ে ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
রংটং দিয়ে ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ঈদযাত্রায় রং দিয়ে ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অফিস কক্ষের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয় জানান। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো মালিক ভাইয়েরা রংচং করে রাস্তায় নামান। রংটং দিয়ে ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি কোনো অবস্থায় রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় একজন ড্রাইভার রাজশাহীতে একটা গাড়ি নিয়ে গেলে সেখান থেকে আবার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসতে হয়। আমরা তাদের বলেছি চালকদেরকে যেন পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য রয়ে গেছেন। কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা যেন না হয় এ বিষয়ে আমরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোপুরি সজাগ রয়েছে। পুলিশের জন্য আমরা শুধু জরুরি ছুটিটি রেখেছি, বাকি সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’

তপন/পপি/

সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ প্রণোদনা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ প্রণোদনা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

সরকারি চাকরিজীবীদের আগামী জুলাই থেকে বিশেষ প্রণোদনার হার বিদ্যমান ৫ শতাংশ থেকে গ্রেড অনুযায়ি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (৩ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ি, ১০ম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই ৫ শতাংশসহ মোট ১৫ শতাংশ এবং ১ম থেকে ৯ম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তারা মোট ১০ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা পাবেন। 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত সরকারি-বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলো, ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী এবং পুনঃস্থাপনকৃত পেনশনাররাসহ পেনশনভোগী ব্যক্তিদের জন্য ১ জুলাই থেকে বেতনগ্রেড-ভেদে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রদান করা হলো। এই বিশেষ সুবিধা চাকরিরতদের ক্ষেত্রে নূন্যতম এক হাজার এবং পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০০ টাকা হারে প্রদেয় হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, যারা অবসরোত্তর ছুটিতে আছেন, তারা অবসর নেওয়ার আগের মূল বেতনের ভিত্তিতে এই সুবিধা পাবেন। 

আবার যারা পেনশন পাচ্ছেন, তারাও এই বিশেষ সুবিধার আওতায় থাকবেন। 

তবে যারা পেনশনের পুরো টাকা এককালীন তুলে নিয়েছেন, তারা এই সুবিধা পাবেন না। 

বিনা বেতনে ছুটিতে থাকা কর্মীরাও এই সুবিধা পাবেন না।

অমিয়/