প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে যাচ্ছেন আগামীকাল সোমবার (৭ জুলাই)। এই সফর উপলক্ষে রবিবার (৬ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকালে ২০টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এ ছাড়া কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা আসতে পারে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আগামী বুধবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হবে। সেখানে তাদের সঙ্গে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলও থাকবে। এরপর দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, “একই দিন অর্থাৎ বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এ ছাড়া সরকারপ্রধান বেইজিং সফরের সময় বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ চীনা ভাষায় অনূদিত বইটির মোড়ক উন্মোচন করবেন।”
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ৬ষ্ঠ ও ৯ম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পিপল টু পিপল সংযোগ প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।’
তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের যৌথ নদী। তিস্তা নদীর যৌথ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ভারত একটি প্রস্তাব দিয়েছে। তারা একটি কারিগরি দল পাঠাবে বলে আমাদের জানিয়েছে। বাংলাদেশে এসে ওই কারিগরি দল যৌথভাবে সমীক্ষা করে, কী করা উচিত, সে ব্যাপারে পরামর্শ দেবে। তিস্তা যাদের সঙ্গে যৌথ নদী, সেই ভারতের প্রস্তাব আমাদের বিবেচনা করতে হবে। চীনও এ ক্ষেত্রে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি ভালো। সফরের সময়, চীন যদি বিষয়টি আলোচনায় আনে, তাহলে আলোচনা হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সোমবার সকাল ১১টায় ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিংয়ে অবতরণ করবেন। ৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বৈঠক করবেন। আগামী ১১ জুলাই দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে সহায়তা চাওয়া হবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সবগুলো সমঝোতা স্মারক হবে। চুক্তি নয়। চীন অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করছে।’
বাজেট সহায়তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নানা দেশ নানা প্রস্তাব দেয়। প্রয়োজনের নিরিখে, শর্ত পূরণ হলে সেসব সহায়তা বাংলাদেশ নেয়। চীনের সব প্রস্তাব আমরা নিই না। অফিশিয়াল কোনো প্রস্তাব বাংলাদেশ দেয়নি।’
মোংলা বন্দর আধুনিকায়ন নিয়ে আলোচনা হবে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এবারও গুরুত্বের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর উন্নয়ন নিয়ে কথা হবে। অতীতের সব চুক্তি নিয়েও আলোচনা হবে।’
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নন ট্যারিফ ব্যারিয়ার তুলে নিতে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হবে।