সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ, বিভিন্নভাবে আহত মুমূর্ষু ও অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ১৯১ জনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। অনেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও মারা গেছেন।
এ সময়ে আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন প্রায় ১ হাজার ৯৬৫ জন। তাদের মধ্যে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, ইসিজি বিভাগ ও মর্গের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক ৩ জন, পুলিশ সদস্য ২৪, আনসার সদস্য ৩, র্যাব সদস্য ২, বিজিবির ১, শিক্ষার্থী ২৯, ব্যবসায়ী ১৮, চাকরিজীবী ১৩, শ্রমিক ৯, অজ্ঞাতনামা নামা ৯, কর্মচারী ২৪, রিকশা ও ভ্যানচালক ৮, ড্রাইভার ৪, অন্যান্য (অজ্ঞাতনামা ) ৪৪ জন।
গত ১৭ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় নিহত হন তারা। নিহতদের মধ্যে শিশু, কিশোর, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাব, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী, চাকরিজীবী ও সাধারণ কর্মজীবীও রয়েছেন।
নিহতরা হলেন শাহজাহান (২৫), সবুজ আলী (২৫), জাফর হাওলাদার (৪৫), মেহেদী হাসান (২৬), নাজমুল (৩৪), ওয়াসিম শেখ (৩৮), আব্দুল্লাহ (২০), পারভেজ (২৩), জিহাদ হাসান (২২), নাইম হাওলাদার (২০), ইব্রাহিম (১৩), আরিফ (১৮), রবিউল ইসলাম (২৭), শাহজামাল (২৬), মো. গিয়াসউদ্দিন (৫৮), রাব্বী আলম পাভেল (২৫), মো. শুভ (১৯), জুয়েল শেখ (২২), নবীন তালুকদার (৪০), কামাল (৪০), মোবারক (৩৫), রনি আলামিন (২৩), শাকিল (২২), কবির (৩৪), তাহির জামাল প্রিয় (২৭), মুক্তাদির (৪৮), গনি শেখ (৪৫), ওমর ফারুক (২৩), হাসান (১৮), আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫), মোবারক (১৩), টিটু (৩৩), ওয়াসিম (২৫), ইফতি (১৬), সোহাগ (১৯), খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ (১৮), দুলাল (৪০), মাসুদ (৪০), রাকিব (২৩), আকরাম খান রাব্বী (২৮), আব্দুল্লাহ আল আবীর (২৪), আব্দুল আহাদ (৪), আলী হোসেন (৪০), ইমাম হোসেন তাইম (১৯), মারুফ হোসেন (২০), ইমন (২৬), মোশারফ (৩৮), রাজীব হোসেন (৩০), শাহরিয়া বিন মতিন (১৯), সোহাগ (২৫), জাকির হোসেন (৩৬), আহাদুল (১৫), মেহেদী (২০), হোসাইন (১০), জিসান (২০), আরিফ (২৮), ইউসুফ মিয়া (৩৫), কামরুল ইসলাম (১৭), হান্নান (২৯), তৌফিদুল ইসলাম (৪৫), ইউনুস আলী (১৬), হাবিব (৪৫), শাকিল (২০), ইমরান (১৬), আব্দুল লতিফ (৪০), মনির হোসেন (২৮), রাজু (৩৬), আজিজুল মিয়া (২২), রাসেল (২০), গনি মিয়া (৩৫), অজ্ঞাতনামা (৫০), ইমরান (২১), অজ্ঞাতনামা (৪০), মনির হোসেন (৫৬), অজ্ঞাতনামা (৩৫), শরীফ (৩০), অজ্ঞাতনামা (৩০), শান্ত (২২), হৃদয় চন্দ্র তরুয়া (২৩), নাসির হোসেন (৩২), অজ্ঞাতনামা (২৫), অজ্ঞাতনামা (২৮), শাহজাহান (২২), রিয়া গোপ (৬), সাজিদুর রহমান (২১), জাকির হোসেন (২৯), জামান মিয়া (১৭), সোহেল মিয়া (২৭), ইমতিয়াজ (২০), মাইনুদ্দিন (২৪), ইয়ামিন চৌধুরী (১৮), আব্দুর রহমান (৪৪), ইমন (১৭), আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী (২২), মো. তাহিদুল ইসলাম (২২), অজ্ঞাতনামা (৬৫), রমিজ উদ্দিন (২৮), অজ্ঞাতনামা (২৫), রিয়াজুদ্দৌলা (৩২), অজ্ঞাতনামা (১৪), রেজাউল তালুকদার (৩৬), মো. সবুজ (২১), রাসেল (২৫), অজ্ঞাতনামা (২৭), ইমরান (২৫), আব্দুর রহমান (২২), মানিক মিয়া (৩০), রাকিব হোসেন (২৪), আজমত আলী (৩৫), ইসহাক (৫২), রাসেল (২৫), অজ্ঞাতনামা যুবক (২৭), ইমরান (২৫), আব্দুর রহমান (২২), মানিক মিয়া (৩০), রাকিব হোসেন (২৪), আজমত আলী (৩৫), আবু ইসহাক (৫২), সাইফুল ইসলাম ওমর (২৩), শাকিল (২১), অজ্ঞাতনামা যুবক (২৮), শাহীন (২৪), ইয়াসিন (২৪), সোহেল (২২), অজ্ঞাতনামা (২৪), অজ্ঞাতনামা (৪০), আব্দুল নুর (৩৫), অজ্ঞাতনামা যুবক (২৫), অজ্ঞাতনামা যুবক (৩০), অজ্ঞাতনামা যুবক (২২), ইসমাইল রাব্বি (২২), রনি (১৭), অজ্ঞাতনামা যুবক (২০), অজ্ঞাতনামা (৪০) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। হামিদুর রহমান (২২), অজ্ঞাতনামা (২০), অজ্ঞাতনামা (৩৫), অজ্ঞাতনামা (২২), অজ্ঞাতনামা (২৮), অজ্ঞাতনামা (৩২), অজ্ঞাতনামা (৩০), অজ্ঞাতনামা (২০), অজ্ঞাতনামা (২৬), শাওন (১৫), আবু রায়হান (২১), অজ্ঞাতনামা (৩০), অজ্ঞাতনামা (২৫), আব্দুল হান্নান (৫০), অজ্ঞাতনামা (২৪), মনোয়ার (৫৫), মাহফুজুর রহমান (২৪), আশরাফুল হাওলাদার বয়স (২০), অজ্ঞাতনামা (২২), হাফেজ মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (২৬), অজ্ঞাতনামা নামা (৪০-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা (৩০), আনোয়ার হোসেন (৫৭-পুলিশ), রাব্বি (২১), আব্দুল আলিম (৪৬-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা (৩৫), অজ্ঞাতনামা (৩০-পুলিশ), রাসেল মাহমুদ (পুলিশ), মনির (৪৫), রাসেল (৪৪-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা (৩৮), অজ্ঞাতনামা (৩২), অজ্ঞাতনামা (৪০), আসিব (১৬), সুলতান (৩০-পুলিশ), র্যাব সদস্য হাসমত আলী (৩৫), নুর আলম (২১), র্যাব সদস্য আনোয়ার (৩৬), বিজিবি সদস্য মো. আব্দুল আলিম (৩৯), সঞ্জয় কুমার দাস (৩৯-পুলিশ), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৩২), শাওন (২২), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৫০), রুবেল পুলিশ সদস্য (২৫), মনির (৪৫), বাপ্পি আহম্মেদ (৩৫), পুলিশ সদস্য আব্দুল মজিদ (৪৫), পুলিশ সদস্য সুজন চন্দ্র দে (৪১), পুলিশ সদস্য ফিরোজ হোসেন (৪৮), পুলিশ সদস্য আবু হাসনাত রনি (২৪), পুলিশ সদস্য খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার (৪৯), পুলিশ সদস্য শাহিদুল আলম (৪৮), পুলিশ সদস্য রেজাউল করিম (৪৮), আনসার সদস্য আবু জাফর (৪৬), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৩২), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৪০), অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য (৩২), অজ্ঞাতনামা আনসার সদস্য (৩২)।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এ ছাড়া হাসপাতালের খাতায় লিপিবদ্ধ না করে অনেকেই আবার লাশ নিয়ে চলে যান। সেগুলো হাসপাতালের খাতায় লিপিবদ্ধ হয়নি। এমনকি আহতদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনাটি ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হলে তাদের অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ছাড়া আহতদের অনেকেই বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।