ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ
মহিউদ্দিন আহমেদ

পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ। পদত্যাগের কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন শারীরিক অসুস্থতা। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি।

পদত্যাগপত্রে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ লিখেছেন, ‘বর্তমানে আমি অসুস্থ এবং উক্ত দায়িত্ব পালনে অপারগ। তাই আমি স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’

এর আগে বৈষম্য ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিটিআরসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির সহযোগী প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক ও একান্ত সচিব মো. আমজাদ হোসেন নিপু, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের উপপরিচালক মাহদী আহমদেরও বিচার দাবি করেন তারা।

রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ এএম
রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব

রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের প্রত্যয় ব্যক্ত করে গত মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভবিষ্যতে সমাজের সব স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্র পরিচালনার উপায় খুঁজতে সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কারের প্রস্তাবনা তৈরির জন্য পৃথক ৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।

এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে খবরের কাগজ। এর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা আগামী সপ্তাহের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন এবং দেশের সার্বিক সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা প্রবর্তন, নির্বাচনব্যবস্থা প্রণয়ন, সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রকাঠামো নির্মাণে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাবনা দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।

উন্নত দেশের মতো পুলিশের প্রস্তাবই দেব: সফর রাজ হোসেন, সাবেক সচিব

আমি তো এখনো কোনো চিঠি পাইনি। এখনো কমিটির কার্যপ্রণালি বা টার্মস অব রেফারেন্স- কমিটিকে কী করতে হবে, কমিটিতে কারা থাকবেন, একচুয়ালি সরকার কী চায় এবং কমিটির অন্য সদস্য কারা হবেন সে সম্পর্কে এখনো অফিশিয়ালি কোনো কাগজপত্র পাইনি। আমরা ভাবব যে, আমাদের পুলিশ উন্নত দেশের মতো হবে। সে জন্যই আমরা হয়তো স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব করব।

তবে রাজনৈতিকভাবে পুলিশকে ব্যবহার ঠেকানোর বিষয়টি হয়তো আমরা পুরোটা প্রস্তাবনায় আনতে পারব না। কারণ পুলিশের ওপর  সরকারের রাজনৈতিক যে নিয়ন্ত্রণ, সেটা বোধহয় আমার টার্মস অব রেফারেন্সের মধ্যে আসবে না। সেটা হয়তো সংবিধান নিয়ে যারা কাজ করছেন (সংবিধান সংস্কার কমিশন) তারা ঠিক করতে পারেন যে, কীভাবে সরকারের সেন্ট্রালাইজ ক্ষমতাকে ডিসেন্ট্রালাইজ করা যায়।

বর্তমানে যে সংবিধান আছে, এ সংবিধান অনুযায়ী যা হবে সে রকমই চলবে। সংবিধান সংস্কার করলে তখন সে ব্যাপারটা আলাদা কিছু হবে। নির্বাহী ক্ষমতা কীভাবে ব্যবহার করা হবে সেটা তো সংবিধান বা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। আমরা হয়তো পুলিশের অর্গানোগ্রাম নিয়ে কাজ করব। আর হয়তো পুলিশ রিলেটেড যেসব আইন আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করব।

আমার টিমে আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে নেওয়া হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে দেখা করব। আমরা হয়তো আগামী ১ অক্টোবর কমিশনের প্রথম বৈঠকে বসব। সেই বৈঠকে কর্মপরিকল্পনা ও একটি রূপরেখা তৈরি করব।

আনুষ্ঠানিক চিঠি পেলে কাজের চৌহদ্দি বোঝা যাবে: শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি

আমার কাজটা কী? তা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানি না। খবরের কাগজ এবং টেলিভিশনে দেখেছি মাত্র। আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পেলে এবং কমিশনে আর যারা থাকছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে করণীয় ঠিক করা যাবে। তা ছাড়া আনুষ্ঠানিক চিঠি থেকেও হয়তো কাজের চৌহদ্দি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে।

দায়িত্ব পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বসেও সুপারিশমালা প্রস্তুতের কাজ এগিয়ে নেওয়া যাবে। আমি বিচার বিভাগে ছিলাম। আইনজীবী ছিলাম। পরে বিচারক হয়েছি। হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলাম, সর্বশেষ আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলাম। আমার ওপর যদি দায়িত্ব এসে থাকে, তাহলে নিম্ন আদালতের ব্যাপারে আরও খোঁজখবর নেব। কারণ এখন নিম্ন আদালতের সব খবর বলতে পারব না। সব মিলে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সুপারিশ করা যাবে।

