ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে রদবদল

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম
সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে রদবদল
আইএসপিআর

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে রদবদল করা হয়েছে। মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমানকে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক, মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজকে কমান্ড্যান্ট এমআইএসটি এবং মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদকে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১২ আগস্ট) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক পদে মেজর জেনারেল হামিদুল হকের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

অমিয়/

মিল্টনকে ক্রসফায়ারে দিতে চেয়েছিলেন ডিবি হারুন!

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ এএম
মিল্টনকে ক্রসফায়ারে দিতে চেয়েছিলেন ডিবি হারুন!
সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ-ডিবি হেফাজতে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার

সাভারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা আলোচিত মিল্টন সমাদ্দারকে ক্রসফায়ারে মেরে গুম করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ। ২ মাস ১৭ দিন জেল খেটে বের হওয়ার পর সম্প্রতি খবরের কাগজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান মিল্টন।

তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন যখন আমাকে তার (ডিবি হারুন) কাছে নেওয়া হলো তিনি আমার কোনো কথাই শুনতে না চেয়ে উল্টো আমাকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার জন্য অন্য ডিবি অফিসারদের নির্দেশ দেন।’

মিল্টন আরও জানান, শুধু প্রথম দিনই না, দ্বিতীয় দিনও দেখা হওয়ার পর একই কথা বলেন ডিবি হারুন। এরপর মিল্টন সমাদ্দারকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৫০ লাখ টাকা ঘুষও দাবি করেন তিনি। এই ৫০ লাখ টাকা কোথা থেকে আসবে তা-ও হারুন বলে দিয়েছিলেন। মিল্টন বলেন, ‘আমার চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের অ্যাকাউন্টে যে ১ কোটি ৮৫ লাখ ছিল, সেখান থেকে হারুন ৫০ লাখ টাকা দাবি করে বসেন।’

মিল্টন জানান, টাকা দিতে রাজি না হলে ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেন হারুন। কিন্তু তিনি অনাথ এতিমদের টাকা হারুনকে দিতে রাজি হননি। ফলে তার স্ত্রী ও সন্তানদের হয়রানি করা শুরু করেন হারুনের লোকজন। তখন বাধ্য হয়ে নিজের গাড়ি বিক্রি করে সাড়ে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দেন মিল্টন। এই টাকা দেওয়া হয় যেন তার স্ত্রী-সন্তানকে হয়রানি না করা হয় এই শর্তে। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর হারুন পালিয়ে না গেলে তাকে আরও ৫ লাখ টাকা দিতে হতো বলে জানান মিল্টন। 

কিডনি পাচার, লাশ গুম, আশ্রমে থাকা রোগীদের নির্যাতন, জাল সনদ তৈরিসহ আরও নানা অভিযোগ আনা হয়েছিল মিল্টনের নামে। সেগুলো কি মিথ্যা? এমন প্রশ্নের উত্তের তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘কালবেলা তো আমার বিরুদ্ধে তিন-চার মাস অনুসন্ধান করেছে। আমি তাদের প্রশ্ন করতে চাই- তারা কেন সেগুলোর প্রমাণ দেখাচ্ছে না। তারা এটা প্রমাণ করুক। আমি আসলে প্রতিহিংসা ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।’ তিনি অভিযোগ করে আরও জানান, মূলত সাভারের কমলাপুরে তার যে আশ্রম রয়েছে তার পাশেই রিসোর্ট বানাতে চেয়েছিলেন ঢাকার বাসিন্দা শামসুদ্দিন চৌধুরী। এই শামসুদ্দিন চৌধুরী মূলত ঢাকা-১৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান নিখিলের আত্মীয়। নিখিল ডিবি হারুনকে ফোন করে মিল্টনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এরপর শুরু হয় হয়রানি। 

যারা হয়রানি করেছেন, সমাজের কাছে হেয় করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মিল্টন বলেন, ‘বিচার তো আল্লাহই করেছেন, কোথায় সেই হারুন, আর কোথায় সেই নিখিল? প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমি তো ঠিকই আমার জায়গাতেই আছি। তাদের পাপের শাস্তি তারা পাবেন।’ 

সমাজের অসহায়, অবহেলিত মানুষের জন্যই আজীবন কাজ করে যেতে চান মিল্টন। নিজ হাতে তৈরি আশ্রমের দায়িত্বভার ফিরে পেতে চান। আর সরকার যদি আশ্রম ফেরত না দেয়, তাহলে যেন আশ্রমের শিশু-বৃদ্ধ মানুষগুলোকে মিল্টনের কাছে ফেরত দেয়। এমনটাই নতুন সরকারের কাছে দাবি তার। আবারও ভিক্ষা করে রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান তিনি। 

গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাল মৃত্যুসনদ তৈরি, টর্চার সেলে মানুষজনকে নির্যাতন ও মানব পাচারের অভিযোগে তিনটি মামলা করা হয় তখন। তিনটি মামলাতেই তিনি স্থায়ী জামিন পেয়েছেন।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এলেন ৩৫ প্রত্যাশীরা

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এলেন ৩৫ প্রত্যাশীরা
ছবি : খবরের কাগজ

