ঢাকা ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পশুর গাড়ি থামিয়ে চাঁদা দাবি করলে কঠোর ব্যবস্থা: আইজিপি

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম
পশুর গাড়ি থামিয়ে চাঁদা দাবি করলে কঠোর ব্যবস্থা: আইজিপি
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। ছবি : খবরের কাগজ

পশুর গাড়ি থামিয়ে চাঁদা দাবি কিংবা গন্তব্যের আগে গাড়ি থেকে পশু নামানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। 

শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেলে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিস্থিতি পরিদর্শন ও পরিবহন চালকদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদউত্তীর্ণ পরিবহন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘরমুখো মানুষ যেন স্বস্তিতে ঘরে ফিরতে পারে সেজন্য সড়ক-মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক স্তরের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এসময় অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে ঝুকিপূর্ণভাবে যাতায়াত না করার জন্য যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ করেন।

বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ‘ইএসইএটি’ প্রযুক্তি

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ‘ইএসইএটি’ প্রযুক্তি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের গাজীপুর ইউনিয়ন এলাকায় বজ্রপাত প্রতিরোধী আর্লি স্ট্রিমার ইমিশন এয়ার টার্মিনাল (ইএসইএটি)’ যন্ত্র। ছবি: খবরের কাগজ

বজ্রপাতে প্রতিবছর গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ জন প্রাণ হারায়। তাদের বড় অংশই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। এবার অবশ্য কিছুটা আশার কথা শোনা যাচ্ছে। তাদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বজ্রপাত প্রতিরোধী ‘আর্লি স্ট্রিমার ইমিশন এয়ার টার্মিনাল (ইএসইএটি)’ নামক যন্ত্র স্থাপন করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে বজ্রপাত নিরোধক এই যন্ত্রের মাধ্যমে বজ্রপাতকে নিমিষে মাটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে এই যন্ত্র ব্যবহার করে সুফল পেয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এ ছাড়া হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দুটি ইউনিয়নে সুফল মিলেছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

স্থানীয় সরকার বিভাগ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৭৫০টি ইএসইএটি যন্ত্র স্থাপন করেছে। এসব যন্ত্র স্থাপনের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বজ্রপাতে এখন পর্যন্ত কোনো মানুষের মৃত্যু হয়নি। ইএসইএটি নামক যন্ত্রটি তার চারদিকে ৪০০ মিটারের মধ্যে বজ্রপাত সৃষ্টি হলে নিজের দিকে টেনে মাটিতে পাঠিয়ে দেয়। এতে সেই স্থানের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পায়। ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া ও নেপালেও ইতোমধ্যে এ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। এসব দেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্কুল, হাসপাতাল, কৃষিজমি ও উপকূলীয় এলাকাগুলোতে স্মার্ট বজ্রপাত নিরোধক রড, গ্রাউন্ডিং ও লাইভ মনিটরিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদে সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাটিতে একটি ইএসইএটি যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। পাশেই ধান কাটছিলেন তিন কৃষক। আঞ্চলিক ভাষায় তারা জানান, এই এলাকায় বজ্রপাতের পরিমাণ অনেক বেশি। চোখের সামনে তারা অনেক মৃত্যু দেখেছেন। জমির পাশে এই যন্ত্র বসানোর পর গত দুই বছরে এ এলাকায় কেউ বজ্রপাতে মারা যায়নি। 

একই জায়গায় নালায় জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন মো. সুবেল মিয়া।

তিনি বলেন, ‘এ যন্ত্র স্থাপনের পর আমরা অভয়ে এখানে কাজ করতে পারছি। আগে ঝড় এলেই ভয় করত। দৌড়ে বাড়িতে আশ্রয় নিতাম।’ একই ইউনিয়নের গোবরখলা গ্রামের শিক্ষার্থী জুবায়ের তালুকদার বলেন, ‘যন্ত্রটি বসানোর আগের বছরও খোয়াই নদে বজ্রপাতে এক জেলে এবং পাশের গ্রামে দুটি গরু ও এক নারী মারা যায়। বজ্রপাতে এলাকার ২০-২৫টি গাছও নষ্ট হয়। তবে যন্ত্রটি স্থাপনের পর এ অঞ্চলে বজ্রপাতে কেউ মারা যাননি।’ 

চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নে আরেকটি যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন সুরক্ষা পাচ্ছে জানিয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চলে এ ধরনের যন্ত্র স্থাপনের কারণে আমরা সুরক্ষিত আছি।’

চুনারুঘাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তা নুর মামুন বলেন, ‘বজ্রপাত থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে দুই বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি স্থানে ইএসইএটি ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে। যন্ত্রটি স্থাপনে মাত্র একটি খুঁটি প্রয়োজন হয়, ফলে কৃষকের জমি নষ্ট হয় না। এমন উদ্যোগ আরও সম্প্রসারিত করা দরকার।’

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকনিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ইএসইএটি যন্ত্রটি সরবরাহ করছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এ ডিভাইসটির চারদিকে ৪০০ মিটার এলাকায় বজ্রপাত হলে তা নিজের দিকে টেনে মাটিতে নিয়ে যায়। সঠিকভাবে যত্ন নিলে এটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। আমরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২০১৯ সালে প্রায় ৭৫০টি স্থানে এ যন্ত্র স্থাপন করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের তৈরি ইন্ডিলেক অ্যাসেট সিস্টেম, যা এখন বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটি শুধু একটি বজ্রনিরোধক রড নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট ডিভাইস। এর ভেতরে সংযুক্ত রয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক (আইওটি) তথ্য বিশ্লেষণ ও সরাসরি পর্যবেক্ষণের সুবিধা। যন্ত্রটি সোলার থেকে চার্জ নেওয়ায় আলাদা বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে না। ই-সিমের কারণে সরাসরি ডেটাগুলো পাওয়া যায়। যেকোনো স্থানে বসে মোবাইল ফোনে বা কম্পিউটারে এর কার্যক্রম মনিটরিং করা যায়।’

দুর্যোগ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের ১৫টি জেলায় সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। এর মধ্যে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ অন্যতম। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ান গবেষণা করছেন বাংলাদেশের বজ্রপাত নিয়ে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ‘হাওর অঞ্চলের নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলায় প্রাক-বর্ষা মৌসুমে (মার্চ-এপ্রিল-মে মাসে) বেশি বজ্রপাত হয়। বর্ষা মৌসুমে (জুন-জুলাই-আগস্ট) বজ্রপাত বেশি হয় সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, বরিশাল এবং উত্তরবঙ্গের রংপুর, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামে। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কক্সবাজারে বর্ষা মৌসুমের পর (অক্টোবর-নভেম্বর) বেশি বজ্রপাত হয়। এমনকি সাতক্ষীরা, খুলনা ও পটুয়াখালীতে শীতকালেও বজ্রপাত হয়।

আইকনিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বিজনেস হেড শেখ হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের আর্লি স্ট্রিমার ইমিশন এয়ার টার্মিনাল বজ্রপাত হলে ড্যাস বোর্ডে ই-মেইলে সব ধরনের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। আর তথ্য জমা থাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত। এই প্রযুক্তি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপন করেছে। সেখানে তারা ভালো ফলাফল পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন কৃষক, শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এ যন্ত্রের মাধ্যমে তা করা যায়।’

তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০১:২০ পিএম
তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক। তার দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই। তারেক রহমান যখন দেশের ফেরার সময় মনে করবেন, তখন ফিরবেন।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে গাজীপুরের সালনা হাইওয়ে থানা ও ব্যারাক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

স্বরাষ্ট্র স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারত থেকে যাদের পুশইন করা হচ্ছে, তারা প্রোপার চ্যানেলে আসছে না। অমানবিকভাবে তাদের বাংলাদেশের ঢোকানো হচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশি নাগরিক যারা তাদের (ভারত) দেশে আছে, তাদের আমরা অবশ্যই নেব। এজন্য তাদের প্রোপার চ্যানেলে আসতে হবে। কিন্তু তারা সেটি ফলো করে না। বিষয়টি আমরা হাইকমিশনারকে জানিয়েছি, আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন।’

ভারতসহ বিভিন্ন দেশ আগতদের মাধ্যমে যাতে করোনা না ছড়ায় সেজন্য বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।

পরে তিনি পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি শফিকুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে: আইন উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০১:০৩ পিএম
আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে: আইন উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে।

বুধবার (১২ জুন) রাতে ড. আসিফ নজরুল তার ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে ‘নিন্দা’ শিরোনামে এক পোস্টে বলেছেন,

