ঢাকা ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সিলেটে ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি জব্দ

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
আপডেট: ০৬ জুন ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
সিলেটে ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি জব্দ
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটে ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনির চালান জব্দ করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। জব্দ করা চিনির আনুমানিক বাজার মূল্য দুই কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ভোর ৬টার দিকে জালালাবাদ থানা এলাকায় উমাইরগাঁওয়ে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ এই চিনি জব্দ করা হয়। 

এ সময় একটি মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়। 

এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শাহপরাণ (রহ.) থানা পুলিশের অভিযানে একটি ট্রাকসহ ১৩ হাজার ৭২০ কেজি ভারতীয় চিনি জব্দ ও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে জালালাবাদ থানা এলাকার উমাইরগাঁওয়ে অবস্থান নিয়ে ভারতীয় চিনিবোঝাই ১৪টি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। চেকপোস্ট দেখে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়।’

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ১৪টি ট্রাকের অন্তত তিনজন করে বাহক থাকার কথা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অন্তত অর্ধশত চোরাকারবারি এই চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এ ঘটনায় মামলা করে আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।

সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারতীয় চিনির বিরুদ্ধে সাাঁড়াশি অভিযান চালানোর নির্দেশনায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সবকটি থানার মুখে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপনের নির্দেশনা রয়েছে। কোনোভাবে অবৈধ চিনি মহানগরী এলাকায় যাতে প্রবেশ না করতে পারে, এ জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে।’

সিলেটের সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে আসা চোরাই চিনি নিয়ে খবরের কাগজে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও ভিডিও স্টোরি প্রকাশের ২৪ ঘন্টার মাথায় দুটো সাাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।

> চোরাইপথে অবাধে আসছে, ধ্বংসের পথে দেশি চিনিশিল্প
> ভারতীয় চোরাই চিনিতে বাজার সয়লাব, থামানো যাচ্ছে না চোরাচালান

এস বি/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

বিলিয়ন ডলার ক্লাবে নাবিল গ্রুপ

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
বিলিয়ন ডলার ক্লাবে নাবিল গ্রুপ
রাজশাহীর পবায় নাবিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে পার্টনারস মিট অনুষ্ঠানে হাজারো ডিলার/পরিবেশকরা। ছবি: সংগৃহীত

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে অবদান রাখা রাজশাহীর ভোগ্যপণ্য উৎপাদক ও আমদানিকারক শিল্প প্রতিষ্ঠান নাবিল গ্রুপ এখন বিলিয়ন ডলার ক্লাবে।

দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারে শীর্ষস্থানীয় অবস্থানে উঠেছে রাজশাহীভিত্তিক নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নাবিল গ্রুপের আমদানিকৃত পণ্যের মোট মূল্য ছিল ১২১ কোটি ডলার। গ্রুপটি এখন বিলিয়ন ডলার বা শতকোটি ডলার ক্লাবের অন্যতম সদস্য। বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষিপণ্য সরবরাহ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিশেষ ভূমিকা রেখে এ অবস্থান তৈরিতে উচ্ছ্বাসিত নাবিল গ্রুপের পরিবেশকরাও।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজশাহীর পবায় নাবিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে পার্টনারস মিট ২০২৪ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানে হাজারো ডিলারদের/পরিবেশকদের মাঝে এ উচ্ছ্বাসের ছাপ দেখা যায়।

দিনব্যাপী নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম জানান, গ্রুপটি গম, মসুর ডাল, মটর ডাল ও সয়াবিন মিলসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে দেশের মোট গম আমদানির ২৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ, মসুর ডালের ৪৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং মটর ডালের ৫৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ হয়েছে নাবিল গ্রুপের মাধ্যমে। ফলে বাংলাদেশের ভোগ্য পণ্যের বাজারে বড় আমদানিকারক হয়ে উঠেছে নাবিল গ্রুপ।

