ঢাকা ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

বিজিবি না, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারকেও দানব বানানো হয়েছে

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৪:০৩ পিএম
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪৫ পিএম
বিজিবি না, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারকেও দানব বানানো হয়েছে
ছবি :খবরের কাগজ

সাম্প্রতিক আন্দোলনে আহতদের দেখতে পিলখানায় বর্ডার গার্ড হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে এ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন তিনি।

পরিদর্শনের সময় এম সাখাওয়াত হোসেন আন্দোলনে আহত বিজিবি সদস্য ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

পাশাপাশি তিনি আহত বিজিবি সদস্য ও শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিজিবি মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় তিনি বিজিবির মতো একটা ফোর্সকে সীমান্তে পিঠ দেখাতে বলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, সীমান্তে আমাদের লোক মারে, আর বিজিবিকে ফ্ল্যাগ মিটিং করতে বাধ্য করা হয়। আমাদের বর্ডারের ভেতরে ঢুকে মারে আর ফ্ল্যাগ মিটিং করে বলা হতো সব ঠিক হয়ে গেছে। আমি বিজিবিকে বলেছি পিঠ দেখাবেন না। এনাফ ইজ এনাফ, আর নয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিজিবি না, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারকেও দানব বানানো হয়েছে। আমি যতদিন আছি ততদিন জাস্টিস রক্ষা করে যাব।

তিনি বলেন, হয়ত অনেকে ভাবতে পারেন আমি শুধু আপনাদের সঙ্গে প্যাপট্যাপ করি, তা না। আমার হাতে যদি পড়ে শাস্তি হবেই। আমরা ইতোমধ্যে কিছু কিছু অ্যাকশনে গিয়েছি। যারা পুলিশকে দানব বানিয়েছে। ফ্যাসিস্ট পার্টির ফ্যাসিস্ট প্রোপাগান্ডায় এসব ফোর্সকে নষ্ট করা হয়েছে। তারাই বিজিবিকে সীমান্তে পিঠ দেখাতে বলেছে। অথচ বিজিবির সীমান্ত রক্ষা করার কথা। নো মোর ,নো মোর। ইনশাল্লাহ আর এটি কখনো হতে দেওয়া হবে না।

তালিকাভুক্ত ফ্যাসিস্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি প্রসেস অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির কাছে ইতোমধ্যে রিকমেন্ডসহ ফাইল চলে গেছে। তারা উন্মুক্ত থাকবে কি থাকবে না; সেটা নিয়ে আলোচনা হবে।

সাম্প্রতিক ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্য নিহত (এদের মধ্যে দুইজন র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন) এবং ১৩০ সদস্য আহত হয়েছেন। 

এ ছাড়া আন্দোলনে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। 

এদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে এবং আহত আরও তিন শিক্ষার্থী বর্ডার গার্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আল-আমিন/পপি/অমিয়/

বিচারব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে: প্রধান বিচারপতি

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩১ পিএম
বিচারব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ

কার্যকর নাগরিকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে দেশের বিচারব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক আইনগত সংস্কারগুলো কেবল আধুনিকায়নের জন্য নয়, বরং ন্যায়বিচারকে সহজপ্রাপ্য করে তোলাই এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য।'

সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীতে ব্র্যাক সেন্টারে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা (সেলপ) কর্মসূচির উদ্যোগে ‘যথাসময়ে বিচার নিশ্চিত করতে পারিবারিক আদালতের পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

লিগ্যাল এইড আইনের সংশোধনকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এর ফলে এখন মামলার আগে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা চালু করা হয়েছে। এটি বিরোধপূর্ণ বিচারপদ্ধতি থেকে সমঝোতার পথে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।'

তিনি বলেন, 'বিচার প্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগত অদক্ষতা দূর করতে দেওয়ানি কার্যবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনের মাধ্যমে মামলা পরিচালনা কার্যক্রমের স্তর কমানো হয়েছে, যা অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ও জটিলতা কমাবে।'

প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, 'প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ছাড়া কোনো বিচারব্যবস্থা সময়সূচি, জনবল বা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে না। এ কাঠামোগত স্বাধীনতা বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ সংস্কার এবং বৃহত্তর শাসনব্যবস্থার সংস্কার রক্ষায় অপরিহার্য।'