‘‘কয়েকদিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন বিষয়ক ভুল সংবাদের জেরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই ঝড়ের অন্যতম শিকার হয় আমার পরিবারের সদস্যরা। দুএকজন তাদের ধিক্কার দিতে থাকে, কীভাবে এই আইন করলাম আমি! তারা বলে: এটা তো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় করেছে! কিন্তু সমালোচকরা নাছোড়বান্দা! না, আইনটিতে তো লেখা আছে আইন মন্ত্রণালয়ের নাম। 

আমি জানি, এরকম বহু শিক্ষিত মানুষ আছে সমাজে। তাদের কাছে সবিনয়ে বলি, অন্য যে কোনো মন্ত্রণালয় যে অধ্যাদেশই করুক না কেন, তা জারি করতে হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। আমাদের রুলস্ অব বিজনেস অনুসারে এটাই বিধান। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে এটাই হয়। বাংলাদেশে এনবিআর নিয়ে যে আইনটা (অধ্যাদেশ) হয়েছে, তা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ার পর এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে। সরকারী কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিয়ে যে আইন, তাও করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে। 

অধ্যাদেশ আকারে যত আইন অতীতে হয়েছে সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় জারি করেছে। ভবিষ্যতে যেসব অধ্যাদেশ হবে সেগুলোও আইন মন্ত্রণালয়কে জারি করতে হবে। এজন্য গেজেটের প্রথম পাতায় আইন মন্ত্রণালয়ের নামই থাকবে। কিন্তু তার মানে এটি নয় যে আইন মন্ত্রণালয় আইনগুলো করেছে বা এটি আইনগুলোর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়।

আইন মন্ত্রণালয় নিজস্ব উদ্যোগে আইন করেছে কেবল এ মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে। যেমন, দেওয়ানি কার্যবিধির সংশোধনী আইন বা উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইনটি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের কোনো ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। আছে শুধু জারি করার দায়িত্ব। এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা। 

২. 
আইন তো তবু কিছুটা খটমটে বিষয়। কিন্তু সাদামাটা, সহজবোধ্য যে কোনো বিষয়েও আমাকে নিন্দা করার প্রবণতা আছে সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের যে কোনো কাজের সমালোচনা যদি আমাকে করা হয়, তাহলে যে কোনো ভালো কাজের  প্রশংসাও আমাকে কেন করা হয় না?  

সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে বিদেশে গেলেন এই দায় যদি স্বরাষ্ট্র  মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দেওয়া হয়, তাহলে দ্রব্যমূল্য যে স্থির রয়েছে এই প্রশংসাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দিতে হবে। কিন্তু এর কোনটিই আসলে করা ঠিক নয়। 

আমার কাজের জন্য নিন্দা/প্রশংসা আমাকে করবেন, অন্যর কাজের জন্য অন্যকে। যে কোনো কাজের সামগ্রিক দায়দায়িত্ব আমাদের গোটা সরকারের। কিন্তু যদি নির্দিষ্টভাবে একজন উপদেষ্টাকে দায়ী করা হয় তাহলে সেটি শুধু তার মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিষয়ে করা উচিত। 

৩.
যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এরমধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনও বহন করতে চাইবেন না। এটি মনে রাখা ভালো। 

আমি জানি ‘অপরের মুখ ম্লান করে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই’- এমন মানুষ আছে সমাজে। যারা এমন না, তাদের কাছে অনুরোধ, কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন।

আল্লাহ আছেন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে।’’

অমিয়/

পাচারের অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্রচেষ্টা জোরদার

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
পাচারের অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্রচেষ্টা জোরদার
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করেছে বল জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (১১ জুন) লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া। তাই এ কাজে গতি আনতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে।’

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডন সফরে রয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

প্রেস সচিব আরও জানান, পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইমস অ্যাজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

তিনি বলেন, পাচারের অর্থ শনাক্ত, কীভাবে পাচার হয়েছে তা খুঁজে বের করা ও জব্দ করার বিষয়ে ‘এনসিএ’র ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বিষয়ে সংস্থাটি ইতোমধ্যে দুটি পদক্ষেপও নিয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, পাচারের অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায় তা জানতে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতাও যাচাই করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই একাধিক বৈঠক হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েলের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।

শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে বাংলাদেশের উদ্যোগ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়েও তারা আলোচনা করেন। - সূত্র বাসস

অমিয়/

ঢাকায় ফেরা: রেলে শিডিউল বিপর্যয়, ফাঁকা বাস

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১১:১৯ এএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ১১:২৫ এএম
ঢাকায় ফেরা: রেলে শিডিউল বিপর্যয়, ফাঁকা বাস
ফাইল ছবি

ঈদুল আজহার ছুটি কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। রাজধানীর চার আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ও ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে এখনো ঢাকায় ফিরে আসা যাত্রীদের ঢল নামেনি। 

বুধবার (১১ জুন) সকালে বিভিন্ন জেলা থেকে যারা বাসে ঢাকায় এসেছেন, তারা স্বস্তির যাত্রার কথা বলেছেন খবরের কাগজকে। তবে রাজশাহীর নন্দনগাছি স্টেশনে রেলপথ অবরোধের ঘটনায় বুধবার উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রেনগুলোর শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। এতে বিপাকে পড়েন ঢাকামুখী হাজারও যাত্রী। 

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বুধবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২৮টি আন্তনগর ট্রেন যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসেছে। পূর্বাঞ্চল রুটের শিডিউল ঠিক থাকলেও পশ্চিমাঞ্চল রুটের ট্রেনগুলো শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের। 

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন খবরের কাগজকে, ‘রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা ১৫ মিনিট দেরিতে বুধবার দুপুর পৌনে ২টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে। পরে দ্রুত যাত্রী নামিয়ে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহীর উদ্দেশে আবার ছেড়ে গেছে।

রাজশাহী থেকে সকালে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেসও নির্ধারিত সময়ের পৌনে ২ ঘণ্টা পর ঢাকায় আসে। ট্রেনটি বিকেল আড়াইটায় কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাড়ে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে। 

রাজশাহীর মধুমতি এক্সপ্রেসও প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুরে আসে। ট্রেনটি বিকেল ৩টায় রাজশাহীর উদ্দেশে যাত্রার কথা থাকলেও তা ছাড়ে বিকেল ৫টার পরে। 

পঞ্চগড় থেকে ঢাকা অভিমুখী দ্রুতযান এক্সপ্রেস বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের স্থলে কমলাপুর ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেস রাত ১১টার দিকে ছেড়ে যায়। 

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় নিয়ে ঢাকা রেল স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাজশাহীর চারঘাটের নন্দনগাছী রেলওয়ে স্টেশনের চারটি আন্তনগর ট্রেনের স্টপেজ (যাত্রাবিরতি) ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এতে বনলতা, মধুমতি, সিল্কসিটি ও সাগরদাঁড়ি ট্রেন আটকা পড়ে। এ কারণেই শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে।’

করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ফিরতি পথে যাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে ফিরতি যাত্রায় এ নিয়ে কড়াকড়ি দেখা গেল না কোনো ট্রেনে। আন্তনগর, কমিউটার কোনো ট্রেনের যাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও মাস্ক পরতে বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে যাত্রীদের নির্দেশনা দেয়নি। এ নিয়ে রেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

গতকাল দুপুরে সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, ফিরতি যাত্রার বাসে যাত্রী তুলনামূলক কম। বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটির এখনো তিন দিন বাকি থাকায় অধিকাংশ মানুষ ফিরেননি ঢাকায়। তারা শনিবার রাত বা রবিবার ভোরে ফিরবেন ঢাকায়। ফিরতি যাত্রায় অনেকে অনলাইনে বাসের টিকিট রিজার্ভ করে রেখেছেন বলে জানান পরিবহন কর্মীরা।

জানতে চাইলে হানিফ পরিবহন, গোল্ডেন লাইনের কাউন্টার ব্যবস্থাপকরা বলেন, সকালের দিকে ঢাকায় ফিরে আসা যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি থাকলেও দুপুর গড়াতে তা কমে আসে। তবে আগামী শুক্রবার সকাল থেকেই সব বাস যাত্রী পূর্ণ করে ঢাকায় ফিরবে। আগামী শনিবার অনেক বেসরকারি অফিস খুলবে। রবিবার থেকে সরকারি অফিস-আদালতের কার্যক্রম পুরোদমে চালু হবে। 

সায়েদাবাদে কথা হয় পটুয়াখালী থেকে আসা যাত্রী হাফিজুর রহমানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘যাত্রাপথে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। খুব সকালে রওনা হয়ে দুপুরের মধ্যে ঢাকায় আসতে পেরেছি, এটা স্বস্তিদায়ক। পথে গাড়ির চাপও তেমন নেই।’