অনুষ্ঠানে নাবিল গ্রুপের সিইও কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, নৈতিকতা ও গুণগতমানে আপোষহীন নাবিল গ্রুপ পণ্য আমদানি ছাড়াও কিছু ভোগ্য পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে চাল উৎপাদনে এই গ্রুপ দেশের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নাবিল গ্রুপ বর্তমানে দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

নাবিল গ্রুপ দৈনিক চাল উৎপাদক্ষনের সক্ষমতা ১ হাজার ৩৬৪ টন। কৃষি শিল্পের প্রসার ঘটিয়ে, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নাবিল প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছে বলে জানান তিনি।

গ্রুপটির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আরও বলে, ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করা শিল্প গ্রুপটি এখন বিলিয়ন ডলার বা শতকোটি ডলার ক্লাবের অন্যতম সদস্য। আর এ অর্জনের ভাগিদার কোম্পানির সকল কর্মকর্তা ও ডিলার।

জাহাঙ্গীর আলম/এমএ/

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৫৬২

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পিএম
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৫৬২

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬২ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে এডিস মশাবাহিত রোগে ৫২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৯৫ হাজার ৬৩২ জন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫ জনের মধ্যে ৩ জন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আর বাকি দুজন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ২৬৮ জন, ঢাকা বিভাগে ৫৫, ময়মনসিংহে ১৮, চট্টগ্রামে ৭৮, খুলনায় ৪৭, রাজশাহী বিভাগে ৩৭, রংপুর বিভাগে দুজন, বরিশাল বিভাগে ৫৩ এবং সিলেট বিভাগের হাসপাতালে চারজন ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২৪০৮ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৬ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৪১২ জন।

চলতি বছরে জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন। মারা যান ১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত হন ৩৩৯ জন। মারা যান তিনজন। মার্চে আক্রান্ত হন ৩১১ জন। মারা যান ৫ জন। এপ্রিলে আক্রান্ত হন ৫০৪ জন। মারা যান দুজন। মে মাসে আক্রান্ত হন ৬৪৪ জন। মারা যান ১২ জন। জুনে আক্রান্ত হন ৭৯৮ জন। মারা যান ৮ জন। জুলাইয়ে আক্রান্ত হন ২৬৬৯ জন। মারা যান ১২ জন। আগস্টে আক্রান্ত হন ৬৫২১ জন। মারা যান ২৭ জন। অক্টোবরে আক্রান্ত হন ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। মারা যান ১৩৫ জন। নভেম্বরে আক্রান্ত হন ২৯ হাজার ৬৫২ জন। মারা যান ১৭৩ জন। ডিসেম্বরের প্রথম সাত দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ১৬৩ জন। তার মধ্যে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। তার মধ্যে ২০২৩ সালে সারা দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বার্ডোর কর্মশালায় বক্তারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়
‘প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলধারার শিক্ষায় একীভূতকরণের লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের (প্রতিবন্ধী) মূলধারার শিক্ষায় একীভূত করে তাদের দক্ষতার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এই তাগিদ দেন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ‘প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলধারার শিক্ষায় একীভূতকরণের লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় মিরপুর রূপনগরে বার্ডোর (ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন) নিজস্ব কার্যালয়ে।

বার্ডোর নির্বাহী পরিচালক মো. সাইদুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলাউদ্দিন আল আজাদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের অতিরিক্ত পরিচালক (উপসচিব) মুখলেসুর রহমান। কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আসফিয়া সিরাত, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) পরিচালক জেসমীন আক্তার (উপসচিব), সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (গবেষণা, মূল্যায়ন, প্রকাশনা ও জনসংযোগ শাখা) লাভলী খানম, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গবেষণা কর্মকর্তা মো. আজিম কবির, বার্ডোর নির্বাহী পরিচালক (একুশে পদক) প্রাপ্ত মো. সাইদুল হক প্রমুখ।

বক্তারা কর্মশালায় বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা সমাজেরই অংশ। তাদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নয়নের মূল স্রোতে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের মূলধারার শিক্ষায় একীভূত করে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তাদের জীবন-জীবিকার পথ সম্প্রসারিত করতে হবে। এ জন্য দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধমিক পর্যায়ে তাদের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করতে হবে। যে জন্য প্রয়োজন কারিকুলাম পরিবর্তন, সংশোধন ও সামগ্রিক বিষয়ে গবেষণা। 

