সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি এবং শোকের মাসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঘোষিত ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জমায়েত কর্মসূচিতে রবিবার (৪ আগস্ট) গোটা দেশ পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। দিনব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষে গুলি, ইটপাটকেল ও লাঠিপেটায় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, যুবদলের নেতা-কর্মী, আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছেন।
১৪ পুলিশসহ ৯৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে রাজধানীতে ১১ জন, নরসিংদীতে ৫ জন, ফেনীতে ৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ১০ জন, সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশসহ মোট ২২ জন, কিশোরগঞ্জে ৪ জন, বগুড়ায় ৪ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ৪ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, সিলেটে ৫ জন, কুমিল্লায় পুলিশ সদস্যসহ ৩ জন, শেরপুরে ৩ জন, জয়পুরহাটে ১ জন, হবিগঞ্জে ১ জন, ঢাকার কেরানীগঞ্জে ১ জন, সাভারে ১ জন ও বরিশালে ১ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া কমপক্ষে ৩ হাজার ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রাজধানীতে ৩ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ২৩২ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিচারপতি, মন্ত্রী, এমপির বাড়ি, আদালত ভবন, পুলিশের থানা কার্যালয়, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে রাজধানীর জাতীয় শোক দিবসের পূর্ববর্তী কর্মসূচি উপলক্ষে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শাহবাগে জমায়েত হন। পরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের একটি মিছিল শাহবাগে এলে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে পেছনে পরীবাগে গিয়ে অবস্থান নেন। তাদের ধাওয়া করে বিএসএমএমইউর গেট ভেঙে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
বিএসএমএমইউ ক্যাম্পাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের পর আন্দোলনকারীরা পরীবাগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করেন। পরে তারা বাংলামোটরের দিকে এগিয়ে যান। অন্যদিকে বাংলামোটরে জমায়েত হওয়া আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাদের ধাওয়া দিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। থেকে থেকে চলতে থাকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, যা ছড়িয়ে পড়ে কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, মগবাজারসহ আশপাশের এলাকায়। আন্দোলনকারীরা বাংলামোটরে একটি বাণিজ্যিক ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। বিকেলে বাংলামোটর, শাহবাগ, মগবাজারসহ অত্র এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ঢাকার উত্তরা, সায়েন্স ল্যাব-জিগাতলা, কারওয়ান বাজার, উত্তরায় সংঘর্ষে ৯৪ জন গুলিবিদ্ধসহ সারা ঢাকায় ২৩২ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। অন্যদিকে কারওয়ান বাজার, জিগাতলা, উত্তরা ও শাহবাগে মোট ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
ধানমন্ডি ২৭ থেকে মোহাম্মদপুর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার মধ্যেই গতকাল ধানমন্ডির ২৭ ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আন্দোলনকারী, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ফেনীতে নিহত ৮
বেলা দেড়টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহীপাল এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্রদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে ৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন সদর উপজেলার বারাহীপুরের এইচএসসি পাস শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ, ফাজিলপুর ইউনিয়নের কলাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম, সোনাগাজী চর মজলিশপুর ইউনিয়নের মান্দারী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাকিব, পাঁছগাছিয়া ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের সিরাজের ছেলে দোকান কর্মচারী সিহাব ও আরাফাত। গতকাল সন্ধ্যায় ফেনী হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশসহ নিহত ২২
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় মারা যান দুই আন্দোলনকারী। এ দুজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে রায়গঞ্জের ধানগড়া এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার লিটন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন, ইউপি মেম্বার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর আলম এবং সাংবাদিক প্রদীপ ভৌমিক নিহত হন। হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে যুবদল নেতা রঞ্জু (৪০), যুবদল কর্মী আব্দুল লতিফ ও ছাত্রদল কর্মী সুমন নিহত হয়েছেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এ তথ্য জানান।
কিশোরগঞ্জে নিহত ৪
কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মবিন (৩৫), আগুনে দগ্ধ হয়ে অঞ্জনা বেগম (৩৫), রুবেল আব্দুল্লাহ (৩২) ও অজ্ঞাত আরেকজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে ২ শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভোলায় নিহত ৩
