ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশজুড়ে নজিরবিহীন নৈরাজ্য, নিহত ৮২

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০১:১৬ এএম
দেশজুড়ে নজিরবিহীন নৈরাজ্য, নিহত ৮২
ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (৫ আগস্ট) সারা দেশে নজিরবিহীন নৈরাজ্য হয়েছে। এ নৈরাজ্য-সহিংসতায় অন্তত ৮২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকায় নিহত হয়েছেন ৫৩ জন। এ ছাড়া দেশের ৯টি জেলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক শ। আমাদের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর:

ঢাকায় নিহত ৫৩ 

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নিহত হয়েছেন ৪০ জন। যাত্রাবাড়ীতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা থানা ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে সেখানে ১৫০ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যান। এ ছাড়া উত্তরায় ১০ জন ও মিটফোর্ড হাসপাতালে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন রাসেল (২৮), সুমন (৩৩), সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন (২৪), তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান (২২), অজ্ঞাতনামা (২৭), সাইফুল ইসলাম তন্ময় (২২), প্রবাসী আবু ইসহাক (৫২), আজমত মিয়া (৪০), পূবালী ব্যাংকের স্টাফ মানিক মিয়া (২৭), অজ্ঞাতনামা (২৫), আশিকুর রহমান (১২), সোহেল (৪৫), আজাদ হোসেন (২৩), আকবর হোসেন (৩৩), আরমান মিয়া (২০), মমিন হোসেন (২৩)। অন্যদের নাম জানা যায়নি। এ ছাড়া গতকাল ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৭৬ জন। এর মধ্যে ৫১ জন ভর্তি রয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর থানায় উত্তেজিত লোকজন ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পুলিশ তাদের বারবার সেখান থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলে তারা যাননি। এতে সেখানে পুলিশের গুলিতে প্রায় ৬০ জন আহত হন। 

পরে আহতদের সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় দুপুর ১টার দিকে কারফিউ ভঙ্গ করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি করে। এতে সেখানে ৭০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সাইনবোর্ড এলাকায় পুলিশের রাবার বুলেট ও গুলিতে ৪০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। যাত্রাবাড়ীর তিনটি স্পটের মোট ৪০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকায় গোলাগুলিতে একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির বয়স ৩০। তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালে মারা গেছেন। এ ছাড়া গতকাল দুপুর ১২টার দিকে উত্তরার আজমপুর এলাকায় ও উত্তরা পশ্চিম থানায় গোলাগুলিতে ১৯ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

রাজধানীর পল্টন, খিলক্ষেত, ভাটারা, মিরপুর, আদাবর, উত্তরা পূর্ব থানা, যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। বাড্ডা থানার মধ্য থেকে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে ভাঙচুর করার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, যাত্রাবাড়ীতে গোলাগুলিতে অনেক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

বরিশালে সাদিক আব্দুল্লাহর বাড়িতে আগুন, পুড়ে মৃত্যু তিনজনের

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর পোড়া বাসভবন থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আগুনে পুড়ে চেহারা বিকৃত হয়ে যাওয়ায় লাশের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ারম্যান মো. বশির উদ্দিন। তিনি বলেন, দুপুরে সাদিক আব্দুল্লাহ বাসভবনে একদল দুর্বৃত্ত আগুন দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মায়নাতদন্তের জন্য শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সময় সাদিক আব্দুল্লাহ সেখানে ছিলেন কি না, নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হবিগঞ্জে নিহত ৬, থানায় আগুন

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। তাদের মধ্যে অন্তত আটজনের অবস্থা গুরুতর।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বড় বাজার থেকে থানার দিকে আসতে থাকে। ঈদগাহের সামনে মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে থাকে। কিন্তু গণজোয়ারের মুখে পুলিশ পিছু হটে। পরে আন্দোলনকারীরা থানায় হামলা করেন। ডাকবাংলোয় আগুন ধরিয়ে দেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন বানিয়াচংয়ের যাত্রাপাশা মহল্লার সানু মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (১২), মাঝের মহল্লা গ্রামের আব্দুর নূরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (১৭), পাড়াগাঁও মহল্লার মোজাক্কির মিয়া (৪০), কামালহানি মহল্লার নয়ন মিয়া (১৮), যাতুকর্ণপাড়া মহল্লার তোফাজ্জল (১৮) ও পূর্বঘর গ্রামের সাদিকুর (৩০)।

হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন নূরুল হক বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আরও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
খুলনায় বাড়িতে আগুন, পুড়ে মৃত্যু আ.লীগ নেতার 

বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম মহসিন রেজাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত অন্য দুজন হলেন জি এম মহসিন রেজার গাড়িচালক আলমগীর ও ব্যক্তিগত সহকারী মফিজুল ইসলাম। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। 

শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ও দেশত্যাগের খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা জি এম মহসিন রেজার বাসভবনে হামলা করেন। এ সময় তিনি ব্যক্তিগত পিস্তল দিয়ে সাতটি গুলি করেন। এতে সাতজন গুলিবিদ্ধ হন।

পরে বিক্ষুব্ধ জনতা জি এম মহসিন রেজার বাসায় ঢুকে তাকে ব্যাপক মারধর ও মালপত্রে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে রেজার মৃত্যু হয়। একই সময় ঘটনাস্থলে থাকা তার আরও দুই সহযোগী নিহত হন। 

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

রাজশাহীতে শিক্ষার্থী নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩০

রাজশাহীতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে সবুজ নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুর ১টার দিকে নগরীর স্বচ্ছ টাওয়ার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হন। সবুজ বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি নগরীর রানীনগর এলাকায়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল থেকে নগরীর তালাইমারীসংলগ্ন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর স্বচ্ছ টাওয়ার মোড়ে আসেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এদিকে নগরীর আলুপট্টি মোড়ে সশস্ত্র অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি সাগরপাড়া মোড়ে পৌঁছলে তারা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেন। মিছিল থেকে ককটেল ছুড়ে মারা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। এরপর পুলিশ এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করেন। এ সময় বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। গুলি ছোড়েন নেতা-কর্মীরা। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবুজ পালিয়ে শাহ মখদুম কলেজের পাশে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই বাড়িতে ঢুকে সবুজকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪০ জনের মধ্যে ৩৭ জন এসেছেন রাজশাহী মহানগর থেকে। তিনজন এসেছেন জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে। ভর্তি ৪০ জনের মধ্যে ৩০ জনই গুলিবিদ্ধ। 

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, সংঘর্ষে হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। 

ফরিদপুরে থানায় আগুন, নিহত ১ 

ফরিদপুর সদর থানায় আগুন ও অস্ত্রাগার লুট করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার সন্ধ্যার আগে তারা থানাটি দখলে নিয়ে নেন। এর আগে পুলিশ থানা থেকে বের হয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে বের হয়ে যায়। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। তার নাম সামসু বলে জানা গেছে।

টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩

টাঙ্গাইল সদরে দুজন এবং ধনবাড়ী উপজেলায় একজন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল সদর থানা এবং বিকেলে ধনবাড়ী থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সোহেল। বাড়ি ভূঞাপুরে। সে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। 

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) নাহিদ আরেফিন জানান, গুলিবিদ্ধ দুজনের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

এ ছাড়া ধনবাড়ীতে থানায় হামলা করার সময় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। 

চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ নেতার বাসায় আগুন, ৪ জনের মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গা শহরের সিনেমা হলপাড়ায় যুবলীগের সাবেক নেতা আরেফিন আলম রঞ্জুর ভবনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আটজনকে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনা ঘটে।

পরে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ভবনের চতুর্থ তলা থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আটজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘নিচ থেকে চারতলা পর্যন্ত আগুন লেগেছিল। আমরা এসে নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে ভবনের চতুর্থ তলা থেকে আটজনকে জীবিত উদ্ধার করেছি। এখন চারজনের লাশ পাওয়া গেছে।’

এদিকে গাজীপুরে ছয়জন ও সাতক্ষীরায় চারজন নিহত হয়েছেন।

সাবেক ২ এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পিএম
সাবেক ২ এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত
দুর্নীতি দমন কমিশন

অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খানের (দিলীপ) অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুদক উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুর্নীতি বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। 

সূত্র জানায়, বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নিজ নামে বরিশালের আগরপুর রোড, রূপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়, ঢাকার নলটোনা, বরগুনার পাথরঘাটায় মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। বরগুনার কাঁঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫৮ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে। তার নিজ নামে ব্যবসার পুঁজি রয়েছে ১৫ কোটি ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৪৬ লাখ টাকার অন্যান্য বিনিয়োগ রয়েছে। নিজ নামে ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, মাইক্রো বাস, টয়োটা প্রিমিও কারসহ ৩টি গাড়ি, স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ও নগদ ১৮ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে দুদকে গোয়েন্দা ইউনিট। 

এদিকে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান (দিলিপ) দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২৩-২৪ করবর্ষে স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮০০ টাকা ও নিজ নামে ৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৭ টাকাসহ মোট ৮ কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৬৩৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। যার মধ্যে নিজ নামে নগদ ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা অর্থ ৪ কোটি ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৫ টাকা। সঞ্চয়পত্র ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, নিজ নামে ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১টি এলিয়ন গাড়ি, নিজ নামে ল্যান্ডক্রুজার, ডাম্পট্রাক, কার ও জাহাজ রয়েছে। দেশে-বিদেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। 