গত দেড় দশকে বিচার বিভাগের পরিস্থিতি এখন এন্ডলেস গেমের মতো হয়ে গেছে। যে যা খুশি তা করেছে। আমি ‘সঠিক’ শব্দটা ব্যবহার করতে চাই। সঠিক বিচার কি হয়েছে? হয়নি। কারণ যিনি বিচার করেছেন, তিনি চাপে ছিলেন। যিনি বিচার করাচ্ছেন, তিনি নিজের মতো করিয়েছেন। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তো চাকরি করেছে, খেয়েছে, ঘুমিয়েছে, পেট ভরেছে! ওই সময়ের বিচারের কথা না বলাই ভালো।

বিচারকরা যেন শিরদাঁড়া সোজা করে বিচার করতে পারেন সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করব। বিচারকদের কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়, বিচারকদের ছেলেমেয়ে অসুস্থ হলে কর্মস্থলে থাকা বিচারককে বাড়ির কথা যেন চিন্তা করতে না হয়। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে না হয়।

যখন ওকালতিতে ঢুকি, সত্তরের দশকের শুরুর দিকে, তখন থেকেই আমাদের চিন্তাভাবনায় আছে বিচার বিভাগ সরকারের অধীনে থাকলে কখনো সুষ্ঠু বিচার হবে না। এটা পরিষ্কার কথা। এ বিষয়ে মতামত থাকবে আমার।

আইনের একই বই মামলার পক্ষের লোক, বিপক্ষের লোক এবং বিচারক সবাই পড়েন। পরে একটা রায় দেন বিচারক। তবে ভিন্নমত হয় কেন? এখানেই স্বাধীনতা।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করার পরিকল্পনা: বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার করার জন্য আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কমিশন গঠন করার পর এর কার্যপ্রণালি ঠিক করা হবে। আমাদের তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করব।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার করার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য করণীয় নির্ধারণ প্রধান কাজ। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করবে। একই সঙ্গে নির্বাচন পদ্ধতিকেও পরিশীলিত করতে হবে।

পাশাপাশি নিজেদের আচরণ, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতিরও উন্নতি ঘটাতে হবে।

নির্বাচনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

কার্যপরিধি অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করা হবে: শাহদীন মালিক, বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান

সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি, দিকনির্দেশনা, কার্যপরিধি এখনো দেওয়া হয়নি। সরকার এ নিয়ে আমাকে কিছুই বলেনি। আমার সঙ্গে কয়জন সদস্য থাকবে, কিছুই জানি না। আর এ তো আমার একার নির্বাহী সিদ্ধান্ত না, সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এটা করতে হবে।

আগে সরকার থেকে যোগাযোগ করা হোক, কার্যপরিধি বলা হোক, কয়জন সদস্য থাকবে, এটা না হলে এই অবস্থায় আমার চিন্তার কোনো স্কোপ (সুযোগ) নেই।

আমি একটা বললাম কিন্তু সরকার অন্য জিনিস চায়, তাহলে প্রথম দিন থেকে সরকারের মুখোমুখি হয়ে তো কোনো লাভ নেই। আমি আগে জেনে নিই, তারপর জানাব।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ঢাকায়

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২২ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ঢাকায়
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারির ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানকে স্বাগত জানাচ্ছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তরাষ্ট্র উইং-এর পরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারির ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান তিন দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। 

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি ঢাকা পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তরাষ্ট্র উইং-এর পরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম।

ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের অন্যদের মধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু আজ দুপুরে ঢাকায় আসবেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম সফর। 

এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আগামীকাল রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

পরে প্রতিনিধিদলটি পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সভায় অংশ নেবেন। 

একইদিন বিকেলে প্রতিনিধিদলের প্রধান নেইম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

অমিয়/

গৌরীপুর আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শনে সেনাপ্রধান

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
গৌরীপুর আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শনে সেনাপ্রধান
গৌরীপুর আর্মি ক্যাম্পে কর্তব্যরত সেনাসদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ৪০৩ ব্যাটেল গ্রুপ কর্তৃক স্থাপিত আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পরিদর্শনের সময় তিনি গৌরীপুর আর্মি ক্যাম্পে কর্তব্যরত সেনাসদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ সময় সেনাপ্রধানকে ময়মনসিংহের ভালুকা, ত্রিশাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত করা হয়। পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম, আসন্ন দূর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৮৪১টি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, থানাসমূহে  পুলিশ সদস্যদের বর্তমান পরিস্থিতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বেসামরিক প্রশাসন ও বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এ সময় সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার ময়মনসিংহ, স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধে ড. ইউনূসকে ভারতীয় ৪ সংগঠনের চিঠি