ভোলায় সংঘর্ষ চলাকালে মাথায় গুলিবিদ্ধ মো. জসিম উদ্দিন (৪০) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের ছোট ভাই মো. সবুজ। এ ছাড়া দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। বেলা পৌনে ২টার দিকে খলিফাপট্টি মসজিদের সামনে থেকে নিহত জসিমের স্বজনরা তার লাশ উদ্ধার করেন। জসিম ভোলা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর নবীপুর এলাকার আবু তাহেরের ছেলে। তিনি ভোলা শহরের নতুন বাজারে পুরোনো ছাতি মেরামত করতেন। শহরে সংঘর্ষ চলাকালে দোকান বন্ধ করার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন বলে তার ভাই নিশ্চিত করেন। এদিকে জসিম নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা তার লাশ নিয়ে শহরে মিছিল করেন। সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
পাবনায় ৩ শিক্ষার্থী নিহত
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে গুলিবর্ষণে তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় ২৭ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। দুপুরে পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। তিন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ চলে। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসান হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বরিশালে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত
বরিশালে আওয়ামী লীগ নেতা টুটুল চৌধুরীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে নগরীর করিম কুটির এলাকায় তাকে হত্যা করা হয়। নিহত টুটুল চৌধুরী বরিশাল মহানগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। স্থানীয়রা ও নিহতের স্বজনরা জানান, নগরের করিম কুটির এলাকায় আন্দোলনকারীরা আকস্মিক হামলা চালান। এ সময় সেখানে থাকা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে আওয়ামী লীগ নেতা টুটুল চৌধুরীকে কুপিয়ে ও ইট দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। সেখান থেকে টুটুল চৌধুরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মাগুরায় ছাত্রদল নেতাসহ নিহত ৪
মাগুরায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি সংঘর্ষের একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পুলিশের থানা কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে গুলিতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহরের বরুনাতৈল গ্রামের ময়েন উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মেহেদি হাসান রাব্বি (৩০), জেলার শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে চিটাগাং ইউনিভার্সিটির ছাত্র ফরহাদ (২৩), মহম্মদপুর আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ছাত্র বালিদিয়া ইউনিয়নের বালিদিয়া গ্রামের কানু শেখের ছেলে সুমন শেখ (১৭) ও আহাদ মোল্লা (২০)। এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ ২৩ জনসহ মোট ২৬ জনকে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া সংবাদ সংগ্রহকালে দৈনিক করতোয়ার সাংবাদিক খায়রুল আলম সবুজ আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ বলেন, দুপুরের পর থেকে শহরের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি নিক্ষেপ করে।
নরসিংদীতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিহত ৫
বেলা ১টার দিকে মাধবদী পৌর শহরে পোস্ট অফিস মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জন নিহত হন। বিএনপির কর্মী ও আন্দোলনকারীরা তাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেন। নিহতরা হলেন নরসিংদীর সদর উপজেলার চরদীঘলদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহীন, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই মৎস্যজীবী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ওরফে নাতি মনির, মহিষাশুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল, ফারুক মিয়া ও কামাল পাশা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে মাধবদী পৌরসভাসংলগ্ন এসপি স্কুল মাঠে অবস্থান করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নেন। পরে আন্দোলনকারীরা মাধবদী বাজারের পোস্ট মোড়ে এলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ককটেল ও গুলি ছোড়া হয়। আন্দোলনকারীদের অনেকে আহত হলেও প্রাথমিকভাবে নিহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজারে গুলিতে নিহত ১
কক্সবাজারে বিকেল থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষে জড়ান আওয়ামী লীগ ও আন্দোলনকারীরা। এ সময় ২০ বছর বয়সী এক আন্দোলনকারী গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ১১ জন। গতকাল রাত পৌনে ৮টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান। এদিকে তার কিছুক্ষণ পরে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে শহরের শহিদ সরণি সড়কে বিএনপির কার্যালয় আগুন দেয় সরকারপন্থিরা। এ সময় কার্যালয়ের আশপাশের দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ঈদগাঁও থানা ঘেরাও করে হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। রাত ৮টা ১৫ পর্যন্ত থানায় হামলা চলে।
শেরপুরে নিহত ৩ আন্দোলনকারী
