ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সব ধর্মের নাগরিকদের সমঅধিকার সুনিশ্চিত করা হবে: ধর্ম উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৭ পিএম
সব ধর্মের নাগরিকদের সমঅধিকার সুনিশ্চিত করা হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে দেশ আমাদের সবার। সব নাগরিকের সমঅধিকার সুনিশ্চিত করা হবে।

রবিবার (১১ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে যোগ দিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা। 

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতেই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার। এ সময় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিধি এবং ভিশন ও মিশন উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়। 

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. বশিরুল আলম, হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, বাজেট ও অনুদান অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান, সংস্থা ও আইন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, ওয়াকফ প্রশাসক ড. মো. গোলাম কবীরসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ল ১ মাস

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ল ১ মাস
কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচলের সময় এক মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে৷

গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রী চাহিদার প্রেক্ষিতে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচলের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে৷

চলতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে ৮ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে৷ যাত্রী চাহিদা থাকায় ঈদের পরে টানা ৫২দিন যাত্রী পরিবহন করে স্পেশাল ট্রেনটি৷ পরে ক্রু ও ইঞ্জিন সংকটের কারণ দেখিয়ে ৩০ মে থেকে সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। ঈদুল আজহার সময় ১২ জুন থেকে ঈদ স্পেশাল হিসেবে ট্রেনটি আবার চালু করা হয়।  

কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনে আসন সংখ্যা ৭৪৩টি। কোচ রয়েছে ১৬টি। স্ট্যান্ডিং টিকিট ছাড়া প্রতিদিন আয় এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৫০ টাকা। টিকিট বেশি বিক্রি হলে আয়ও বেড়ে যায়। এ রুটে যাত্রীদের চাহিদা রয়েছে বেশি। টিকিট বিক্রিও বেশি।  

জয়ন্ত সাহা/অমিয়/

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে গ্রেপ্তার
সাফি মোসাদ্দের খান জ্যোতি

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ছেলে সাফি মোসাদ্দের খান জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আশুলিয়া থানায় দায়ের করা একটি মামলায় সাফি মুদ্দাসির খান জ্যোতিকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে। 

অমিয়/

উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেলেন ৬ জন

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০ পিএম
উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেলেন ৬ জন

দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ছয় পদে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) দুই পূর্ণকালীন সদস্য, বুয়েট ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, ঢাবি ও বুয়েটে উপ-উপাচার্য পদে মোট ছয় শিক্ষাবিদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইউজিসির সদস্য হলেন অধ্যাপক তানজিম ও আনোয়ার হোসেন
ইউজিসির পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। গত বৃহস্পতিবার তারা কমিশনে যোগদান করেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ, ১৯৭৩ (রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর-১০/৭৩)-এর সংশোধিত আইন, ১৯৯৮-এর ৪(১)(বি) ধারা অনুযায়ী তাদের বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্যাল ইকোনমি বিষয়ে মাস্টার্স এবং ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইংল্যান্ড থেকে পলিটিক্যাল ইকোলজি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা জার্নালে তার ৩৫টিরও অধিক নিবন্ধ ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি কানাডার কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স এবং সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা জার্নালে তার মোট ১১৩টি প্রকাশনা নিবন্ধ রয়েছে। মানবাধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১০ সালে নেহরু হিউম্যানেটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১১-১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি) কানাডা রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

অন্যদিকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে ইউজিসির তিন সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন ও অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বুয়েটের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক বোরহান, উপ-উপাচার্য আব্দুল হাসিব
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান নিয়োগ পেয়েছেন। একই সঙ্গে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ লাভ করেন।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ১৯৬১-এর ১১(১) এবং (২) ধারা অনুযায়ী উপাচার্য এবং ১২(এ) ধারা অনুযায়ী উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তাদের মেয়াদকাল চার বছর।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ঢাবি অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী এ নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। এই নিয়োগের মেয়াদ চার বছর। অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন।

ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩-এর আর্টিকেল ১৩(১) অনুযায়ী এই নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বে আছেন। অধ্যাপক মামুনের নিয়োগের কারণে পৃথক প্রজ্ঞাপন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুল হান্নান চৌধুরী
দেশের অন্যতম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর ধারা ৩১(১) অনুযায়ী এই নিয়োগ অনুমোদন করেন রাষ্ট্রপতি।

ডিএমপির দুই থানায় নতুন ওসি

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০২ পিএম
ডিএমপির দুই থানায় নতুন ওসি
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যাত্রাবাড়ী ও মুগদা থানায় নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএমপি জানায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগে কর্মরত নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মো. ফারুক আহম্মেদকে যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ও লাইনওআরে কর্মরত নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মো. সাজেদুর রহমানকে মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

একই আদেশে মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক সোহরাব মিয়াকে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগে বদলি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই বদলি করা হয়।

রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৩ এএম
রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব
সফর রাজ হোসেন, শাহদীন মালিক (উপরে। শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান ,বদিউল আলম মজুমদার (নিচে)।

রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের প্রত্যয় ব্যক্ত করে গত মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভবিষ্যতে সমাজের সব স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্র পরিচালনার উপায় খুঁজতে সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কারের প্রস্তাবনা তৈরির জন্য পৃথক ৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।

এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে খবরের কাগজ। এর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা আগামী সপ্তাহের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন এবং দেশের সার্বিক সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা প্রবর্তন, নির্বাচনব্যবস্থা প্রণয়ন, সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রকাঠামো নির্মাণে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাবনা দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।

উন্নত দেশের মতো পুলিশের প্রস্তাবই দেব: সফর রাজ হোসেন, সাবেক সচিব

আমি তো এখনো কোনো চিঠি পাইনি। এখনো কমিটির কার্যপ্রণালি বা টার্মস অব রেফারেন্স- কমিটিকে কী করতে হবে, কমিটিতে কারা থাকবেন, একচুয়ালি সরকার কী চায় এবং কমিটির অন্য সদস্য কারা হবেন সে সম্পর্কে এখনো অফিশিয়ালি কোনো কাগজপত্র পাইনি। আমরা ভাবব যে, আমাদের পুলিশ উন্নত দেশের মতো হবে। সে জন্যই আমরা হয়তো স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব করব।

তবে রাজনৈতিকভাবে পুলিশকে ব্যবহার ঠেকানোর বিষয়টি হয়তো আমরা পুরোটা প্রস্তাবনায় আনতে পারব না। কারণ পুলিশের ওপর  সরকারের রাজনৈতিক যে নিয়ন্ত্রণ, সেটা বোধহয় আমার টার্মস অব রেফারেন্সের মধ্যে আসবে না। সেটা হয়তো সংবিধান নিয়ে যারা কাজ করছেন (সংবিধান সংস্কার কমিশন) তারা ঠিক করতে পারেন যে, কীভাবে সরকারের সেন্ট্রালাইজ ক্ষমতাকে ডিসেন্ট্রালাইজ করা যায়।

বর্তমানে যে সংবিধান আছে, এ সংবিধান অনুযায়ী যা হবে সে রকমই চলবে। সংবিধান সংস্কার করলে তখন সে ব্যাপারটা আলাদা কিছু হবে। নির্বাহী ক্ষমতা কীভাবে ব্যবহার করা হবে সেটা তো সংবিধান বা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। আমরা হয়তো পুলিশের অর্গানোগ্রাম নিয়ে কাজ করব। আর হয়তো পুলিশ রিলেটেড যেসব আইন আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করব।

আমার টিমে আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে নেওয়া হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে দেখা করব। আমরা হয়তো আগামী ১ অক্টোবর কমিশনের প্রথম বৈঠকে বসব। সেই বৈঠকে কর্মপরিকল্পনা ও একটি রূপরেখা তৈরি করব।

আনুষ্ঠানিক চিঠি পেলে কাজের চৌহদ্দি বোঝা যাবে: শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি

