ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা ঢামেক হাসপাতালে ১৯১ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৪২ এএম
ঢামেক হাসপাতালে ১৯১ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ, বিভিন্নভাবে আহত মুমূর্ষু ও অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ১৯১ জনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। অনেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও মারা গেছেন।

এ সময়ে আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন প্রায় ১ হাজার ৯৬৫ জন। তাদের মধ্যে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, ইসিজি বিভাগ ও মর্গের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক ৩ জন, পুলিশ সদস্য ২৪, আনসার সদস্য ৩, র‍্যাব সদস্য ২, বিজিবির ১, শিক্ষার্থী ২৯, ব্যবসায়ী ১৮, চাকরিজীবী ১৩, শ্রমিক ৯, অজ্ঞাতনামা নামা ৯, কর্মচারী ২৪, রিকশা ও ভ্যানচালক ৮, ড্রাইভার ৪, অন্যান্য (অজ্ঞাতনামা ) ৪৪ জন।

গত ১৭ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় নিহত হন তারা। নিহতদের মধ্যে শিশু, কিশোর, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‍্যাব, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী, চাকরিজীবী ও সাধারণ কর্মজীবীও রয়েছেন। 

নিহতরা হলেন শাহজাহান (২৫), সবুজ আলী (২৫), জাফর হাওলাদার (৪৫), মেহেদী হাসান (২৬), নাজমুল (৩৪), ওয়াসিম শেখ (৩৮), আব্দুল্লাহ (২০), পারভেজ (২৩), জিহাদ হাসান (২২), নাইম হাওলাদার (২০), ইব্রাহিম (১৩), আরিফ (১৮), রবিউল ইসলাম (২৭), শাহজামাল (২৬), মো. গিয়াসউদ্দিন (৫৮), রাব্বী আলম পাভেল (২৫), মো. শুভ (১৯), জুয়েল শেখ (২২), নবীন তালুকদার (৪০), কামাল (৪০), মোবারক (৩৫), রনি আলামিন (২৩), শাকিল (২২), কবির (৩৪), তাহির জামাল প্রিয় (২৭), মুক্তাদির (৪৮), গনি শেখ (৪৫), ওমর ফারুক (২৩), হাসান (১৮), আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫), মোবারক (১৩), টিটু (৩৩), ওয়াসিম (২৫), ইফতি (১৬), সোহাগ (১৯), খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ (১৮), দুলাল (৪০), মাসুদ (৪০), রাকিব (২৩), আকরাম খান রাব্বী (২৮), আব্দুল্লাহ আল আবীর (২৪), আব্দুল আহাদ (৪), আলী হোসেন (৪০), ইমাম হোসেন তাইম (১৯), মারুফ হোসেন (২০), ইমন (২৬), মোশারফ (৩৮), রাজীব হোসেন (৩০), শাহরিয়া বিন মতিন (১৯), সোহাগ (২৫), জাকির হোসেন (৩৬), আহাদুল (১৫), মেহেদী (২০), হোসাইন (১০), জিসান (২০), আরিফ (২৮), ইউসুফ মিয়া (৩৫), কামরুল ইসলাম (১৭), হান্নান (২৯), তৌফিদুল ইসলাম (৪৫), ইউনুস আলী (১৬), হাবিব (৪৫), শাকিল (২০), ইমরান (১৬), আব্দুল লতিফ (৪০), মনির হোসেন (২৮), রাজু (৩৬), আজিজুল মিয়া (২২), রাসেল (২০), গনি মিয়া (৩৫), অজ্ঞাতনামা (৫০), ইমরান (২১), অজ্ঞাতনামা (৪০), মনির হোসেন (৫৬), অজ্ঞাতনামা (৩৫), শরীফ (৩০), অজ্ঞাতনামা (৩০), শান্ত (২২), হৃদয় চন্দ্র তরুয়া (২৩), নাসির হোসেন (৩২), অজ্ঞাতনামা (২৫), অজ্ঞাতনামা (২৮), শাহজাহান (২২), রিয়া গোপ (৬), সাজিদুর রহমান (২১), জাকির হোসেন (২৯), জামান মিয়া (১৭), সোহেল মিয়া (২৭), ইমতিয়াজ (২০), মাইনুদ্দিন (২৪), ইয়ামিন চৌধুরী (১৮), আব্দুর রহমান (৪৪), ইমন (১৭), আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী (২২), মো. তাহিদুল ইসলাম (২২), অজ্ঞাতনামা (৬৫), রমিজ উদ্দিন (২৮), অজ্ঞাতনামা (২৫), রিয়াজুদ্দৌলা (৩২), অজ্ঞাতনামা (১৪), রেজাউল তালুকদার (৩৬), মো. সবুজ (২১), রাসেল (২৫), অজ্ঞাতনামা (২৭), ইমরান (২৫), আব্দুর রহমান (২২), মানিক মিয়া (৩০), রাকিব হোসেন (২৪), আজমত আলী (৩৫), ইসহাক (৫২), রাসেল (২৫), অজ্ঞাতনামা যুবক (২৭), ইমরান (২৫), আব্দুর রহমান (২২), মানিক মিয়া (৩০), রাকিব হোসেন (২৪), আজমত আলী (৩৫), আবু ইসহাক (৫২), সাইফুল ইসলাম ওমর (২৩), শাকিল (২১), অজ্ঞাতনামা যুবক (২৮), শাহীন (২৪), ইয়াসিন (২৪), সোহেল (২২), অজ্ঞাতনামা (২৪), অজ্ঞাতনামা (৪০), আব্দুল নুর (৩৫), অজ্ঞাতনামা যুবক (২৫), অজ্ঞাতনামা যুবক (৩০), অজ্ঞাতনামা যুবক (২২), ইসমাইল রাব্বি (২২), রনি (১৭), অজ্ঞাতনামা যুবক (২০), অজ্ঞাতনামা (৪০) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। হামিদুর রহমান (২২), অজ্ঞাতনামা (২০), অজ্ঞাতনামা (৩৫), অজ্ঞাতনামা (২২), অজ্ঞাতনামা (২৮), অজ্ঞাতনামা (৩২), অজ্ঞাতনামা (৩০), অজ্ঞাতনামা (২০), অজ্ঞাতনামা (২৬), শাওন (১৫), আবু রায়হান (২১), অজ্ঞাতনামা (৩০), অজ্ঞাতনামা (২৫), আব্দুল হান্নান (৫০), অজ্ঞাতনামা (২৪), মনোয়ার (৫৫), মাহফুজুর রহমান (২৪), আশরাফুল হাওলাদার বয়স (২০), অজ্ঞাতনামা (২২), হাফেজ মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (২৬), অজ্ঞাতনামা নামা (৪০-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা (৩০), আনোয়ার হোসেন (৫৭-পুলিশ), রাব্বি (২১), আব্দুল আলিম (৪৬-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা (৩৫), অজ্ঞাতনামা (৩০-পুলিশ), রাসেল মাহমুদ (পুলিশ), মনির (৪৫), রাসেল (৪৪-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা (৩৮), অজ্ঞাতনামা (৩২), অজ্ঞাতনামা (৪০), আসিব (১৬), সুলতান (৩০-পুলিশ), র‍্যাব সদস্য হাসমত আলী (৩৫), নুর আলম (২১), র‍্যাব সদস্য আনোয়ার (৩৬), বিজিবি সদস্য মো. আব্দুল আলিম (৩৯), সঞ্জয় কুমার দাস (৩৯-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৩২), শাওন (২২), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৫০), রুবেল পুলিশ সদস্য (২৫), মনির (৪৫), বাপ্পি আহম্মেদ (৩৫), পুলিশ সদস্য আব্দুল মজিদ (৪৫), পুলিশ সদস্য সুজন চন্দ্র দে (৪১)‌, পুলিশ সদস্য ফিরোজ হোসেন (৪৮), পুলিশ সদস্য আবু হাসনাত রনি (২৪), পুলিশ সদস্য খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার (৪৯), পুলিশ সদস্য শাহিদুল আলম (৪৮), পুলিশ সদস্য রেজাউল করিম (৪৮), আনসার সদস্য আবু জাফর (৪৬), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৩২)‌, অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৪০)‌, অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৩২)‌, অজ্ঞাতনামা আনসার সদস্য (৩২)। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এ ছাড়া হাসপাতালের খাতায় লিপিবদ্ধ না করে অনেকেই আবার লাশ নিয়ে চলে যান। সেগুলো হাসপাতালের খাতায় লিপিবদ্ধ হয়নি। এমনকি আহতদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনাটি ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হলে তাদের অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ছাড়া আহতদের অনেকেই বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