শেরপুর শহরের একাধিক স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শহরের তিনআনী বাজার কলেজ মোড় এলাকায় বিক্ষোভের সময় টহলরত ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি দ্রুতগতিতে আন্দোলনকারীদের ওপর তুলে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনজন মারা যান। তারা হলেন আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের ছাত্র জেলা শহরের বাগরাকশা মহল্লার বাসিন্দা তুষার (২৪), আইটি উদ্যোক্তা জেলা সদরের পাকুড়িয়া চৈতনখিলার মাহবুব আলম (৩০)। অপরজনের নাম জানা যায়নি। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ও ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এদিকে জেলা শহরের নিউ মার্কেট এবং থানার মোড় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে আওয়ামী লীগ অবস্থান নিলে আন্দোলনকারীরা সেখানে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অপরদিকে শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলে সেখানে আন্দোলনকারীরা তাদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেন। পরে হামলা চালানো হয় পুলিশ সুপারের বাসভবন, সিভিল সার্জনের বাসভবন, পুলিশ সুপার শপিং সেন্টার, খোয়ারপাড় পুলিশ বক্সে। আন্দোলনকারীরা পরে নিহতদের লাশ নিয়ে মিছিল করেন শহরজুড়ে। শহরে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আ.লীগের সংঘর্ষে নিহত ১০
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া শতাধিক গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কাউসার, আফনান ও সাব্বির, লক্ষ্মীপুর কফিলউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ। এ ছাড়া যুবলীগের ডুবচর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার হারুন-আর-রশিদ, বাগবাড়ির সুমন ও রিয়াদ উদ্দিন পাটোয়ারী। বাকি তিনজনের পরিচয় জানা যায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরূপ পাল ১০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহতরা সবাই গুলিবিদ্ধ ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে সদর উপজেলায় সকাল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেখানে পুলিশ গুলি চালায়নি। এই ১০ জন যুবলীগের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে ৬৪ জন সদর হাসপাতাল ও অন্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিলেটে নিহত ৪
সিলেটের গোলাপগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলকালে বিজিবি, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ধারাবহর হাসপাতালের সামনে দুজন ও ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- গোলাপগঞ্জ উপজেলার ধারাবহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩), উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮), উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে নজমুল ইসলাম, উপজেলার দত্তরাইল গ্রামের আলাদ্দিনের ছেলে মিনহাজ আহমদ (২৬), গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার ঘোষগাঁও গ্রামের মৃত. মোবারক আলীর ছেলে গউছ উদ্দিন (২৯)।
তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শাহিন আহমদ। নজমুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা তৈয়ব আলী। মিনহাজ আহমদ ও গউছ উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী। ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী খবরের কাগজকে বলেন, ‘তাদের মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের শরীরে আঘাত দেখে বোঝা গেছে গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা মারা গেছেন। আমরা ময়নাতদন্ত করে বিস্তারিত মৃত্যুর কারণ বলতে পারব।’
এদিকে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় প্রথমে পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর নগরীর চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, বারুদখানা, সোবহানীঘাট, নয়াসড়ক, উপশহর, মদিনা মার্কেট, টিলাগড়সহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এদিকে বিকেলে সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিবের দক্ষিণ সুরমার অফিস ভাঙচুর করে এবং আটটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বগুড়ায় সহিংসতায় নিহত ৪
বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন আরও ১০০ জন। তাদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা শহর ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর করেন। আগুন ধরিয়ে দেন বেশ কিছু সরকারি স্থাপনায়।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহতদের শরীরে গুলির চিহ্ন আছে। লাশ রয়েছে বগুড়ায় শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মর্গে।
শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক (মিডিয়া) ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, হাসপাতালের মর্গে যে তিনজনের লাশ রয়েছে, তার মধ্যে একটি লাশ জিল্লুর রহমানের (৪৫)। তার বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গোড়দহ এলাকায়। অন্য দুজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে দুপচাঁচিয়ায় সংঘর্ষের সময় মারা যাওয়া মনিরুল ইসলামের (২২) বাড়ি কাহালু উপজেলায়। তার লাশ দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মর্গে নেওয়া হয়। ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শুধু শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৭ জন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
