বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগ থেকে রোগীদের প্রত্যাশিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাঁতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত চেয়ারগুলো অকেজো থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সংকট রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জামের। বাধ্য হয়ে রোগীরা বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে সেবা নিচ্ছেন।
চেয়ারগুলোর সংস্কার চেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এরই মধ্যে কর্মবিরতি পালন করেছেন। ‘কিছু’ সমস্যা থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যৌক্তিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে শিগগিরই সমাধান করা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০১২ সালে ডেন্টাল বিভাগ চালু করা হয়। বর্তমানে এখানে ১২ জন চিকিৎসক আছেন। এই বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০০ রোগী চিকিৎসা নেন। ১৪টি ডেন্টাল চেয়ারের মধ্যে মাত্র চারটি সচল রয়েছে, বাকিগুলো অচল। সচল চেয়ারের কয়েকটিতে আবার আলো জ্বলে না। কোনোটিতে রয়েছে পানিপ্রবাহের সমস্যা। সব মিলিয়ে দন্ত বিভাগের চেয়ারগুলো যেন থেকেও নেই। এতে রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হন। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে পরিচালকের কাছে আবেদন করেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেন।
চিকিৎসা নিতে আসা আলম নামে এক রোগী বলেন, ‘গত সপ্তাহে হাসপাতালে দাঁত দেখাতে আসি। ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি রোগীদের দীর্ঘ সারি। যে চেয়ারে বসিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয় সেগুলোর বেহাল অবস্থা। বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে ডাক্তার দেখাই।’
রফিক নামে রোগীর এক স্বজন জানান, শনিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখি ডেন্টাল ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তাই ওই দিন চিকিৎসা করাতে পারিনি। পরের দিন গিয়ে দীর্ঘ চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর ভাঙা একটি চেয়ারে বসে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবায় দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ মানুষের শেষ ভরসার জায়গা এই হাসপাতালটির দন্ত (ডেন্টাল) বিভাগের এমন করুণ অবস্থা মেতে নিতে কষ্ট হয়।’
ডেন্টাল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. এস এম ওমর ফারুক বলেন, ‘চলতি বছরের শুরু থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ফল পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার ও শনিবার ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আন্দোলন করেছেন। আশা করি এবার হাসপাতাল প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর ডেন্টাল বিভাগের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করবে।’
হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ডেন্টাল বিভাগে থাকা চেয়ার ও সরঞ্জাম নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। সেগুলো নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। যৌক্তিক সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।’