কর্মশালায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের কর্মমুখী শিক্ষা, শ্রুতি লিখন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষকদের ট্রেনিংসহ যা যা প্রয়োজন, সেসব লিখিতভাবে জানানোর আহ্বান জানালে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।

কর্মশালায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের বেশকিছু বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে চিত্রায়নের মাধ্যমে বর্ণনামূলকভাবে যেসব বিষয় শেখার সুযোগ আছে তা ব্রেইল পদ্ধতিতে শেখার ব্যবস্থা রাখা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ (ধারা ৩) অনুসারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ধরন ও ধরনসমূহের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা। প্রথম শ্রেণি থেকে সব পাঠ্যপুস্তকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ইতিবাচক গল্প অন্তর্ভুক্ত করা, ব্রেইল পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষা-খেলাধুলার উপকরণ সরবরাহ করা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা।

উল্লেখ্য, বার্ডোতে অত্যাধুনিক ৬টি ব্রেইল প্রিন্টার আছে। আবাসিক বিদ্যালয়ে ৬০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্র আছে। চক্ষু হাসপাতাল আছে। বার্ডো মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এর কর্মকর্তারা।

এমএ/

গত তিন নির্বাচন ছিল ত্রুটিপূর্ণ: রেহমান সোবহান

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
গত তিন নির্বাচন ছিল ত্রুটিপূর্ণ: রেহমান সোবহান
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। ছবি: সংগৃহীত

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেছেন, গত তিনটি নির্বাচন ছিল ত্রুটিপূর্ণ। সেই নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আবার কেবল রাবার স্ট্যাম্পের মতো কাজ করতেন। অবসরে তারা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে সময় ব্যয় করেছেন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) উদ্যোগে আয়োজিত এবিসিডি সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

রেহমান সোবহান মনে করেন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অগণতান্ত্রিক। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন ঘটেছে। সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় রীতিমতো জমিদার হয়ে যান। ফলে স্থানীয় সরকার অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।

বিগত সরকারের প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান ও গুণগত মান নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকলেও সেই সময় দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের গতি ভালো ছিল বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ। দারিদ্র্যের বহুমুখী সূচকেও বাংলাদেশ ভালো করেছে। মানব উন্নয়নেও ভালো করেছে।

তিনি বলেন, শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনেও দারিদ্র্যবিমোচনের বিষয়টি নিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখযোগ্য। দারিদ্র্যের হার ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নিয়ে আসা কোনো বিচারে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।

পুষ্টিমান, শিশুমৃত্যু, পড়াশোনার সময়, পানের পানির প্রাপ্যতা, আবাসন- এসব ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন রেহমান সোবহান। এ বাস্তবতায় তার মত, গবেষকদের কাজ হবে বাংলাদেশ প্যারাডক্সের নতুন রূপের সন্ধান করা। এত দিন সুশাসনের অভাবের মধ্যে কীভাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা নিয়ে ছিল বিস্ময়। এখন দেখতে হবে, এ ধরনের অসম সমাজ ও অপশাসনের মধ্যে কীভাবে দারিদ্র্যবিমোচন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে এতটা ভালো করল বাংলাদেশ। তার বিশ্বাস, এই গবেষণা করতে গিয়ে অর্থনীতিবিদরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।

