ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রবাসীদের কল্যাণে ৯ দফা দাবি আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৪:১১ পিএম
আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
প্রবাসীদের কল্যাণে ৯ দফা দাবি আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের
ছবি: খবরের কাগজ

প্রবাসীদের মানবাধিকার রক্ষা ও তাদের নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশন। সেই সঙ্গে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমর্থনে আরব আমিরাতে আটক প্রবাসীদের মুক্তির জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। 

সোমবার (১২ আগষ্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘হাসিনা কতৃক গুম, খুন, গণহত্যার প্রতিবাদ’ শীর্ষক আলোচনা সভা থেকে এ দাবি উপস্থাপন করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুজ্জামান। সভার আয়োজন করে 'আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশন। 

৯ দফা দাবি হল- দেশের জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে ২ কোটি প্রবাসীদের পক্ষে সমস্যা ও সমাধানের জন্য সংসদে কথা বলার জন্য প্রতিনিধিত্বকারী সংসদ সদস্য রাখতে হবে। প্রবাসে মারা গেলে মরদেহ বিনা খরচে দ্রুত দেশে আনতে হবে। এয়ারপোর্টে প্রবাসীদের এয়ারপোর্টে ভিআইপি সম্মান দিতে হবে। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে নতুন ভিসা ও বিমানের টিকিটের দাম নির্ধারণ করতে হবে। প্রবাসীর পরিবারের জমি-জমা দখল বন্ধসহ তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রবাসীরা ১২ বৎসর পর অবসরে গেলে তাদের অবসর ভাতা দিতে হবে। সব প্রবাসীকে প্রবাসী স্মার্ট কার্ডের আওতায় আনতে হবে। প্রবাসীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা এবং শর্তহীনভাবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে প্রবাসীদের লোনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এইচ এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০২৪ সালের হত্যা একাত্তরকেও হার মানিয়েছে। আবু সাইদিসহ অসংখ্য-অগণিত মানুষকে হত্যা করেছে। দেশে এখনও বিভিন্ন চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। গত ১৬ বছরে শুরু থেকে অদ্যবধি যারা গুম খুন নির্যাতিত হয়েছে, তাদের দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণা করে সম্মানীভাতা ও নিহত পরিবারকে চাকুরির ব্যবস্থা করতে হবে।’

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় তার পরিবারের হামলা মামলার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরের হেফাজত, বিডিআর, নিরস্ত্র ছাত্র হত্যা ও খেয়াল খুশি মত বিচারের নামে নিরীহ মানুষকে ফাঁসি এবং আয়নাঘর বানিয়ে মানুষকে খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে আইনের মাধ্যমে তার বিচার দাবি জানাই।’

দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন তিনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মো. সেলিম, নজরুল ইসলাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, প্রবাসীবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধে ড. ইউনূসকে ভারতীয় ৪ সংগঠনের চিঠি

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১০ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ এএম
সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধে ড. ইউনূসকে ভারতীয় ৪ সংগঠনের চিঠি

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের অযথা হয়রানি, অযাচিত বিধিনিষেধ ও মামলা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে ভারতের সাংবাদিকদের চারটি সংগঠন।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এই  চিঠিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৫২ জন সাংবাদিককে হত্যা মামলায় জড়ানো, তাদের কয়েকজনকে কারারুদ্ধ করা এবং অনেকের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ দায়ের করা মতপ্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা।

ভারতের যে চারটি সংগঠন যৌথ ভাবে এই চিঠি দিয়েছে এগুলো হলো- ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়া (এফসিসি), প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া (পিসিআই), ইন্ডিয়ান উইমেনস প্রেস কর্পস (আইডব্লিউপিসি) এবং প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (পিএ)।

দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়ার (এফসিসি) পক্ষ থেকে এস ভেংকট নারায়ণের স্বাক্ষরে যৌথ চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৫২ জন জ্যেষ্ঠ সংবাদকর্মীকে হত্যার মামলায় জড়ানো হয়েছে, যাদের কয়েকজনকে ইতোমধ্যে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অযাচিত অভিযোগ করা হয়েছে, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন।

চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলা হয়, আমরা আশা করি আপনিও আমাদের সঙ্গে একমত হবেন যে, একটি মুক্ত সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের গর্ব হওয়া উচিত। ভিন্নমত দূর করা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমন করা শুধু আপনার প্রশাসনের নয়, একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করে।

যারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার শত্রু তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার এবং সাংবাদিকদের হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।

অনুরোধ করা হয়, বিশ্বব্যাপী সম্মানিত একজন নোবেল শান্তি বিজয়ী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এসব বিষয়ে (মামলা) হস্তক্ষেপ করবেন। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন, যাতে তারা ভয় ও পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।