মুন্সীগঞ্জে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে নিহত ৩
আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে গতকাল রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মুন্সীগঞ্জ শহরের থানারপুল চত্বর। এ সময় তিনজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক। ভাঙচুর করা হয়েছে অর্ধশত দোকানপাট ও বিএনপির কার্যালয়। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাঁচটি মোটরসাইকেল, একটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যান।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল দুজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাসপাতালে গুলিবিদ্ধসহ অসংখ্য আহত রোগী আছেন। এ ছাড়া দুজনের লাশ রয়েছে। তাদের বয়স ২২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তবে পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া জেলার সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এ কে এম তাইফুল হক নামে একজনের নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, নিহতের নাম মো. সজল। তিনি আলী আকবরের ছেলে। তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।
কুমিল্লায় পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা, গুলিবিদ্ধ হয়ে আরেক যুবক নিহত
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এরশাদ নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত এরশাদ ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে গতকাল দুপুরে আন্দোলনকারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম।
এ নিয়ে কুমিল্লায় দুজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। এর আগে গতকাল দুপুরে জেলার দেবিদ্বারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে রুবেল নামে একজনের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে গতকাল সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দাউদকান্দি। বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা স্থানীয় রিলায়েবল সিএনজি অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ফিলিং স্টেশনের পাশে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেন।
তারা ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন বলে জানা যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের উদ্ধার করেন। এরপর বিকেলে খবর আসে ফাঁড়ির কনস্টেবল এরশাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সাভারে নিহত ১, আহত ৩০
ঢাকার সাভারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
গতকাল বেলা ৩টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আহমেদুল হক তিতাস।
তিনি বলেন, কয়েকজন যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী একজনকে নিয়ে আসেন। নিহতকে হাসপাতালে রেখে তারা দ্রুত চলে যান। ওই যুবককে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া রংপুর, জয়পুরহাট, হবিগঞ্জ কেরানীগঞ্জসহ কয়েক জায়গায় আরও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
বরিশালে প্রতিমন্ত্রীর বাসায় ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা
বরিশাল নগরীতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের বাসভবনে হামলা চালিয়েছেন কয়েক শ আন্দোলনকারী। এ সময় বাসার সামনে ও আশপাশের ২০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন তারা। অন্যদিকে বরিশাল নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডে দুপুর ১২টার দিকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাজীপাড়া এলাকার এ কার্যালয় ভাঙচুর করেন। তারা প্রথমে কার্যালয়টি ভাঙচুর করেন। পরে সেখানে থাকা আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগ করেন। ওই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিছ জাহান শিরিনসহ অন্যরা।
পটুয়াখালীতে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর, সাংবাদিক আহত
পটুয়াখালী শহরের চৌরাস্তায় দুপুর ১টার দিকে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালান আন্দোলনকারীরা। ওই সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হন একাত্তর টিভির সাংবাদিক আহসানুল কবির রিপন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ
ফরিদপুর শহরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। ওই সময় তারা কার্যালয়ের সামনে রাখা ২০-৩০টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে ভাঙচুর চালান। এরপর দুপুরের দিকে তারা আবারও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালান। ওই সময় তারা আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়িয়ে দেন।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সংসদের ভবনের জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ছাড়া দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শহর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে পুলিশ বক্সসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করেন বিক্ষোভকারীরা। একই সময়ে তারা ধুলদি বাজার এলাকায় বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিয়ে ঢাকা-ফরিদপুর অবরোধ করে রাখেন।