সাবেক ২ এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পিএম
সাবেক ২ এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত
দুর্নীতি দমন কমিশন

অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খানের (দিলীপ) অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুদক উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুর্নীতি বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। 

সূত্র জানায়, বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নিজ নামে বরিশালের আগরপুর রোড, রূপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়, ঢাকার নলটোনা, বরগুনার পাথরঘাটায় মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। বরগুনার কাঁঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫৮ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে। তার নিজ নামে ব্যবসার পুঁজি রয়েছে ১৫ কোটি ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৪৬ লাখ টাকার অন্যান্য বিনিয়োগ রয়েছে। নিজ নামে ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, মাইক্রো বাস, টয়োটা প্রিমিও কারসহ ৩টি গাড়ি, স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ও নগদ ১৮ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে দুদকে গোয়েন্দা ইউনিট। 

এদিকে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান (দিলিপ) দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২৩-২৪ করবর্ষে স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮০০ টাকা ও নিজ নামে ৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৭ টাকাসহ মোট ৮ কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৬৩৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। যার মধ্যে নিজ নামে নগদ ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা অর্থ ৪ কোটি ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৫ টাকা। সঞ্চয়পত্র ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, নিজ নামে ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১টি এলিয়ন গাড়ি, নিজ নামে ল্যান্ডক্রুজার, ডাম্পট্রাক, কার ও জাহাজ রয়েছে। দেশে-বিদেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। 