বিশ্বব্যাপী সম্মানিত শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ড. ইউনূসকে অনুরোধ করে চিঠিতে বলা হয়, ব্যক্তিগতভাবে এসব বিষয়ে (মামলা) হস্তক্ষেপ করুন এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন যাতে তারা ভয় ও পক্ষপাত ছাড়াই তাদের কাজ করতে পারে।

চিঠিতে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিতে অনুরোধ করা হয়।

অমিয়/

আজ আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল, তিন বোঝাপড়া চায় ঢাকা

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ এএম
আজ আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল, তিন বোঝাপড়া চায় ঢাকা
ব্রেন্ট নেইম্যান ও ডোনাল্ড লু

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদল আসছে আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর)। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল আজ নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় আসছে। এ প্রতিনিধিদল আগামীকাল রবিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। 

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেবে। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে সহায়তা, সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ভারতীয় মনোভাব যাতে সহায়তাপূর্ণ থাকে তেমন প্রস্তাব। 

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই সরকারের সঙ্গে কাজ করার কথা জানায়। তারপর জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার কথা জানায়। ইতোমধ্যে পশ্চিমা অনেক দেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে ড. ইউনূস পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সহায়তা চেয়েছেন। 

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর সঙ্গে সে দেশের বড় একটি টিম আসবে। ডোনাল্ড লু কম সময় এখানে থাকবেন। কিন্তু ওই টিম অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও বৈঠক করবে। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েই কথা হবে। 

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সেন্ট মার্টিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান আগেই নিশ্চিত করেছে। তাদের পক্ষ থেকে এমন কিছু বলা হয়নি। 

পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে সহায়তা

একটি হিসাব বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে দেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর বিপরীতে বিদেশি ঋণ রয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। সরকার এখন ঋণ পরিশোধ করতে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে চায়। ইতোমধ্যে সরকার কূটনৈতিক চ্যানেলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথাও বলেছে। 

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, এবার মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ডোনাল্ড লু নয়, ট্রেজারি বিভাগের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান থাকছেন। এ কারণে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত পেতে সহায়তা-সংক্রান্ত আলোচনা গতি পাবে। 

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতিবাজদের পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা ফেরত আনতে সহযোগিতা চেয়েছেন। রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সও ছিলেন। 

সরকারের প্রতি অব্যাহত মার্কিন সমর্থন

সংশ্লিষ্টরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র যদিও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সমর্থন জানিয়ে আসছে তার পরও সরকার এই সমর্থন অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা চাইবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা মিত্ররাও যেন সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে, সেই নিশ্চয়তা চাইতে পারে ঢাকা। 

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ওপর পুরো পশ্চিমা ব্লক, এমনকি জাতিসংঘের সমর্থনও নির্ভর করে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের বোঝাপড়াটা গুরুত্বপূর্ণ। 

ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়ে সরকারের প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন। জাতিসংঘ তদন্ত দল পাঠিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুলির ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। 

ঢাকার প্রতি নয়াদিল্লির সহায়তাপূর্ণ মনোভাব তৈরিতে ভূমিকা 

ঢাকার প্রতি নয়াদিল্লির নমনীয় মনোভাব তৈরিতে ভূমিকা রাখতে ওয়াশিংটনের কাছে সহায়তা চাওয়া হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। ভারত শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখায় পতন মেনে নিতে পারেনি। তাই নানা কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে দেশটির। 

সম্প্রতি ‘পানি আগ্রাসন’ ও ‘সীমান্ত হত্যা’ নিয়ে সম্পর্ক যথেষ্ট নাজুক দুই দেশের মধ্যে। এ অবস্থায় নয়াদিল্লির মনোভাব যাতে ঢাকার প্রতি নমনীয় হয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। 

আজ আসছে প্রতিনিধিদল 

ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল আজ আসছে। তাদের সঙ্গে থাকছেন ডোনাল্ড লু। তবে তিনি সরাসরি ওয়াশিংটন থেকে আসবেন না।

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। এটা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয় তার একটা বড় প্রতিফলন। আমাদের সঙ্গে তাদের আলোচনাটা বহুমাত্রিক হবে। এটা শুধু একটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সেভাবেই আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

আলোচ্যসূচিতে কোন বিষয়ে গুরুত্ব পাবে- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলব এবং তার মধ্যে বহুমাত্রিকতা হবে। কিন্তু আমি আলোচনার আগে বা প্রতিনিধিদল বসার আগে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচির বিষয় প্রকাশ করে আলোচনাকে প্রভাবিত করতে চাই না।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ কাল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামীকাল রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, আজ শনিবার মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার পর কাল বেলা ১১টার দিকে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

