ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

সোমবার থেকে অভিযান শুরু গ্রাহকের কল ড্রপের ক্ষতিপূরণ আদায়ে কঠোর হব: পলক

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:১৮ পিএম
গ্রাহকের কল ড্রপের ক্ষতিপূরণ আদায়ে কঠোর হব: পলক
ছবি: সংগৃহীত

কল ড্রপের জন্য গ্রাহকের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা আদায়ে আরও কঠোর হবেন বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো যদি প্রতিশ্রুত সেবা না দেয় তা হলে তাদের গ্রাহককে আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমরা মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করব। পাশাপাশি কল ড্রপ নিয়ে ঢাকার কয়েকটি এলাকার ড্রাইভ টেস্টের ফলাফল পর্যালোচনা শেষে জুলাই থেকে অভিযান পরিচালনার কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শহর বা গ্রাম যেখানেই হোক আমরা মিডিয়ার যে রিপোর্ট, সেগুলো আমলে নেব এবং সেখানে আমরা ড্রাইভ দেব।’

রবিবার (৩০ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহকসেবার মানসংক্রান্ত বিটিআরসি আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অ্যামটব সভাপতি ও গ্রামীণফোন সিইও ইয়াসির আজমানসহ মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কোভিডকালে মোবাইল অপারেটরের ভূমিকার প্রশংসা করে পলক বলেন, ‘মোবাইল ফোন এখন জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, আমাদের গ্রাহকরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। কল ড্রপ একটা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মোবাইল গ্রাহকরা যেমন এ বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট। তেমনি বিটিআরসি যে পরীক্ষাগুলো করেছে সে রিপোর্ট অনুসারে কোয়ালিটি অব সার্ভিস খুব একটা সন্তোষজনক নয়।’

এ ছাড়া ফাইন্যানসিয়াল অডিট এবং টেকনিক্যাল অডিটের ওপর জোর দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেটের গতি কেন কম হচ্ছে, গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া কী সেগুলো আমলে নিয়ে ড্রাইভ দেব। আমরা কারিগরি পরিদর্শন দল গঠন করেছি, তারা সেগুলো টেস্ট করছে।’ 

পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল সেবা নিয়ে পলক বলেন, ‘ফাইভজি রোল আউটেরও (সক্রিয় করা) একটা নির্দিষ্ট টার্গেট বিটিআরসি এবং চারটি মোবাইল অপারেটরকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এয়ারপোর্ট, সি পোর্ট এবং কিছু বিজনেস ডিস্ট্রিক্টস, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক-শিল্পাঞ্চলে ফাইভজি রোল আউট করা। তারপর গ্র্যাজুয়ালি রোল আউট করা।’

তিথি/এমএ/

 

হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক সেলিম গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৪ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক সেলিম গ্রেপ্তার
ইমতিয়াজ সেলিম

নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীর মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে। 

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডিএমপি জানায়, সেলিমের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এ ছাড়া পল্লবী ও খিলগাঁও থানার আরও দুটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি তিনি।

তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন বলেও জানিয়েছে ডিএমপি। তাকে বিজ্ঞ আদালতে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।

লাবনী/পপি/

ঢাকায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩০ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪২ পিএম
ঢাকায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী
ঢাকায় পৌঁছেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় তাকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। 

এ সময় তাকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রথম শীর্ষ নেতা হিসেবে ঢাকা সফরে এসেছেন।

সাদিয়া নাহার/

নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন করে গেজেট প্রকাশ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০২ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন করে গেজেট প্রকাশ

দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে ৮ সদস্যের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ বিষয়ক প্রজ্ঞাপনে সই করেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এই কমিশনের প্রধান সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে কাজ করবেন কমিশনের সদস্যরা। 

কমিশনের সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও ওপিনিয়ন মেকার ড. জাহেদ-উর রহমান, শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন,  ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিদ্যমান নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে কমিশন গঠন করা হয়েছে। 

কমিশন ৩ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।

শাহনাজ পারভীন/সাদিয়া নাহার/

গুমসংক্রান্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন আয়নাঘর ছিল

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৬ পিএম
আয়নাঘর ছিল
আয়নাঘর নিয়ে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি সংবাদ সম্মেলনে করে। ছবি: সংগৃহীত

আয়নাঘর ছিল। দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া যাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেআইনিভাবে মানুষকে জোর করে তুলে নিয়ে অপহরণ করে গোপন বন্দিশালায় গুম করে রাখত। অপহরণকারীরা সেসব বন্দিশালার নাম দিয়েছে আয়নাঘর। দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেই আয়নাঘরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি গুম সংস্কার কমিশন সেই আয়নাঘর পরিদর্শন করেছে। ডিজিএফআইয়ের জেআইসিতেই এমন ২২টি গোপন সেল (বন্দিশালা) পাওয়া গেছে। এসব সেলের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই তথ্য ও গোপন সেলে বন্দিজীবন কাটিয়ে ফেরা ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পর্যালোচনা করে আয়নাঘরের নির্মম নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তবে গুম কমিশনের পরিদর্শনের আগেই অনেক আলামত নষ্ট করা হয়েছে। আয়নাঘরের কর্তারা আলামত নষ্ট করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আয়নাঘরে বন্দি রেখে নির্যাতন চালানোর ঘটনায় জড়িত রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), গোয়েন্দা বিভাগ (ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ-ডিবি) প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে বেশি।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গুম কমিশনের সভাপতি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে জানান, কমিশনের কার্যক্রম শুরুর পর গত ১৩ কর্মদিবসে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। ৭৫ জন ভুক্তভোগী সশরীরে কমিশন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। অনেকে ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। অনেকে ই-মেইলে অভিযোগ দিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযোগ নেওয়ার সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে। তিন মাসে তদন্ত শেষ হবে কি না, সেটা বোঝা যাবে আরও পরে।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী আমরা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কার্যালয়ে গিয়ে গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছি। ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলটি (জেআইসি) ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের ভেতরেই। দোতলা ওই ভবনে ২২টি গোপন সেল আছে। রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাদের গুম করেছিল, তাদের অভিযোগগুলো নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদেরও আমরা ডাকব। বক্তব্যের জন্য সমন দেব। অভিযুক্তরা না এলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা ২৫ সেপ্টেম্বর ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর পরিদর্শন করেছি। ১ অক্টোবর আমরা ডিবি ও সিটিটিসি পরিদর্শন করেছি। তবে সেখানে কোনো বন্দি আমরা পাইনি। সম্ভবত ৫ আগস্টের পর এসব বন্দিশালা থেকে সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” 