আদালতে প্রযুক্তির ব্যবহারের গুরুত্বারোপ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'ডিজিটাল কার্যতালিকা, মুলতবি পর্যবেক্ষণ এবং এসএমএস-এর মাধ্যমে সমন জারির পাইলট প্রকল্পে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে এবং এটি এখন পারিবারিক আদালতেও চালু হবে। ভবিষ্যতে জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ডিজিটাল তলব এবং একটি বিচারিক সহায়তা ডেস্ক চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।'

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, 'পারিবারিক আদালতে ন্যায়বিচার মানে জয় বা পরাজয় নয়; এটি মূলত একটি নিরাময় প্রক্রিয়া। আর এই ব্যবস্থার অংশ হিসেবে আমাদের এটিকে আরও সহজপ্রাপ্য, সহানুভূতিশীল ও দ্রুততর করতে হবে।'

তিনি এই কর্মশালাকে একটি ন্যায়সঙ্গত, দক্ষ এবং জনগণকেন্দ্রিক পারিবারিক বিচারব্যবস্থা গঠনে সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ এবং সেলপ ও জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি (জিজেডি) কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক শাশ্বতী বিপ্লব।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোনালী রানী উপাধ্যায় এবং সাতক্ষীরার সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট জাজ মো. তরিকুল ইসলাম।

মাহমুদুল/মেহেদী/

সফলভাবে হজ কার্যক্রম শেষ করল বিমান বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম
সফলভাবে হজ কার্যক্রম শেষ করল বিমান বাংলাদেশ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস

২০২৫ সালের হজ কার্যক্রম সফলভাবে শেষ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। 

সোমবার (১৪ জুলাই) বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এবিএম রওশন কবীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়, গত শুক্রবার (১১ জুলাই) এই বছরের হজ অপারেশনের সফল সমাপ্তি ঘোষণা করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সর্বশেষ ফিরতি ফ্লাইটের চট্টগ্রাম আগমন এবং হাজিদের জমজম পানি বিতরণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এ বছরের হজ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হজযাত্রীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে সফলভাবে পরিবহন করতে সরকার নির্ধারিত এয়ারলাইনস হিসেবে বিমান বাংলাদেশ, সৌদিয়া এবং ফ্লাইনাস সম্মিলিতভাবে অংশ নেয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অতিরিক্ত হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পূর্ণ হজ অপারেশনে নিয়োজিত ছিলেন। হজযাত্রীদের পরিবহনের পাশাপাশি তাদের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ। এই বিশাল কর্মকাণ্ড সফলভাবে সম্পন্ন করে দক্ষতা, পেশাদারত্ব ও দায়বদ্ধতার প্রমাণ দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ। এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে মর্মে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিথি/সালমান/

ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৩০

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৩০
ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩০ জন। 

সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত দুইজনই পুরুষ। তাদের একজনের বয়স ৫৪ বছর। আরেকজনের বয়স ৬৫ বছর। একজন ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে এবং একজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৮৬, চট্টগ্রামে ৫৪, ঢাকা বিভাগে ৪৮, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪৪, খুলনায় ২৭, ময়মনসিংহে ৩, রাজশাহীতে ৩৮ ও রংপুরে ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৮৫ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৯৬৯ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। 

এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫ হাজার ২১০ জন। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে ৩, এপ্রিলে ৭, মে মাসে ৩, জুনে ১৯ জন এবং জুলাইয়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

এর আগে, ২০২৪ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫৭৫ জন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

সাওন/সালমান/

ফরিদপুরে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৫

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৪ পিএম
ফরিদপুরে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৫
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর সেনা ক্যাম্প এবং পুলিশের সমন্বয়ে অভিযানে দেশের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (১৩ জুলাই)  রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই সমন্বিত অভিযান পরিচালিত হয়। প্রায় সাত ঘণ্টাব্যাপী পরিচালিত এ অভিযান সকাল সাড়ে আটটায় মধুখালীর ডোমাইন বাজার এলাকায় সফলভাবে সমাপ্ত হয়।