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকা অনুদান

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ পিএম
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকা অনুদান
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ ১০০ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা জানান ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। শহিদ মুগ্ধের যমজ ভাই স্নিগ্ধ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। আন্দোলন দমনে কঠোর হয় গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার। সেই আন্দোলনে যেসব মানুষ শহিদ হয়েছেন এবং যারা গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’।”

তিনি আরও বলেন, ‘এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সাতটি উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মধ্যে একটি উদ্যোগ হচ্ছে, আন্দোলনে অংশ নিয়ে যারা আহত হয়ে অর্থসংকটে ভুগছেন এবং যারা নিহত হয়েছেন– তাদের জরুরি আর্থিক সহায়তা, এককালীন একটি ভাতা ও মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। এটা এই সপ্তাহেই আমরা শুরু করব।’

ফাউন্ডেশনের প্রতি সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ সরকারের পক্ষ থেকে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা যারা দেশে বিদেশে আছেন এই ফাউন্ডেশনে অনুদান দেবেন।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এরই মধ্যে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আহতদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। একই সঙ্গে এরই মধ্যে যেসব আহত আন্দোলনকারী নিজেদের অর্থ ব্যয় করেছেন চিকিৎসার জন্য সেসব অর্থ তাদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা আহত এবং নিহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনেও কাজ করছি।’

‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেক্রেটারি আন্দোলনে শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ ছাড়া কাজী ওয়াকার আহমেদ কোষাধ্যক্ষ, উপদেষ্টাদের মধ্যে আছেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, নূরজাহান বেগম ও শারমিন মুর্শিদ। এতে আরও ১৪ জন সাধারণ সদস্য রয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল ফাউন্ডেশনের সদস্যরা বৈঠকে বসবেন। পরবর্তী করণীয় ঠিক করে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সহযোগিতা করার কাজ শুরু করা হবে।’



বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ-সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক এ প্রতিশ্রুতি দেন। 

তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য ২০০  কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এই অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।’

জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে- এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

নতুন ঋণ-সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটি সরকারের চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলারের তহবিল পুনর্বিন্যাসের কথা বলেছে।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান জানান, অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহজ শর্তের ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেবে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে।

সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, প্রতিবছর যে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন, তারাও এর সুফল পাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরক্টেরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা যে নতুন যাত্রার সূচনা করেছি, তাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলগুলোর শর্তে নমনীয় হতে হবে।’

তিনি এই বহুপক্ষীয় ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘আমাদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন এবং ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসন আমলে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে তিনি বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাংকের কাছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার মতো প্রযুক্তি রয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে দক্ষতার প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহায়তা করতে সম্মত হন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারলে খুশি হব।’

আবদৌলায়ে সেক জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘৩০ বছরের চাকরিজীবনে অন্য কোথাও এমন দেখিনি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের ক্ষমতায়ন করতে হবে।’

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৭২

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৭২
ডেঙ্গু

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৭২ জন। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১১৩ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ২১৩ জন।

এর আগের ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত রবিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬৭ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১১৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯১, খুলনা বিভাগে ১০ জন রয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

শেখ হাসিনার নামে সারা দেশে ১৮১ মামলা

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
শেখ হাসিনার নামে সারা দেশে ১৮১ মামলা
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এর কয়েক দিন পর থেকে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে সারা দেশে ১৮১টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬০টিই হত্যা মামলা। হত্যা মামলাগুলোতে শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত, রাজধানীর বিভিন্ন থানা এবং ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে মামলাগুলো করেছেন আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের স্বজনরা।

মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ, ছাত্রলীগের নেতা তানভীর হাসান সৈকত, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান প্রমুখ।

এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক তিন আইজিপিসহ ৮৮ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক তিন আইজিপি, সাবেক দুই ডিএমপি কমিশনার ও র‍্যাবের সাবেক দুই ডিজি, এসবি সাবেক প্রধান ও সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া প্রমুখ। আসামি করা হয়েছে ১১ জন ডিআইজি ও ১৪ জন এসপিকেও। তা ছাড়া ১৬ জন এডিসি, ৬ জন সহকারী কমিশনার (এসি) ১৩ জন ওসি, ৯ জন পুলিশ পরিদর্শক, ১৩ জন এসআই, ১ জন এএসআই ও ৩ জন পুলিশ কনস্টেবলকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ৩৭টি, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ৭টি, ডিবিপ্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ৩৮টি এবং সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে মঙ্গলবারও শেখ হাসিনার নামে চারটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনটি হত্যা মামলা হয়। আদালত মামলার বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর মডেল থানার পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। অন্য মামলাটি করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে আহত মো. জাহাঙ্গীর নামে এক ভুক্তভোগী। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মামলাটি করেন তিনি।