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ দাবিতে গতকাল শনিবার ‘শিক্ষার্থী সমাবেশ’ শেষে সাড়ে ৭ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করে রাখেন ৩৫ প্রত্যাশীরা। দাবি পূরণে ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষে রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত শাহবাগে ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা থাকলেও এবার সেটি থেকে সরে এসেছেন তারা। চলতি সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখের আগে ফের নতুন কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছেন তারা। শিগগিরই এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা।

রবিবার রাতে খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের অন্যতম সংগঠক রাসেল আল মাহমুদ। 

তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি সরকার আমাদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বৈষম্যহীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে আমাদের দাবিটির সুষ্ঠু সমাধান করা হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই রাষ্ট্রপক্ষের প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে আপতত আমাদের যে অবস্থান কর্মসূচি ছিল, সেটি স্থগিত করা হয়েছে।’

নতুন কর্মসূচি প্রসঙ্গে রাসেল বলেন, ‘আমরা ২২ সেপ্টেম্বরের আগে কর্মসূচি পালন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে কী কর্মসূচি পালন করব এবং সেটি কবে করা হবে, শিগগিরই তা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।’

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে: তাজুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে: তাজুল ইসলাম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সামনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলছেন মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ছবি : খবরের কাগজ

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। 

তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর অভিযোগের প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আইনগতভাবেই দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করব।’

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দায়িত্ব গ্রহণের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

পৃথক ঘটনায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত ১৪ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ১১টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সম্ভাব্য প্রধান অপরাধী দেশ থেকে পালিয়েছেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যে আইনি প্রক্রিয়া, সেটা আমরা শুরু করব। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে ২০১৩ সালে। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তার সময়ে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি যেহেতু বাংলাদেশের গণহত্যার প্রধান আসামি হবেন বলে আমরা মনে করছি বা অধিকাংশ মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে, সুতরাং এ প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে তাকে আইনগতভাবেই বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করব।’

অপর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে এভিডেন্স (তথ্য-প্রমাণ) সংগ্রহ করা। অপরাধটা গোটা বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রায় সব জায়গায় সংঘটিত হয়েছে একই সঙ্গে। প্রতিটি জায়গায় একটি কমন ইনস্ট্রাকশন ছিল যে গুলি করে সব মেরে ফেলো। এ অপরাধের যে আলামতগুলো সংগ্রহ করা, সেগুলো কম্পাইল করা- এটা একটা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আসামিরা এখনো সবাই পলাতক এবং প্রধান আসামিদের অনেকেই দেশ ত্যাগ করেছেন বা দেশত্যাগের চেষ্টায় আছেন। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসাটাও চ্যালেঞ্জ।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রথম প্রায়োরিটি হচ্ছে, যেহেতু এ ঘটনাগুলো খুবই তাজা, এই এভিডেন্সগুলো যারা অপরাধী আছেন, যারা আসামি হবেন এই মামলাগুলোতে, তারা কিন্তু এখনো বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় আছেন। অনেকে দায়িত্বেও আছেন। তারা এ আলামতগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করবেন। প্রথম প্রায়োরিটি হচ্ছে, এই হত্যাকাণ্ড-গণহত্যার যে আলামত আছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো সংগ্রহ করে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার হাতে নিয়ে আসা। যাতে ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে এই আলামতগুলো আদালতের সামনে উপস্থাপন করতে পারি। ছাত্র-জনতাসহ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন সব ধরনের আলামত ও তথ্য-প্রমাণ দ্রুততম সময়ে এই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম কিংবা তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দেন।’ 

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রে যখন গণহত্যার পর একটি স্বৈরশাসনের পতন হয়, ইতিহাসের পটপরিবর্তন হয়, তখন নির্যাতিত যেসব মানুষ, তারা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে যান। এই প্রতিশোধপরায়ণতার আগুন নেভানোর সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে উত্তম পন্থা হচ্ছে ন্যায়বিচার প্রদান করা। যারা এই অপকর্ম ও অন্যায়গুলো করেছেন, যদি সঠিক বিচারের মাধ্যমে তাদের সাজা দেওয়া যায়, তাহলে মানুষ প্রতিশোধপ্রবণতা থেকে ফিরে আসে। বাংলাদেশের সমাজ যাতে বিভাজিত হয়ে না যায়, সে জন্য যারা ঠাণ্ডা মাথায় আমাদের নিরস্ত্র সন্তানদের হত্যা করেছেন, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এখন আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা। আমরা চাই এখানে ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও সাহসী বিচারকদের নিয়োগ দেওয়া হোক। প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থায় যোগ্য মানুষেরা আসবেন এবং আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে এখানে সুষ্ঠু বিচার চাইব। এটা এমন একটা বিচার হবে, বিচারের পরে শহিদ পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, বাদীপক্ষসহ আসামিপক্ষও মনে করবে, তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করা হয়েছে। এই আবহ নিশ্চিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করব। আমাদের চেষ্টা থাকবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল সক্রিয় করে এ জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা।’ 