অর্থনীতিবিদদের সমালোচনা করে রেহমান সোবহান বলেন, অসমতা পরিমাপের ক্ষেত্রে শুধু খানা আয়-ব্যয় জরিপের পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হচ্ছে। এর বাইরে কেউ যাচ্ছে না। তার মত, এ ক্ষেত্রে আয়করের বিবরণী গুরুত্বপূর্ণ আকর। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘খানা আয়-ব্যয় জরিপে শীর্ষ আয়ের মানুষের যে মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে, তা হলো ১০ লাখ টাকার সম্পদ ও মাসিক ৩০ হাজার টাকা আয়। এ সম্পদ এবং আয় গুলশান ও বারিধারার বেশির ভাগ গাড়িচালকেরই আছে। এই মানদণ্ড বিচার করা হলে আমাদের মতো অনেক মানুষই পরিসংখ্যান থেকে হারিয়ে যাবে। গবেষকরা যা করছেন, তা মূলত আলংকারিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের বলে মনে করেন তিনি।

রেহমান সোবহান আরও বলেন, সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। ঋণখেলাপিদের সুবিধা দেওয়ার সরকারের নীতি দেশে অসমতা বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু সেই বৈষম্যের চরিত্র যথাযথভাবে চিত্রিত করা হচ্ছে না। কোথায় কোথায় কোন খাতে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে, তা নিরূপণ করা গেলে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল শনিবার থেকে শুরু হওয়া বিআইডিএসের এই সম্মেলন আগামী মঙ্গলবার শেষ হবে।

এমএ/

উত্থান-পতনেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক টিকে আছে: প্রণয় ভার্মা

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
উত্থান-পতনেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক টিকে আছে: প্রণয় ভার্মা
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নানা পরিবর্তন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ, উত্থান-পতন সত্ত্বেও পারস্পরিক সংবেদনশীলতা, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে এই সম্পর্ক টিকে আছে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এ মন্তব্য করেছেন। 

‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী দিবস উপলক্ষে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ।

প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘আমাদের সুসম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস, যেখানে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ, গঠনমূলক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। এর ভিত্তি ছিল সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক বোঝাপড়া। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশের জনগণ প্রধান অংশীদার। যে সম্পর্ক আমরা তৈরি করেছি, তার প্রধান উদ্দেশ্য দুই দেশের জনগণের উন্নয়ন। এতে দুই দেশের জনগণই উপকৃত। দুই দেশের বর্ডার ট্রান্সপোর্ট, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঞ্চালন, আমাদের অর্থনৈতিক সংযোগ- এগুলো মূলত আমাদের জনগণের সমৃদ্ধি তৈরি করে এবং তাদের কল্যাণে অবদান রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের সমাজ গভীরভাবে সংযুক্ত। আমরা কেউ এককভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারব না। আমরা আমাদের ভৌগোলিক ঘনিষ্ঠতাকে ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা এবং নতুন উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা চালিত নতুন সুযোগে রূপান্তর করতে চাই। এটা সত্য যে বাংলাদেশে অশান্ত পরিবর্তন সত্ত্বেও আমাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, আমাদের পরিবহন ও জ্বালানি সহযোগিতা, আমাদের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা ইতিবাচক গতি বজায় রেখেছে- যা প্রমাণ করে আমাদের সম্পর্ক সত্যিই স্থিতিশীল।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে যা পরিবর্তন হচ্ছে তা পারস্পরিক নির্ভরতার বাস্তবতা এবং পারস্পরিক সুবিধা সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকবে।’

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভারত। ইতিহাসগতভাবেই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক স্মরণীয়। কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ১০ দিন আগেই ভারত স্বীকৃতি দেয়। এটি একটি মাইলফলক, যা কখনো মুছে ফেলা যায় না। ওই তারিখটি দুই দেশের অংশীদারত্বের একটি বড় চিহ্ন।’

তিনি বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করেছে। ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ এবং ভারত অনেক দূর এগিয়েছে, উন্নতি করেছে দ্রুতগতির সঙ্গে। দ্রুতগতির অর্থনীতি, ধারাবাহিক উন্নতি, মানুষের উন্নত ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষার উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যে নতুন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। যা আজ আমাদের বহুমুখী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একে অপরের উন্নয়নের পরিপূরক।’

বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ির (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির সাবেক পরিচালক মনিরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির আহমেদ চৌধুরী, বাচিকশিল্পী টিটু মুনশী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীতসহ বিভিন্ন রণসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।

এমএ/