সেনা ক্যাম্প প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ফরিদপুর সেনাক্যাম্পে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে যেখানে ভুক্তভোগীরা বিকাশ, নগদ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ভুয়া কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সেজে প্রতারিত হওয়ার কথা জানান। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, প্রতারক চক্র গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট, পিন ও ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অবৈধভাবে অর্থ সরিয়ে নিচ্ছিল। অভিযোগগুলো বিশদভাবে পর্যালোচনা করে ও কমন মোবাইল নম্বরগুলো গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ট্রেস করে দেখা যায় যে, প্রতারিত অর্থের উৎস দেশের বিভিন্ন জেলা হলেও এর চূড়ান্ত গন্তব্য মূলত ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ডোমাইন ইউনিয়নের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কেন্দ্রীভূত।

১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে তিন দিনব্যাপী এই চক্রের প্রযুক্তিগত ব্যবহার, ভৌগোলিক অবস্থান এবং আর্থিক লেনদেন পদ্ধতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে বেরিয়ে আসে যে, প্রতারিত অর্থের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশে সক্রিয় শতাধিক অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটে প্রবেশ করানো হতো। এই চক্র বিশেষ সফটওয়্যার ও স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে 'শতভাগ জয়' নিশ্চিত করে জুয়ার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করত। এর পর ওই প্ল্যাটফর্ম থেকে সংগৃহীত অর্থের একটি বড় অংশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দ্বারা তৈরি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাচার করা হতো। অবশিষ্ট অর্থ চক্রের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে ভাগ করে নিত।

পরে যৌথ বাহিনী পূর্বনির্ধারিত সন্দেহভাজনদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারণা চক্রের মূলহোতা ও উক্ত এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মো. কামরুল মিয়া (৪০) ও তার চার সহযোগী – অমরেশ বিশ্বাস (৩০), সোহান মালিক (২৪), হাফিজুর রহমান (৪২) ও শেখ শাকিল আহমেদকে (২৬) আটক করে।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪২টি গ্রামীণফোন সিমকার্ড এবং ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বীকার করেন যে, তারা দেশব্যাপী বিকাশের ভুয়া কল সেন্টার সেজে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতারণা করতেন এবং পরবর্তীতে সেই প্রতারণা থেকে প্রাপ্ত অর্থের শতভাগ তারা অনলাইন জুয়ার পিছনে খরচ করতেন। এর পর সেই অবৈধ অর্থের ৫০ শতাংশ বিদেশে পাচার ও বাকি ৫০ শতাংশ নিজেরা ভাগাভাগি করে নিতেন। নতুন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু রাখার জন্য তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় অবৈধ সিম সরবরাহকারী গ্রুপ থেকে বিকাশ ও নগদ পূর্ব-নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এই প্রতারণা চক্রের বিস্তৃতি কেবল ফরিদপুরেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ দেশের প্রায় প্রতিটি বিভাগেই তাদের অপতৎপরতা বিদ্যমান ছিল। এটি দেশের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ডিজিটাল প্রতারণার ভয়ংকর দৃষ্টান্ত।

আটকদের মধুখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, সাইবার অপরাধ দমন আইন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, এ অভিযানের মাধ্যমে একটি সক্রিয় ও সুসংগঠিত ডিজিটাল প্রতারণা ও অর্থ পাচার চক্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

সেনা সূত্র জানায়, দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, জনগণের ডিজিটাল লেনদেন এবং সমাজের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনী অবৈধ অর্থপাচার, মাদক, প্রতারণা ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। এ ধরনের অপরাধ দমনে নাগরিকদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সঞ্জিব/মেহেদী/

মব-চাঁদাবাজি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম
মব-চাঁদাবাজি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: খবরের কাগজ

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মব ভায়োলেন্স ও চাঁদাবাজি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একইসঙ্গে মাদককারবারিদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে।

সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু বাহক নয়, মাদকের সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের ধরতে হবে। মাদক ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনে। তাই মাদক নির্মূলে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতার পরিবর্তন করে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। এটাই সবার পবিত্র দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ সচেতন হলে মব ভায়োলেন্স হবে না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিয়াম ফাউন্ডেশন আঞ্চলিক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, জেলা প্রশাসন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মুহিববুল্লাহ/সালমান/