তদন্ত পর্যায়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই অপরাধগুলোর মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে তদন্তকালে আসামিদের গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন হবে। নিশ্চয়ই আমরা এই অপরাধীদের গ্রেপ্তার চাইব। আমাদের প্রথম চেষ্টা থাকবে, সম্ভাব্য অপরাধী বা আসামি যারা আছেন, তারা যাতে আদালতের জুরিসডিকশনের বাইরে চলে যেতে না পারেন, দেশত্যাগ না করতে পারেন, সেটা ঠেকানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা। কে কত বড় পদে ছিলেন, আইন সেটা দেখবে না। আইনের চোখে সবাই সমান। যিনি অপরাধ করেছেন, অপরাধের গুরুত্ব হিসেবে আসামির সঙ্গে ডিল করা হবে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী হোক, আইজিপি হোক বা যত বড় ক্ষমতাধর মন্ত্রীই হোক, তারা যখন অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন, আসামি হিসেবে দাঁড়াবেন, প্রত্যেকেই সমান আচরণ পাবেন। তাদের প্রতি কোনো জুলুমও করা হবে না, তাদের কোনো ছাড়ও দেওয়া হবে না।’

ট্রাইব্যুনালের আইন সংস্কারের প্রয়োজন আছে কি না- এমন প্রশ্নে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাত্রই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আমরা সরকারের সঙ্গে বসে এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেব।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য গত বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদায় চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম। একই প্রজ্ঞাপনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মিজানুল ইসলামকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদায় প্রসিকিউটর, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিমকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদায়, বি এম সুলতান মাহমুদকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদায় এবং আব্দুল্লাহ আল নোমানকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদায় প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে ৩০ মামলা বিচারাধীন। গত ১৪ বছরে ৫৫টি মামলার রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এসব মামলায় ১৪৯ জনকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ৬ জনের। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা ৫ জন এবং একজন বিএনপির নেতা।

 

একপক্ষ যাওয়ার পর আরেকপক্ষ চাঁদাবাজি শুরু করেছে : হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
একপক্ষ যাওয়ার পর আরেকপক্ষ চাঁদাবাজি শুরু করেছে : হাসনাত আবদুল্লাহ
চট্টগ্রাম মহানগরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি : মোহাম্মদ হানিফ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘একপক্ষ চলে যাওয়ার পর আরেকপক্ষ এসে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তাদের সাবধান করে দিতে চাই। দুর্নীতিবাজরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন। তাদেরও সতর্ক করতে চাই। আমাদের আন্দোলন অসাম্যের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, সিন্ডিকেট, অনিয়ম ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে। বিগত ১৬ বছর যারা দুর্নীতি করেছেন, এখন আরেকটি দলের ছত্রছায়ায় এসে যদি দুর্নীতি করার চেষ্টা করেন, ছাত্র-জনতা আপনাদের ছাড়বে না। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে কামার, কুলি, দিনমজুরসহ শিক্ষিত সমাজও ছিল।’

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সবাইকে হাতে হাত রেখে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার হলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

পুলিশদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশদের সহযোগিতা করতে চাই। সব পুলিশ কিন্তু ডিবি হারুন বা বেনজির নয়। সুতরাং পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করব এবং রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।

এ সময় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা দেখেছি, যখন বিপ্লব দরকার তখন আমরা এক হয়ে যাই। যেমন ৪৭-এর দেশভাগ, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে আমরা এক হয়ে গিয়েছিলাম। ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের আগে আমাদের মাঝে কোনো ধরনের বিভেদ, বিভাজন ছিল না। যখন রাষ্ট্র সংস্কারের ও পুনর্গঠনের প্রশ্ন এসেছে, তখনই বিভাজন তৈরি হয়েছে। আমরা শুনি, সবাই বলে, ‘আমরা ক্ষমতায় এলে এটা করব, ওটা করব।’ কিন্তু সবার বলা উচিত, ক্ষমতায় এলেও দেশের স্বার্থে কাজ করব, ক্ষমতায় না এলেও দেশের স্বার্থে কাজ করব।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঠিক করবে আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হবে। রাষ্ট্র সংস্কার কাজে আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা যদি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দর করে সাজাতে পারি, তা হলে তার ধারাবাহিকতায় পুরো বাংলাদেশকে সাজাতে পারব। যদি ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক দল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তা হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিহিত করব।’

মতবিনিময় সভায় অতিদ্রুত উপাচার্য নিয়োগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থিতিশীলতা ফেরানোর দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হয়।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গণবিজ্ঞপ্তি জারির সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ পিএম
গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গণবিজ্ঞপ্তি জারির সিদ্ধান্ত
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তদন্ত কমিশন। ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

এতে বলা হয়েছে, বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার বেলা ১১টায় কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর গুলশানে তদন্ত কমিশনের কার্যালয়ে ওই সভা হয়। কমিশনের সব সদস্য সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। কমিশনের কার্যক্রম সরকারি ছুটি ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত যথারীতি পরিচালিত হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সরকার, পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্যের হাতে জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি গঠন করেছে।

গুমের ঘটনা তদন্তে গত ২৭ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে কমিশন গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ৫ সদস্যের এই কমিশনের প্রধান মনোনীত হয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।