
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৫ শতাংশ বাড়িতে (হাউস ইনডেক্সে) এডিস মশার লার্ভা ও পিউপা (লার্ভার পরের স্তর) পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উত্তর সিটিতে পাওয়া গেছে ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। দক্ষিণে পাওয়া গেছে ১৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ, যা উত্তরের চেয়ে দক্ষিণ সিটিতে বেশি। এই দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের ১৮টিতে ব্রুটো ইনডেক্স (এডিসের লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক) ২০-এর বেশি। ব্রুটো ইনডেক্সে ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মনে করা হয়। অর্থাৎ এসব এলাকার ১০০টি পাত্রের মধ্যে ২০টির বেশিতে এডিস মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে গত ১৭ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চালানো প্রাক-বর্ষা জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) জরিপের ফলাফল প্রকাশের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে ‘মৌসুম-পূর্ব এডিস সার্ভে-২০২৪-এর ফলাফল অবহিতকরণ সভা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক দাউদ আদনান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই জরিপে উভয় সিটি করপোরেশনের ৩ হাজার ১৫২টি বাড়ি পরিদর্শন করেন জরিপকারীরা। এর মধ্যে ৪৬৩টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা ও পিউপা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে বহুতল ভবন ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, স্বতন্ত্র বাড়ি ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবন ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, সেমিপাকা বাড়ি ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও খালি জায়গা ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ঝুঁকিপূর্ণ ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো– ১২, ১৩, ২০, ৩৬, ৩১, ৩২, ১৭, ৩৩ নং ওয়ার্ড। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ১২ নম্বর ওয়ার্ড। যার ব্রুটো ইনডেক্স ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এরপরে ১৩ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৩১ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ, ১৭ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো– ১৩, ৪, ৫২, ৫৪, ১৬, ৩, ৫, ১৫, ১৭, ২৩নং ওয়ার্ড। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড। যার ব্রুটো ইনডেক্স ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ৫২ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৩, ৫, ১৫, ১৭ এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।
জরিপে আরও বলা হয়, প্লাস্টিক ড্রামে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ, মেঝেতে জমানো পানিতে ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, প্লাস্টিক বালতিতে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ, ফুলের টবে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ লার্ভা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া প্লাস্টিক মগ, পাত্র, বদনায় ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, পানির মিটারের গর্তে ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ, পানির ট্যাংকে (সিমেন্ট) ৫ দশমিক ২০ শতাংশ, গাড়ির ব্যবহৃত টায়ারে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং অন্যান্য জিনিসে ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ লার্ভা পাওয়া গেছে।