ঢাকা ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভিসা বন্ধের বিষয়ে আমিরাত কিছু জানায়নি: প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৮ এএম
ভিসা বন্ধের বিষয়ে আমিরাত কিছু জানায়নি: প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করার বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

বুধবার (২৪ জুলাই) প্রবাসী কল্যাণ ভবনে তিনি এ কথা জানান। 

দুবাইয়ে আন্দোলন করে প্রবাসীরা আইন অমান্য করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন অভিযোগ করে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যেভাবে মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে, বিদেশেও বাংলাদেশের শ্রমবাজার ধ্বংসের জন্য একই কাজ করা হয়েছে। দুবাইয়ে আন্দোলন করে তারা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। এ জন্য তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রবাসীদের ব্যাপারে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করব না। এটি তাদের (আমিরাতের) রাষ্ট্রীয় বিষয়।’

ভিসা বন্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে লিখিত কোনো অর্ডার আসেনি। আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারাও কিছু জানে না। বাংলাদেশে নিযুক্ত আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও কথা বলেছি, তিনিও কিছু জানাননি।’

শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে কি না, এ বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই, এমনটা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জানলে আমরা গণমাধ্যমকে জানাব। আমি সবাইকে অনুরোধ করব সঠিক তথ্য নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করার জন্য। দেশের উপকার হবে। মানুষের বিভ্রান্তিও কমবে।’

ঢাকায় ফেরা: রেলে শিডিউল বিপর্যয়, ফাঁকা বাস

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১১:১৯ এএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ১১:২৫ এএম
ঢাকায় ফেরা: রেলে শিডিউল বিপর্যয়, ফাঁকা বাস
ফাইল ছবি

ঈদুল আজহার ছুটি কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। রাজধানীর চার আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ও ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে এখনো ঢাকায় ফিরে আসা যাত্রীদের ঢল নামেনি। 

বুধবার (১১ জুন) সকালে বিভিন্ন জেলা থেকে যারা বাসে ঢাকায় এসেছেন, তারা স্বস্তির যাত্রার কথা বলেছেন খবরের কাগজকে। তবে রাজশাহীর নন্দনগাছি স্টেশনে রেলপথ অবরোধের ঘটনায় বুধবার উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রেনগুলোর শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। এতে বিপাকে পড়েন ঢাকামুখী হাজারও যাত্রী। 

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বুধবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২৮টি আন্তনগর ট্রেন যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসেছে। পূর্বাঞ্চল রুটের শিডিউল ঠিক থাকলেও পশ্চিমাঞ্চল রুটের ট্রেনগুলো শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের। 

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন খবরের কাগজকে, ‘রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা ১৫ মিনিট দেরিতে বুধবার দুপুর পৌনে ২টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে। পরে দ্রুত যাত্রী নামিয়ে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহীর উদ্দেশে আবার ছেড়ে গেছে।

রাজশাহী থেকে সকালে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেসও নির্ধারিত সময়ের পৌনে ২ ঘণ্টা পর ঢাকায় আসে। ট্রেনটি বিকেল আড়াইটায় কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাড়ে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে। 

রাজশাহীর মধুমতি এক্সপ্রেসও প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুরে আসে। ট্রেনটি বিকেল ৩টায় রাজশাহীর উদ্দেশে যাত্রার কথা থাকলেও তা ছাড়ে বিকেল ৫টার পরে। 

পঞ্চগড় থেকে ঢাকা অভিমুখী দ্রুতযান এক্সপ্রেস বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের স্থলে কমলাপুর ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেস রাত ১১টার দিকে ছেড়ে যায়। 

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় নিয়ে ঢাকা রেল স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাজশাহীর চারঘাটের নন্দনগাছী রেলওয়ে স্টেশনের চারটি আন্তনগর ট্রেনের স্টপেজ (যাত্রাবিরতি) ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এতে বনলতা, মধুমতি, সিল্কসিটি ও সাগরদাঁড়ি ট্রেন আটকা পড়ে। এ কারণেই শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে।’

করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ফিরতি পথে যাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে ফিরতি যাত্রায় এ নিয়ে কড়াকড়ি দেখা গেল না কোনো ট্রেনে। আন্তনগর, কমিউটার কোনো ট্রেনের যাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও মাস্ক পরতে বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে যাত্রীদের নির্দেশনা দেয়নি। এ নিয়ে রেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

