
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামীকাল শুক্রবার নয়াদিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইট শুক্রবার (২১ জুন) দুপুর ২টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। প্রধানমন্ত্রী আগামী ২১-২২ জুন নয়াদিল্লিতে অবস্থান করবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দুই নিকট প্রতিবেশীর সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের কথা রয়েছে। এর মধ্যে যেসব চুক্তি বা সমঝোতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেগুলোর কয়েকটি আবারও নবায়ন হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক সামনে রেখে সফরের বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করতে দুইপক্ষ কাজ করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পাবে নিরাপত্তার বিষয়। মায়ানমার পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মনিপুরে সংকট, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হবে।
এ ছাড়া বৈঠকে গুরুত্ব পাবে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। দুই দেশেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, জ্বালানিসহ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কীভাবে অংশীদারত্বের মাধ্যমে এ ঝুঁকি মোকাবিলা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা যায়, সে বিষয়টি আলোচনায় থাকবে। এ কারণে ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে নতুন রূপরেখা চুক্তি বা বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, জ্বালানি, নতুন প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হবে। এ ছাড়া মহাকাশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল অর্থনীতির মতো বিষয়গুলো সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও ঋণ সহায়তার মতো অমীমাংসিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।
বুধবার (১৯ জুন) প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক এবং দুই দেশের মধ্যে এমওইউ ও চুক্তি স্বাক্ষর শেষে দুই নেতা বিবৃতি দেবেন।
এরপর সেখানেই (হায়দরাবাদ হাউস) রয়েছে মধ্যাহ্নভোজ। হায়দরাবাদ হাউস ত্যাগের আগে প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার আয়োজনও রয়েছে এই পর্বে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারতের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন নরেন্দ্র মোদি।
দুই দিনের সফর শেষে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অমিয়/