শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে দেশের নানা স্থানে সংঘাত, সহিংসতার ঘটনা রুখে দিতে ছাত্র-জনতাকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জনগণ ঐক্যবদ্ধ ছিল বলে আজকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন হয়েছে। এখন এই ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়াকে যারা নস্যাৎ করতে চায়, এমন পরিকল্পনা করছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী এই লড়াই ছিল দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে সবার। যেকোনো সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিভাজন মুক্তিকামী ছাত্র জনতাকে রুখে দিতে হবে।’
এ সময় নাহিদ জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। এর আগে লিয়াজোঁ কমিটির মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
নাহিদ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি আস্থা রাখবেন। কারণ আমাদের ডাকেই দেশের মানুষ রাজপথে নেমে এসেছেন। তাদের শতভাগ আস্থা আছে আমাদের প্রতি। এখন যদি আমাদের উপেক্ষা করে কোনো ফ্যাসিস্ট রেজিম বা তাদের কোনো বি টিম বসানো হয়, তবে তা জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা এ সময় জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য তাদের কাছে এখনো কোনো প্রস্তাবনা দেওয়া হয়নি। তারা বলছেন, রাজপথের বিষয় যেন রাজপথেই সমাধান হয়। এখন সারা দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলেন তারা। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তারা কথা বলবেন।
সোমবার বিকেল থেকে দেশের নানা স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলার খবর আসতে থাকে। এতে সমন্বয়করা বলেন, আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে অনেক পক্ষ নানা ঘটনা ঘটিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর দায় চাপাতে পারেন। এক্ষেত্রে ছাত্র জনতাকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারা।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর কেউ যেন আক্রমণ না করে তার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিচার চাই ঠিক। কিন্তু তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যেন হয়। আমরা কেউ আইন হাতে তুলে নেব না।