গত ৮ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করছে। সফরকালে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তিনি এখন নয়াদিল্লি সফর করছেন।

প্রতিনিধিদলে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন।

সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধসহ ৮ দফা দাবিতে শাহবাগে অবরোধ

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ এএম
সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধসহ ৮ দফা দাবিতে শাহবাগে অবরোধ
সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচারসহ ৮ দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ছবি : খবরের কাগজ

দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচারসহ আট দফা দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। একই দাবিতে আগামী শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিলের ডাক দিয়েছে সব সনাতনী সংগঠন ও সনাতনীদের ঐক্য মোর্চা সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলায় একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে তারা।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সনাতনী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

এদিন সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার এসআই সাহানুর খবরের কাগজকে জানান, বিকেল সোয়া ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তারা শাহবাগ অবরোধ করেন। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে অবরোধকারীরা স্থান ত্যাগ করলে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক প্রদীপ কান্তি দে বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে আমাদের আট দফা দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে উত্থাপন করি। সেই সময় বলা হয় আমাদের দাবি যৌক্তিক। অবিলম্বে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এক মাস পেরিয়েছে এখন পর্যন্ত দাবি বাস্তবায়ন তো দূরে থাক, এখনো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। ১৮ কোটি মানুষের এ দেশে ২ কোটি হিন্দুর কেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না। আমরা এ দেশের নাগরিক, অবিলম্বে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, আমরা এ দেশের ভূমিপুত্র।’

সনাতন সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সরকার পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন এবং দুর্গাপূজায় ছুটি পাঁচ দিন করা।

আগামী শুক্রবার কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রদীপ কান্তি দে বলেন, ‘আমরা শাহবাগ অবরোধ করতে চাই না। আমরা নিরাপত্তা চাই। আগামী শুক্রবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে একই দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মশাল মিছিল পালন করা হবে। সারা দেশে একযোগে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের এক ব্যানারে ৬৪ জেলায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। আশা করি, সরকার এর আগেই আমাদের দাবি পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে নাম বাদ

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে নাম বাদ
পুলিশ সদর দপ্তর

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাকাণ্ডসহ অন্যান্য ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর। একই সঙ্গে সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-কনফিডেনশিয়াল) মো. কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কামরুল আহসান জানান, গত মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ চিঠি পুলিশের সব ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ সদর দপ্তরের ওই চিঠিতে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার কার্যবিবরণীর বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্ত ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নামও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

এসব বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করে প্রতিবেদন আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সারা দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে বহু মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে আসামি করা ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেও অসংখ্য আসামি করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে এসব মামলায়।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড : নির্দোষদের মুক্তি ও বিডিআর নাম প্রতিস্থাপনের দাবি

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
পিলখানা হত্যাকাণ্ড : নির্দোষদের মুক্তি ও বিডিআর নাম প্রতিস্থাপনের দাবি
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার। ছবি : মাসুদ মিলন

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনরায় তদন্ত ও বিচার করে খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ঘটনায় ফ্যাসিস্ট সরকারের দ্বারা শহিদ সেনা অফিসার, শহিদ বিডিআর অফিসার ও সদস্যদের গেজেট আকারে শহিদ ঘোষণা, জাতীয়ভাবে শহিদ দিবস পালন ও স্কুল, কলেজের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে শহিদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মকে জানানোসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ঐক্য’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সেনা অফিসার ও বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ৯ দফা দাবি আদায়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

বিডিআর সদস্য ও পরিবারের অন্য দাবিগুলো হলো- সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী ও বিচার বিভাগের সমন্বয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং শহিদ সেনা অফিসার ও ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর পরিবারের প্রতিনিধি তদন্ত কমিটিতে রাখতে হবে; নিরীহ বিডিআর সদস্যদের রিমান্ডে নির্যাতনের ফলে মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করার জন্য সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী ও বিচার বিভাগের সমন্বয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত যেকোনো দল, গোষ্ঠী ও ব্যক্তিকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে তদন্ত রিপোর্ট জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে; নির্দোষ প্রতিটি বিডিআর সদস্যকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে; পিলখানার ঘটনায় যেসব সেনা কর্মকর্তা, বিডিআর কর্মকর্তা ও বিডিআর জওয়ানদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে; বিডিআর হত্যাকাণ্ডের কারণে সামরিক/বেসামরিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করতে হবে; বর্তমান বিজিবিকে কোনো প্রকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না এবং বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) নাম প্রতিস্থাপন করতে হবে।