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকা অনুদান

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ পিএম
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকা অনুদান
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ ১০০ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা জানান ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। শহিদ মুগ্ধের যমজ ভাই স্নিগ্ধ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। আন্দোলন দমনে কঠোর হয় গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার। সেই আন্দোলনে যেসব মানুষ শহিদ হয়েছেন এবং যারা গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’।”

তিনি আরও বলেন, ‘এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সাতটি উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মধ্যে একটি উদ্যোগ হচ্ছে, আন্দোলনে অংশ নিয়ে যারা আহত হয়ে অর্থসংকটে ভুগছেন এবং যারা নিহত হয়েছেন– তাদের জরুরি আর্থিক সহায়তা, এককালীন একটি ভাতা ও মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। এটা এই সপ্তাহেই আমরা শুরু করব।’

ফাউন্ডেশনের প্রতি সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ সরকারের পক্ষ থেকে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা যারা দেশে বিদেশে আছেন এই ফাউন্ডেশনে অনুদান দেবেন।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এরই মধ্যে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আহতদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। একই সঙ্গে এরই মধ্যে যেসব আহত আন্দোলনকারী নিজেদের অর্থ ব্যয় করেছেন চিকিৎসার জন্য সেসব অর্থ তাদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা আহত এবং নিহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনেও কাজ করছি।’

‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেক্রেটারি আন্দোলনে শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ ছাড়া কাজী ওয়াকার আহমেদ কোষাধ্যক্ষ, উপদেষ্টাদের মধ্যে আছেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, নূরজাহান বেগম ও শারমিন মুর্শিদ। এতে আরও ১৪ জন সাধারণ সদস্য রয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল ফাউন্ডেশনের সদস্যরা বৈঠকে বসবেন। পরবর্তী করণীয় ঠিক করে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সহযোগিতা করার কাজ শুরু করা হবে।’



বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ-সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক এ প্রতিশ্রুতি দেন। 

তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য ২০০  কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এই অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।’

জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে- এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

নতুন ঋণ-সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটি সরকারের চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলারের তহবিল পুনর্বিন্যাসের কথা বলেছে।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান জানান, অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহজ শর্তের ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেবে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে।

সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, প্রতিবছর যে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন, তারাও এর সুফল পাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরক্টেরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা যে নতুন যাত্রার সূচনা করেছি, তাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলগুলোর শর্তে নমনীয় হতে হবে।’

তিনি এই বহুপক্ষীয় ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘আমাদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন এবং ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসন আমলে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে তিনি বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাংকের কাছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার মতো প্রযুক্তি রয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে দক্ষতার প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহায়তা করতে সম্মত হন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারলে খুশি হব।’

আবদৌলায়ে সেক জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘৩০ বছরের চাকরিজীবনে অন্য কোথাও এমন দেখিনি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের ক্ষমতায়ন করতে হবে।’

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৭২

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৭২
ডেঙ্গু

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৭২ জন। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১১৩ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ২১৩ জন।

এর আগের ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত রবিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬৭ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১১৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯১, খুলনা বিভাগে ১০ জন রয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

শেখ হাসিনার নামে সারা দেশে ১৮১ মামলা

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
শেখ হাসিনার নামে সারা দেশে ১৮১ মামলা
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এর কয়েক দিন পর থেকে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে সারা দেশে ১৮১টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬০টিই হত্যা মামলা। হত্যা মামলাগুলোতে শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত, রাজধানীর বিভিন্ন থানা এবং ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে মামলাগুলো করেছেন আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের স্বজনরা।

মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ, ছাত্রলীগের নেতা তানভীর হাসান সৈকত, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান প্রমুখ।

এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক তিন আইজিপিসহ ৮৮ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক তিন আইজিপি, সাবেক দুই ডিএমপি কমিশনার ও র‍্যাবের সাবেক দুই ডিজি, এসবি সাবেক প্রধান ও সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া প্রমুখ। আসামি করা হয়েছে ১১ জন ডিআইজি ও ১৪ জন এসপিকেও। তা ছাড়া ১৬ জন এডিসি, ৬ জন সহকারী কমিশনার (এসি) ১৩ জন ওসি, ৯ জন পুলিশ পরিদর্শক, ১৩ জন এসআই, ১ জন এএসআই ও ৩ জন পুলিশ কনস্টেবলকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ৩৭টি, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ৭টি, ডিবিপ্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ৩৮টি এবং সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে মঙ্গলবারও শেখ হাসিনার নামে চারটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনটি হত্যা মামলা হয়। আদালত মামলার বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর মডেল থানার পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। অন্য মামলাটি করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে আহত মো. জাহাঙ্গীর নামে এক ভুক্তভোগী। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মামলাটি করেন তিনি।