নাটোরে বিএনপি-জামায়াতের ২২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
নাটোর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ২২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন, জেলা জামায়াত আমির নূরুল ইসলাম এবং জজকোর্ট পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে জেলা শ্রমিকদলের প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন মন্ডল রয়েছেন।
রংপুরে আরও ২৫ জন গ্রেপ্তার
গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত রংপুরে বিভিন্ন মামলায় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেটভুক্ত আসামিরা রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর উপপুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন। তিনি জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বরিশালে ৩৪ জন গ্রেপ্তার
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের চার থানায় পাঁচটি এবং জেলা পুলিশের বাকেরগঞ্জ থানায় ও বানারীপাড়া থানায় দুটিসহ মোট সাতটি মামলা করা হয়েছে। এতে প্রায় পাঁচ হাজার আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মেট্রোপলিটন পুলিশ ১৩ জনকে এবং বাকেরগঞ্জ ও বানারীপাড়া থানাপুলিশ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের গতকাল সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
হবিগঞ্জে ১৫ জন গ্রেপ্তার
হবিগঞ্জে নাশকতার মামলায় আরও ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে পাঁচ মামলায় ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
খুলনায় আরও ১৮ জন গ্রেপ্তার
খুলনায় নাশকতার মামলায় আরও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত ছয় দিনে নাশকতার তিনটি মামলায় ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ এ তথ্য জানায়। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন খুলনা মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির এসএম জাহাঙ্গীর আলম ও মহানগর যুবদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক আরিফুজ্জামান সোহেল। পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, যেকোনো অরাজকতা দমনে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
পঞ্চগড়ে ৮ জন গ্রেপ্তার
পঞ্চগড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই মামলায় গত সোমবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই দুই মামলায় ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এদিকে ইন্টারনেটসেবা না থাকায় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে গতকালও আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল।
ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার ৯৬ জন
ময়মনসিংহে গত সোমবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ময়মনসিংহ জেলায় ১৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মাসুম আহমেদ ভূঁঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন বলেন, কোঠা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এই রেঞ্জের আওতাধীন বিভিন্ন থানায় ৩৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ইতোমধ্যে ১৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে ছাত্রদল নেতাসহ ২ জন গ্রেপ্তার
গোপালগঞ্জে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরে গোপালগঞ্জ সদর ও কোটালীপাড়া উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন গোপালগঞ্জ সদর পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজিদ খান ও বিএনপিকর্মী শফিক শরিফ। গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনিচুর রহমান ও কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফিরোজ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঝিনাইদহে বিএনপি-শিবিরের নেতা-কর্মীসহ গ্রেপ্তার ২৫
ঝিনাইদহে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছে ২১ জন বিএনপি ও শিবিরের নেতা-কর্মী। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া খবরের কাগজকে এ তথ্য জানান। ঝিনাইদহে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় নামসহ ৩৫০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনের নামে মামলা করেছে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জে ৮ মামলায় ৮০ জন গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জে নাশকতার আট মামলায় ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়।
রাজশাহীতে সাত মামলায় শতাধিক গ্রেপ্তার
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় রাজশাহীতে সাত মামলায় শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত কয়েক দিনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. জামিরুল ইসলাম। গ্রেপ্তারদের মধ্যে অর্ধশতাধিক আসামি জামায়াত-বিএনপি ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছেন র্যাব-৫-এর অধিনায়ক ফিরোজ কবির।
মাদারীপুরে ৬৯ জন গ্রেপ্তার
মাদারীপুরে কোটা আন্দোলনের নামে সংঘর্ষ ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারটি মামলা হয়। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার কর হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সিলেটে ১০ মামলায় গ্রেপ্তার ১১০
কোটাবিরোধী আন্দোলনে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করায় সিলেটে এ পর্যন্ত ১১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন খান বলেন, আমাদের পাঠানটুলা পুলিশবক্সে আগুন দিয়েছে ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। আমাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্দরবাজার এলাকায় সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আমরা ইতোমধ্যে ১০টি মামলায় করেছি।
চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় ৬২৭ জন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় নগরের বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলায় অন্তত ৩ হাজার ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে আসামিদের বেশির ভাগই অজ্ঞাত। এসব মামলায় নগরের ১৬টি থানায় গত এক সপ্তাহে ৩২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর জেলায় ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলা ও নগরে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬২৭ জন। নগরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র কাজী তারেক আজিজ। জেলায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ উদ্দিন। জানা গেছে, গ্রেপ্তাররা বেশির ভাগই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী।
জামালপুরে ২২ জন গ্রেপ্তার
জামালপুরে সহিংসতার ঘটনায় ৯টি মামলায় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীসহ ১৪৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৪ জনের নামে ও অজ্ঞাত ১২০৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন ও জেলা জামায়াতের নেতা হারুন অর রশিদও রয়েছেন। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২২ জনকে।
ফেনীতে বিএনপি-জামায়াতের ৬৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
ফেনীতে পুলিশের দায়ের করা নাশকতার দুই মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৬৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। গত শনিবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফেনী মডেল থানাসূত্রে জানা যায়, পুলিশের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ২৮ জন
কক্সবাজারে শহর আওয়ামী লীগ নেতা আমীর উদ্দিন বাদী হয়ে সহিংসতা ও নাশকতার অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ১৯৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে আরও তিনটি মামলা করে পুলিশ। মোট চার মামলায় এ পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান।
কিশোরগঞ্জে পুলিশের তিন মামলায় গ্রেপ্তার ৪৯
নাশকতার ঘটনায় কিশোরগঞ্জ সদর, ভৈরব ও পাকুন্দিয়া এই তিন থানায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১ হাজার ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। জেলাজুড়ে অভিযান চালিয়ে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।