ভোলা পৌর ভবন, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০
ভোলায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভোলা পৌরসভা ভবন, ডিসি অফিস, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ অফিস এবং ৪০টি মোটরসাইকেল। ভাঙচুর করা হয়েছে অর্ধশতাধিক দোকানপাট। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
টাঙ্গাইলে এমপির বাসভবনে অগ্নিসংযোগ, আহত ৭
টাঙ্গাইল সদরের বটতলা ও সাবালিয়া এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ও হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ওই সময় গুলিবিদ্ধসহ সাতজন আহত হন। পরে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা শহরের বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতরে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপির গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা শহরের আদালতপাড়া এলাকায় টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনিরের বাসায় অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় সাতটি মোটরসাইকেলে আগুন ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আ.লীগের অফিসে হামলা, ১২ মোটরসাইকেলে আগুন
শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মিছিল নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা চালান। ওই সময় তারা অফিসের পাশে থাকা ১৭টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন ও ১২টিতে আগুন দেন। এ ছাড়া তারা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ এমপির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।
নেত্রকোনায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর
নেত্রকোনা পৌর শহরের কুড়পাড় এলাকায় দুপুরে ‘আমি কার তুমি কার, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিতে দিতে আন্দোলনকারীরা এক বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ সময় অন্তত ৪-৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাগেরহাটে আওয়ামী লীগের দুটি অফিস ও পুলিশের গাড়িতে আগুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এদিকে বেলা পৌনে ১১টার দিকে বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে মোংলা-খুলনা মহাসড়কের ফয়লাহাট এলাকায় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। একই সময় আওয়ামী লীগের দুটি অফিস ভাঙচুর ও মালামাল পুড়িয়ে দেন তারা।
পঞ্চগড়ে আ.লীগ কার্যালয়ে আগুন
পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একাংশ হামলা করে অগ্নিসংযোগ করে।
ঝিনাইদহে পুলিশ বক্স, পোস্ট অফিসে অগ্নিসংযোগ, আহত ৩০
বিক্ষোভকারীরা গতকাল সকালে ঝিনাইদহ শহরের পোস্ট অফিসের মোড়ে প্রধান ডাকঘর ভাঙচুর ও পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে তারা থানায় হামলা করার চেষ্টা করেন। ওই সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পুলিশের গুলিতে ১১ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৯ জন আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ইটের আঘাতে ডিবি পুলিশের এসআই শরিফুজ্জামান আহন হন। এ ছাড়া শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, মর্ডান মোড়, আরাপপুর বাসস্ট্যান্ড, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে থাকা আওয়ামী লীগের বিলবোর্ড, ব্যানারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা।
খুলনায় আ.লীগ অফিস, জেলা পরিষদ, দুই এমপির, সিটি মেয়রের বাড়ি, খুলনা প্রেস ক্লাবে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, আহত ৭
আন্দোলনকারীরা দুপুর ১২টার দিকে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই সময় কয়েকজন নেতা-কর্মীকে মারধর করা হয়। এর মধ্যে দুজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর হামলাকারীরা ভৈরব স্ট্যান্ড রোডে জেলা পরিষদের অফিসে ঢুকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। ৩ ঘণ্টা পর দ্বিতীয় দফায় হামলায় এখানে আরও দুটি প্রাইভেট কারে আগুন ও ভাঙচুর চালানো হয়। অন্যদিকে হামলাকারীদের আরেকটি অংশ শেরেবাংলা রোডে বঙ্গবন্ধুর ভাতিজা সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে নগরীর স্যার ইকবাল রোডে অবস্থিত খুলনা প্রেস ক্লাবে ভাঙচুর চালানো হয়। তারা কাস্টমঘাট এলাকায় খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর অফিস, সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের বাড়ি, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি সফিকুর রহমান পলাশের বাড়ি, খুলনা ক্লাব, ময়লাপোতা মোড়ে হোটেল গ্রান্ড প্লাসিড, ডাকবাংলা মোড়ে মার্কেটসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানান, এসব হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
রাজশাহীতে থানা, খাদ্যগুদাম, ভূমি অফিস ও আ.লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ
