সম্পদে নারীর সমঅধিকার ও অভিন্ন পারিবারিক আইনের সুপারিশসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার বিষয়ে সুপারিশ করেছে কমিশন, যেখানে সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি জোরালো করার কথা বলা হয়েছে। নারীর অগ্রগতির জন্য আছে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও জাতীয় সংস্থাগুলোর দক্ষতা বাড়ানোর সুপারিশও।
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে নারীর স্বার্থ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে বলেছে। সহিংসতামুক্ত সমাজ গঠনে নারী ও মেয়ে শিশুর সুরক্ষা, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে জনপরিসরে নারীর অংশগ্রহণ এবং জনপ্রশাসনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়ানোর কথাও এসেছে প্রতিবেদনে।
এছাড়া শিক্ষা, প্রযুক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, সব বয়সী নারীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও সম্পদের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠা, শ্রম ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পদক্ষেপ এবং নারী শ্রমিকদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার প্রস্তাব এসেছে।
দারিদ্র্য কমাতে টেকসই সামাজিক সুরক্ষা, গণমাধ্যমে নারীর অংশগ্রহণ ও ইতিবাচক চিত্রায়ণ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে নারীর অন্তর্ভুক্তি এবং দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নারীর অংশগ্রহণও কমিশনের সুপারিশের অন্তর্ভুক্ত।
এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হকের নেতৃত্ব নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শিরিন পারভীন হককে প্রধান করে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ১০ সদস্যের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।
কমিশনের সদস্যরা হলেন- ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার ও নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আক্তার।
এছাড়াও কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।