গতকাল দুপুরে সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, ফিরতি যাত্রার বাসে যাত্রী তুলনামূলক কম। বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটির এখনো তিন দিন বাকি থাকায় অধিকাংশ মানুষ ফিরেননি ঢাকায়। তারা শনিবার রাত বা রবিবার ভোরে ফিরবেন ঢাকায়। ফিরতি যাত্রায় অনেকে অনলাইনে বাসের টিকিট রিজার্ভ করে রেখেছেন বলে জানান পরিবহন কর্মীরা।

জানতে চাইলে হানিফ পরিবহন, গোল্ডেন লাইনের কাউন্টার ব্যবস্থাপকরা বলেন, সকালের দিকে ঢাকায় ফিরে আসা যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি থাকলেও দুপুর গড়াতে তা কমে আসে। তবে আগামী শুক্রবার সকাল থেকেই সব বাস যাত্রী পূর্ণ করে ঢাকায় ফিরবে। আগামী শনিবার অনেক বেসরকারি অফিস খুলবে। রবিবার থেকে সরকারি অফিস-আদালতের কার্যক্রম পুরোদমে চালু হবে। 

সায়েদাবাদে কথা হয় পটুয়াখালী থেকে আসা যাত্রী হাফিজুর রহমানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘যাত্রাপথে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। খুব সকালে রওনা হয়ে দুপুরের মধ্যে ঢাকায় আসতে পেরেছি, এটা স্বস্তিদায়ক। পথে গাড়ির চাপও তেমন নেই।’

আগের সব হাসপাতালে হবে করোনা পরীক্ষা

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ১১:০১ এএম
আগের সব হাসপাতালে হবে করোনা পরীক্ষা
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

ভারত ও থাইল্যান্ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে শনাক্তের হার বাড়েনি, আগের মতোই আছে। এর পরও সংক্রমণের হার বৃদ্ধি প্রতিরোধে দেশের যেসব জায়গায় আগে করোনা পরীক্ষা করা হতো, সেসব জায়গায় আবার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। 

বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতিবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর জনসাধারণের জন্য ১১ দফা নির্দেশনা দেন।

এদিকে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গত মঙ্গলবার সকাল থেকে গতকাল বুধবার সকাল) ১০৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জন, তারও আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ থেকে ১৩ শতাংশের মধ্যে। এ হার এখনো একই রকম আছে। এ হার আশপাশের দেশের তুলনায় কম। তবে এখন পরীক্ষা কম হচ্ছে। সর্দি-কাশি হলে যখন বেশি বেশি মানুষ পরীক্ষা করাতে আসবে, তখন প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে। তখন পরিস্থিতি বুঝে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আগে দেশের যেসব জায়গায় করোনা পরীক্ষা করা হতো, এখন আবার সেসব জায়গায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন রোগী যে সংখ্যা, তাতে ডেডিকেটেড হাসপাতাল জরুরি হয়ে পড়েনি। কারণ আক্রান্তদের বেশির ভাগই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

সবার জন্য এখন পরীক্ষার দরকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে এলে ডাক্তাররা যদি মনে করেন তার পরীক্ষা করা লাগবে, তাহলে পরীক্ষা করতে পরামর্শ দেবেন। বৃহস্পতিবার (আজ) দেশের হাসপাতালে কিট পৌঁছে দেওয়া হবে। আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি। তবে কোনো প্যানিক সৃষ্টি করে নয়। মানুষ যেন ভীত হয়ে না যায় যে অবস্থা বুঝি খারাপ। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে মানুষকে সচেতন হতে হবে।’

১১ দফা নির্দেশনা বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে, উপস্থিত অনিবার্য হলে সে ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করুন। শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে নিজেকে রক্ষায় মাস্ক ব্যবহার করুন। হাঁচি বা কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। ব্যবহৃত টিস্যু দ্রুত ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলুন। সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করবেন না। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন, কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। 

সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে নির্দেশনায় তিনি বলেন, জ্বর-কাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের বাড়িতে অবস্থান করতে বলবেন। রোগীর নাক ও মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন। রোগীদের সেবাদানকারী ব্যক্তি সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। প্রয়োজন হলে কাছাকাছি হাসপাতাল, আইইডিসিআর কিংবা স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ নম্বরে যোগাযোগ করুন। 