আন্দোলনকারীরা দুপুর ১২টার দিকে মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তারপর থানার সামনের বিভিন্ন স্থাপনা ও গ্যারেজে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এতে থানার দুটি গাড়ি পুড়ে যায়। এরপর আন্দোলনকারীরা থানার পাশে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের সামনে এসি ল্যান্ডের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে আন্দোলনকারীরা উপজেলা খাদ্যগুদামে আগুন দেন। ভাঙচুর করা হয় ইউএনও কার্যালয়ও। এরপর উপজেলা সদর থেকে সরে আন্দোলনকারীরা কেশরহাট পৌর এলাকায় গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেখানে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে আন্দোলনকারীরা রাজশাহী মহানগরীতে বেলা ১১টার দিকে মোড় ও ভদ্রা এলাকায় থাকা পুলিশের বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন।
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকসহ আহত অন্তত ৩১
খাগড়াছড়িতে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে শিক্ষার্থী, সাধারণ পথচারী, গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ওই সময় বাজারে নিত্যপণ্য নিতে আসা কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রকে কুপিয়ে জখম করেন তারা।
জামালপুরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, আহত ৪
জামালপুরের বকশীগঞ্জে দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রথমে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেন। পরে আন্দোলনকারীরা আবার ফিরে এসে ওই কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ছাড়া বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম প্রামাণিকের গাড়িতে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। এরপর দুপুরে ইসলামপুর উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিস মাঠে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালান। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, চারজন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় হাসপাতালে আসেন, তাদের জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জে বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত শতাধিক
সুনামগঞ্জ জেলা শহরে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত শহরের স্টেশন রোড, পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। তবে জেলা শহরের আন্দোলনকারীদের ব্যানারে বিএনপির নেতা-কর্মীরাই বেশি ছিলেন। জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, তারা ৮০ থেকে ৯০ জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন। ২০ থেকে ২৫ জনকে পাঠানো হয়েছে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পুলিশ বক্স ভাঙচুর
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা কেরানীহাট পুলিশ বক্স ও বনফুলের একটি খাবারের দোকান ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া প্রায় ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
নারায়ণগঞ্জে ডিসি অফিস, রাইফেলস ক্লাবসহ ৭ প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, আহত ১৬৪
গতকাল বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাঢ়ায় মিছিল শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসেন। এ ছাড়া বিএনপিসহ অঙ্গসগঠনের নেতা-কর্মীদেরও দেখা গেছে সড়কে। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা সড়কে অবস্থান নেন। এ সময়ের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়, জেলা পরিষদের কার্যালয়, ডাকবাংলো, চাষাঢ়ায় অবস্থিত রাইফেলস ক্লাব ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর করা হয় ফতুল্লার পুলিশ বক্স, সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি প্রকল্পের অফিস। পুলিশের ড্রাম্পিংও ভাঙচুর করে সেখানে থাকা মালপত্র লুট করা হয়। একটি প্রাইভেট কারসহ সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দেয় তারা। এ ছাড়া শহরের সান্ত্বনা মার্কেট ভাঙচুর করে। এরপর শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ। বিকেল পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে ১৬৪ জন গুলিবিদ্ধসহ আহতদের চিকিৎসা দিয়েছে স্থানীয় হাসপাতালগুলো। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন মুশিয়ার রহমান। তিনি জানান, বাকিদের সদর জেনারেল হাসপাতাল ও ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন।
দিনাজপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি, হুইপ, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর
দিনাজপুর দুপুর ১২টার পর থেকে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়ি এবং সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর করেছেন। এ ছাড়া তারা পুলিশ পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স, ভ্যান, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও সাংবাদিকদের ৮টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে আদালতে আগুন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিস ভাঙচুর
ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আদালতের কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর চালানো হয়। আদালতের সামনে রাখা তিনটি প্রাইভেট কার ও প্রায় ১০টি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রায় ৫ ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বিপুল পরিমাণ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ।