
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু। শুক্রবার (১৪ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তিনি এই জবানবন্দি দেন। বাবু ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা (আদালতে দায়িত্বরত) পুলিশের উপপরিদর্শক জালাল উদ্দিন এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বাবু দায় স্বীকার করে আদালতে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান আসামিকে আদালতে হাজিরের পর জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত বাবুর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ‘হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের’ এই মামলা করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসায় তারা সপরিবারে বসবাস করেন। গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে তার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তিনি তার বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। এরপর আনারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি বন্ধ পান। ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে ‘উজির মামার’ হোয়াটসঅ্যাপে একটি খুদে বার্তা আসে। তাতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি। আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউ টাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। আমি পরে ফোন দেব।’ এ ছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। খুদে বার্তাগুলো আনারের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা পাঠায়।
মামলায় ডরিন আরও উল্লেখ করেন, এরপর বিভিন্ন জায়গায় তিনি তার বাবার খোঁজ শুরু করেন। সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু (ভারতীয়) গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে সেই দেশে বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডরিন জানতে পারেন, অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার বাবাকে অপহরণ করেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার শিকার হয়েছে বলে ভারতের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে একটি হত্যা মামলা করা হয়।