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রস্তুতি চলমান আছে বলে জানান অধ্যাপক ডা. আবু জাফর। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নির্ণয়ে আরটিপিসিআর, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট, ভ্যাকসিন, বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার নির্দেশিকা, ওষুধ, অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, আইসিইউ, কোভিড চিকিৎসা বিশেষায়িত্ব সুবিধাসংবলিত নির্দিষ্ট হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সেবাদানকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসামগ্রী যেমন মাস্ক, পিপিই, ফেস শিল্ড ইত্যাদি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিট সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আশা করছি কিটের কোনো সমস্যা হবে না। দেশে ২৮ হাজার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট এসেছে। ১০ হাজার আরটিপিসিআর অ্যান্টিজেন কিট আজকের (বুধবার) মধ্যে পাব। কালই (বৃহস্পতিবার) কিটসহ যাবতীয় জিনিসপত্র হাসপাতালগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হবে।’

ভূমিকম্প সচেতনতা দিবস আজ ঝুঁকি বিবেচনায় সচেতনতা কম

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম
ঝুঁকি বিবেচনায় সচেতনতা কম
প্রতীকী ছবি

অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ এবং পর্যাপ্ত উদ্যোগের অভাবে দেশে ভূমিকম্পজনিত ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে। তবে সে অনুযায়ী নেই সচেতনতামূলক কার্যক্রম। চলতি বছরেই একাধিক ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশের বিভিন্ন এলাকা। কম মাত্রার একাধিক ভূমিকম্পের পর আসতে পারে বড় মাত্রার ভূমিকম্প- এমনটাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। এখনই উদ্যোগ না নিলে আগামীতে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারে রাজধানী ঢাকা। এমন বাস্তবতায় আজ ১২ জুন দেশে পালন করা হচ্ছে জাতীয় ভূমিকম্প সচেতনতা দিবস।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের সাবেক ডিন এবং ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ভূমিকম্প নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি অনেকভাবে করা যায়। চারটা পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া রয়েছে। প্রিপেয়ারডনেস, মিটিগেশন, রেসপন্স এবং রিকভারি। রেসপন্স আর রিকভারি হলো ভূমিকম্পের পরে। বাকি দুটি ভূমিকম্পের আগে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন প্রিপেয়ারডনেস এবং মিটিগেশনের পর্যায়ে আছি। মিটিগেশন করা যায় বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করে। আমাদের দেশে যে লেভেলে ভূমিকম্প হতে পারে, যদি আমরা ভবন নির্মাণে কোড মেনে চলি তাহলে ক্ষতি অনেক কম হবে। প্রিপেয়ারডনেস হলো প্রস্তুতি। আমাদের রেসপন্ডিং (উদ্ধারকারী) সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমাদের জনগণকে সচেতন করতে হবে। স্কুল লেভেলে ভূমিকম্প সচেতনতামূলক অনেক কার্যক্রম করা যায়। কিন্তু আমাদের দেশে তা করা হয় না। বিদেশের সর্বস্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব করা হয়।’
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১১ এপ্রিল এবং ২৮ মে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এগুলোর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ১, ৫ দশমিক ১, ৪ এবং ৫ দশমিক ২। এর বাইরে জানুয়ারিতে আরও তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার তথ্য রয়েছে। ২০২৪ এবং ২০২৩ সালেও একই মাত্রার (হালকা থেকে মাঝারি ধরনের) একাধিক ভূমিকম্প দেশে অনুভূত হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতি না হলেও অনেকে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ভবন থেকে লাফ দিয়ে আহত হন। অনেক পুরোনো ভবনে ফাটল দেখা দেয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক। পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার, ভারত ও নেপালও বড় মাত্রার ভূমিম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ভূমিকম্পের কোনো পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। তাই অনেক বেশি সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ রাজধানী ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। অধিকাংশ ভবন গড়ে উঠেছে ভবন কোড না মেনে। ফলে ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি বেশি হবে। ভবন ভূমিকম্প সহনশীল না হওয়ায় ঝুঁকি বেশি, অন্যথায় ঝুঁকি কম থাকত। জাপান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্পের মাত্রা অনেক বেশি। কিন্তু তাদের অবকাঠামো অনেক শক্তিশালী। এ জন্য তাদের ক্ষয়ক্ষতি হয় অনেক কম।

ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর বিষয়ে অধ্যাপক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘একটা প্রজ্ঞাপন দিয়েই আমাদের স্কুলে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নেওয়া যায়। জনগণকে সচেতন করার জন্য লিফলেট, গণমাধ্যমে এসব নিয়ে ডকুমেন্টরি করা দরকার। সমন্বিতভাবে এসব করতে হবে। অন্যথায় কোনো আউটপুট আসবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনশীল নয়। এ জন্য ঝুঁকিটা বেশি। বিল্ডিং যদি ভালো ভিত্তির ওপর করতে পারি তাহলে ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিল্ডিং কোড মানতে হবে।’

১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছাকাছি মানিকগঞ্জে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই মাত্রার ভূমিকম্প হলে দুর্বল বিল্ডিংগুলো ভেঙে পড়বে। নতুন বিল্ডিংগুলো ভেঙে না পড়লেও ব্যাপক ড্যামেজ (ক্ষতি) হবে। 

প্রসঙ্গত, ১৮৯৭ সালের ১২ জুন ভারতীয় উপমহাদেশে একটি ভয়ংকর ভূমিকম্প হয়েছিল, যা ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিত। এটির কেন্দ্র ছিল আসামে এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ১। তাই ভূমিকম্প সচেতনতা দিবস হিসেবে এই দিনটিকে ঠিক করা হয়।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি জব্দ

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৮:৩৭ এএম
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি জব্দ
সাইফুজ্জামান চৌধুরী

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন বেশকিছু সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম অ্যাজেন্সি (এনসিএ)। 

ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটের (আই-ইউনিট) বরাত দিয়ে বুধবার (১১ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আইনি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।

সম্পত্তি জব্দের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে এনসিএ-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে এনসিএ সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বেশকিছু সম্পত্তির বিরুদ্ধে ফ্রিজিং অর্ডার (জব্দের আদেশ) জারি করেছে। এর অর্থ হলো সাইফুজ্জামান চৌধুরী কার্যকরভাবে সেইসব সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না।

সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে আবাসনের ব্যবসা করেন। তার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের ৩০০টির বেশি সম্পদ রয়েছে। এগুলোর মূল্য অন্তত ১৬ কোটি পাউন্ড।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বৈশ্বিক সম্পত্তি নিয়ে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশে তার আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তির রয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ কিনেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যার মধ্যে শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই তার ৩৬০টি বাড়ি রয়েছে।

বরিশালে কাউন্টারে না থাকলেও টিকিট মিলছে দালালদের কাছে

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৮:৩২ এএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ০৮:৩৮ এএম
বরিশালে কাউন্টারে না থাকলেও টিকিট মিলছে দালালদের কাছে
ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। তবে বাস-লঞ্চে আগাম টিকিট সংগ্রহ না করায় বেশিরভাগ যাত্রীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, লঞ্চ ও বসের কাউন্টারে ফিরতি টিকিট না থাকলেও কালোবাজারি ও দালালদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট নিতে হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে বাসেও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। 

বরিশাল নৌবন্দরের লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা লঞ্চগুলোর নিচ ও দ্বিতীয় তলার ডেকের বেশিরভাগ জায়গায় শ্রমিকরা চাদর বিছিয়ে জায়গা দখল করে রেখেছে। পরে উচ্চমূল্যে যাত্রীদের কাছে তা বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া ২০০ টাকার ডেকের ভাড়া ৪০০ টাকা দিতে হচ্ছে। 

সুন্দরবন লঞ্চের যাত্রী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘লঞ্চের কেবিন না পেয়ে দুপুরে লঞ্চঘাটে এসে দেখি ডেকও প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সিঁড়ির নিচে একটু জায়গা পেয়েছি। একজনের স্থানে পাঁচজন বসে যেতে হবে।’ পারাবত লঞ্চের যাত্রী মো. আহসান কবির বলেন, ‘লঞ্চে এসে দেখি ডেকে বিছানা-চাদর পাতা। ওই লঞ্চের এক শ্রমিককে ২০০ টাকা দিয়ে জায়গা নিতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের উপপরিচালক সেলিম রেজা বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ ভাড়া সরকারি রেট অনুযায়ী নেওয়া হচ্ছে। আগে ব্যবসায়ের জন্য লঞ্চ মালিকরা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নিত। এখন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণসহ আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে ওই লঞ্চের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’ 

অন্যদিকে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় টার্মিনাল ও বরিশাল রুপাতলী বাস টার্মিনালেও একই অবস্থা। দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার বাস রাজধানী শহর ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে যায়। টিকিট না পেয়ে অনেকেই প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও ট্রাকে করে কর্মস্থলে ফিরছেন। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, এ বছরও অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাসের টিকিট কিনতে হয়েছে। এমনকি সরকারি বিআরটিসির বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। 

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন, ‘বাস কাউন্টার থেকে টিকিটের অতিরিক্ত দাম রাখার কোনো সুযোগ নেই। যাত্রীদের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগও কেউ করেনি। তবে কিছু কালোবাজারি আগে থেকেই অনলাইনে টিকিট কেটে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসে চড়া মূল্যে বিক্রি করছে বলে শুনছি। তাদের আইনের আওতায় আনতে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করেছি।’