
সড়ক-মহাসড়কে চলাচলের সময় গতিসীমা নীতিমালার তোয়াক্কা না করে একের পর এক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে ওঠা মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকগুলোকে এবার নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১৯ জুন) সকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক নীতিমালা প্রণয়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীকে নির্দেশনা দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইদানিং অ্যাক্সিডেন্টের যে প্রবণতা তাতে দেখা যাচ্ছে, মোটরসাইকেলে অ্যাক্সিডেন্ট বেশি। ইজিবাইকগুলো ....তিন চাকার.. এগুলোও এক্সিডেন্টের মূল কারণ। বিআরটিএ বলছে, ৯৫টি দুর্ঘটনায় ৯২টি ক্যাজুয়ালিটির ঘটনা ঘটেছে (আদতে ৯৯টি দুর্ঘটনায় ১০৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে)। দেখা যাচ্ছে এ পর্যন্ত যত অ্যাক্সিডেন্ট, মোটরসাইকেলে সবচেয়ে বেশি; এরপর ইজিবাইক।’
পরে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সচিব সাহেবকে বলব, নীতিমালা করা প্রয়োজন। সারা দেশে লক্ষ লক্ষ তিন চাকার গাড়ি (ইজিবাইক), মোটরসাইকেল। এগুলো রাস্তার শৃঙ্খলাকে নিদারুণভাবে বিঘ্নিত করছে। কাজেই এখানে একটা সুষ্পষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, মানুষের জীবনটা আগে; জীবিকা নয়। এখন জীবিকা রক্ষা করতে গিয়ে জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়ার মানে হয় না।’
গত ১৮ মে বিআরটিএর নির্দেশনায় ঢাকায় ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশাভ্যান বন্ধের নির্দেশনা আসে। সারাদেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণের কথাও সেই সময় উঠে আসে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা যায়নি রিকশাভ্যান মালিক-শ্রমিকদের জোরালো প্রতিবাদের কারণে। নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে আলোচনাও বন্ধ হয়ে যায়।
বুধবার সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ের সময় ওবায়দুল কাদের এতে দায় দেখেন জনপ্রতিনিধিদের। তিনি বলেন, ‘এই যে ইজিবাইকগুলো রাস্তা ও হাইওয়েতে অবাধে চলাচল করে, অনেক জায়গায় অনেক জনপ্রতিনিধি সমর্থন করে অথবা পেছন থেকে মদদ দেয়।’
ঈদুল আজহার পরে বুধবার থেকে কর্মজীবী মানুষ ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী শনিবার ঢাকামুখী চাপ বাড়বে প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে কর্মকর্তাদের এই ফিরতি যাত্রায় বিশেষ নজরদারি জারি রাখার নির্দেশনা দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক কাঠামো দ্রুত সংস্কারের কথাও বলেন ওবায়দুল কাদের। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর নিয়মিত আপডেট পেতে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগকে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
জয়ন্ত সাহা/অমিয়/