আমার কাজটা কী? তা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানি না। খবরের কাগজ এবং টেলিভিশনে দেখেছি মাত্র। আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পেলে এবং কমিশনে আর যারা থাকছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে করণীয় ঠিক করা যাবে। তা ছাড়া আনুষ্ঠানিক চিঠি থেকেও হয়তো কাজের চৌহদ্দি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে।

দায়িত্ব পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বসেও সুপারিশমালা প্রস্তুতের কাজ এগিয়ে নেওয়া যাবে। আমি বিচার বিভাগে ছিলাম। আইনজীবী ছিলাম। পরে বিচারক হয়েছি। হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলাম, সর্বশেষ আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলাম। আমার ওপর যদি দায়িত্ব এসে থাকে, তাহলে নিম্ন আদালতের ব্যাপারে আরও খোঁজখবর নেব। কারণ এখন নিম্ন আদালতের সব খবর বলতে পারব না। সব মিলে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সুপারিশ করা যাবে।

গত দেড় দশকে বিচার বিভাগের পরিস্থিতি এখন এন্ডলেস গেমের মতো হয়ে গেছে। যে যা খুশি তা করেছে। আমি ‘সঠিক’ শব্দটা ব্যবহার করতে চাই। সঠিক বিচার কি হয়েছে? হয়নি। কারণ যিনি বিচার করেছেন, তিনি চাপে ছিলেন। যিনি বিচার করাচ্ছেন, তিনি নিজের মতো করিয়েছেন। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তো চাকরি করেছে, খেয়েছে, ঘুমিয়েছে, পেট ভরেছে! ওই সময়ের বিচারের কথা না বলাই ভালো।

বিচারকরা যেন শিরদাঁড়া সোজা করে বিচার করতে পারেন সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করব। বিচারকদের কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়, বিচারকদের ছেলেমেয়ে অসুস্থ হলে কর্মস্থলে থাকা বিচারককে বাড়ির কথা যেন চিন্তা করতে না হয়। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে না হয়।

যখন ওকালতিতে ঢুকি, সত্তরের দশকের শুরুর দিকে, তখন থেকেই আমাদের চিন্তাভাবনায় আছে বিচার বিভাগ সরকারের অধীনে থাকলে কখনো সুষ্ঠু বিচার হবে না। এটা পরিষ্কার কথা। এ বিষয়ে মতামত থাকবে আমার।

আইনের একই বই মামলার পক্ষের লোক, বিপক্ষের লোক এবং বিচারক সবাই পড়েন। পরে একটা রায় দেন বিচারক। তবে ভিন্নমত হয় কেন? এখানেই স্বাধীনতা।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করার পরিকল্পনা: বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার করার জন্য আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কমিশন গঠন করার পর এর কার্যপ্রণালি ঠিক করা হবে। আমাদের তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করব।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার করার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য করণীয় নির্ধারণ প্রধান কাজ। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করবে। একই সঙ্গে নির্বাচন পদ্ধতিকেও পরিশীলিত করতে হবে।

পাশাপাশি নিজেদের আচরণ, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতিরও উন্নতি ঘটাতে হবে।

নির্বাচনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

কার্যপরিধি অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করা হবে: শাহদীন মালিক, বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান

সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি, দিকনির্দেশনা, কার্যপরিধি এখনো দেওয়া হয়নি। সরকার এ নিয়ে আমাকে কিছুই বলেনি। আমার সঙ্গে কয়জন সদস্য থাকবে, কিছুই জানি না। আর এ তো আমার একার নির্বাহী সিদ্ধান্ত না, সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এটা করতে হবে।

আগে সরকার থেকে যোগাযোগ করা হোক, কার্যপরিধি বলা হোক, কয়জন সদস্য থাকবে, এটা না হলে এই অবস্থায় আমার চিন্তার কোনো স্কোপ (সুযোগ) নেই।

আমি একটা বললাম কিন্তু সরকার অন্য জিনিস চায়, তাহলে প্রথম দিন থেকে সরকারের মুখোমুখি হয়ে তো কোনো লাভ নেই। আমি আগে জেনে নিই, তারপর জানাব।