কমিশনের সদস্য নূর খান বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগীর পরিচয় দিয়ে তাকে আলাদা করব না। প্রতিটি অভিযোগ আমরা শুনতে চাই। কী হয়েছিল তা জানতে চাই। কীভাবে আইন না মেনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল তা বুঝতে চাই।’

কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস বলেন, ‘৪০০ অভিযোগের মধ্যে অনেকটি ঘটনাই প্রথম সামনে এসেছে। এর আগে কেউ কখনো এসব ঘটনায় গুম নিয়ে কথা বলেননি। থানায় তাদের জিডিও নেওয়া হয়নি। আমরা সবাইকে কমিশনে আসতে আহ্বান জানাই। আমরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে চাই। ঢাকার বাইরে থেকেও অনেক অভিযোগ আসছে। কেউ আসতে না পারলে ডাকযোগে, ই-মেইলে অভিযোগ পাঠাতে পারবেন। আমরা সেগুলোও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখব। কেউ ফোন করলে আমরা তার কথাও শুনব।’

কমিশনের আরেক সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ভিজিটের সময় ডিজিএফআইয়ের যে আয়নাঘর দেখেছি, তার সঙ্গে ভুক্তভোগীদের বর্ণনার মিল পেয়েছি। তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ (এভিডেন্স) তারা নষ্ট করেছে। বিশেষ করে দেয়ালের লেখাগুলো পেইন্ট করে মুছে দেওয়া হয়েছে। আমরা মৌখিকভাবে তাদের বলেছি এবং লিখিতভাবেও তাদের জানিয়েছি যেন যে অবস্থায় আমরা আয়নাঘর দেখে এসেছি, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার কোনো পরিবর্তন যেন না হয়।’ 

গত ১৫ বছরে দেশে-বিদেশে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ঘটনা ছিল সরকারের প্রশ্রয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেআইনি আটক, অপহরণ করে আয়নাঘরে বন্দি রেখে বছরের পর বছর নির্যাতন চালানো। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি। এমনকি যারা এ ধরনের গুমের শিকার হয়েছেন এবং কোনোভাবে সেখান থেকে ছাড়া পেয়েছেন, তারাও কাউকে কিছু জানাতে পারেননি। সরকার পরিবর্তনের পর তারা এখন মুখ খুলেছেন। নির্যাতনের ভয়ানক বর্ণনা দিয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন। অনেকেই গুমসংক্রান্ত সংস্কার কমিশনে উপস্থিত হয়ে বর্ণনা দিচ্ছেন তার জীবনে ঘটে যাওয়া লোহর্ষক ঘটনার। 

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা এসব সংস্থার সদস্যদের হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট গুমসংক্রান্ত ‘কমিশন অব ইনকোয়ারি’ গঠন করে সরকার। অপর সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টি কর্তৃক ‘আয়নাঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, বলপূর্বক গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান এবং জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ সম্পাদন করবে কমিশন।

যেসব কাজ করবে তদন্ত কমিশন
ক. ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টি কর্তৃক ‘আয়নাঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করা এবং সে উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা।
খ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা এবং এ বিষয়ে সুপারিশ দেওয়া।
গ. জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করা।
ঘ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা।
ঙ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ দেওয়া।
চ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ দেওয়া এবং
ছ. ওপরে বর্ণিত উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট যেকোনো কাজ করা।

কমিশনের কাজের পরিধি
১. তদন্ত কমিশন বাংলাদেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন এবং যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব করতে ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

২. তদন্ত কমিশন কমিশনস অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ অনুসারে তদন্তকাজ সম্পন্ন করে এই প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

৩. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে। এ ছাড়া কমিশনকে সহায়তার জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিতে পারবে।

৪. তদন্ত কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন আজ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০০ এএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৯ পিএম
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন আজ
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকায় আসছেন শুক্রবার (৪ অক্টোবর)।

শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। 

এই সফরে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার মন্ত্রিপরিষদ, সংসদ সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল থাকবে। 

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রাসহ হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে নেওয়া হবে। 

সেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এই বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। 

তাদের আলোচনায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রাজনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শ্রম অভিবাসন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিস্তৃত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বৈঠকে দেশে চলমান রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করা হবে।

পাশাপাশি আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে একটি ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

সফরসূচি অনুযায়ী পরে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে। 

ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। আনোয়ার ইব্রাহিমই প্রথম সরকারপ্রধান, যিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

সংক্ষিপ্ত সফর শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আনোয়ার ইব্রাহিমের ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর এটি হবে বিদেশি কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর। সূত্র: বাসস

পপি/