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১০ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ এএম
সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধে ড. ইউনূসকে ভারতীয় ৪ সংগঠনের চিঠি

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের অযথা হয়রানি, অযাচিত বিধিনিষেধ ও মামলা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে ভারতের সাংবাদিকদের চারটি সংগঠন।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এই  চিঠিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৫২ জন সাংবাদিককে হত্যা মামলায় জড়ানো, তাদের কয়েকজনকে কারারুদ্ধ করা এবং অনেকের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ দায়ের করা মতপ্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা।

ভারতের যে চারটি সংগঠন যৌথ ভাবে এই চিঠি দিয়েছে এগুলো হলো- ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়া (এফসিসি), প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া (পিসিআই), ইন্ডিয়ান উইমেনস প্রেস কর্পস (আইডব্লিউপিসি) এবং প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (পিএ)।

দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়ার (এফসিসি) পক্ষ থেকে এস ভেংকট নারায়ণের স্বাক্ষরে যৌথ চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৫২ জন জ্যেষ্ঠ সংবাদকর্মীকে হত্যার মামলায় জড়ানো হয়েছে, যাদের কয়েকজনকে ইতোমধ্যে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অযাচিত অভিযোগ করা হয়েছে, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন।

চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলা হয়, আমরা আশা করি আপনিও আমাদের সঙ্গে একমত হবেন যে, একটি মুক্ত সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের গর্ব হওয়া উচিত। ভিন্নমত দূর করা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমন করা শুধু আপনার প্রশাসনের নয়, একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করে।

যারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার শত্রু তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার এবং সাংবাদিকদের হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।

অনুরোধ করা হয়, বিশ্বব্যাপী সম্মানিত একজন নোবেল শান্তি বিজয়ী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এসব বিষয়ে (মামলা) হস্তক্ষেপ করবেন। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন, যাতে তারা ভয় ও পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।

বিশ্বব্যাপী সম্মানিত শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ড. ইউনূসকে অনুরোধ করে চিঠিতে বলা হয়, ব্যক্তিগতভাবে এসব বিষয়ে (মামলা) হস্তক্ষেপ করুন এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন যাতে তারা ভয় ও পক্ষপাত ছাড়াই তাদের কাজ করতে পারে।

চিঠিতে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিতে অনুরোধ করা হয়।

অমিয়/

আজ আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল, তিন বোঝাপড়া চায় ঢাকা

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ এএম
আজ আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল, তিন বোঝাপড়া চায় ঢাকা
ব্রেন্ট নেইম্যান ও ডোনাল্ড লু

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদল আসছে আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর)। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল আজ নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় আসছে। এ প্রতিনিধিদল আগামীকাল রবিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। 

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেবে। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে সহায়তা, সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ভারতীয় মনোভাব যাতে সহায়তাপূর্ণ থাকে তেমন প্রস্তাব। 

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই সরকারের সঙ্গে কাজ করার কথা জানায়। তারপর জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার কথা জানায়। ইতোমধ্যে পশ্চিমা অনেক দেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে ড. ইউনূস পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সহায়তা চেয়েছেন। 

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর সঙ্গে সে দেশের বড় একটি টিম আসবে। ডোনাল্ড লু কম সময় এখানে থাকবেন। কিন্তু ওই টিম অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও বৈঠক করবে। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েই কথা হবে। 

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সেন্ট মার্টিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান আগেই নিশ্চিত করেছে। তাদের পক্ষ থেকে এমন কিছু বলা হয়নি। 

পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে সহায়তা

একটি হিসাব বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে দেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর বিপরীতে বিদেশি ঋণ রয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। সরকার এখন ঋণ পরিশোধ করতে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে চায়। ইতোমধ্যে সরকার কূটনৈতিক চ্যানেলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথাও বলেছে। 

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, এবার মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ডোনাল্ড লু নয়, ট্রেজারি বিভাগের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান থাকছেন। এ কারণে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত পেতে সহায়তা-সংক্রান্ত আলোচনা গতি পাবে। 

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতিবাজদের পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা ফেরত আনতে সহযোগিতা চেয়েছেন। রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সও ছিলেন। 

সরকারের প্রতি অব্যাহত মার্কিন সমর্থন

সংশ্লিষ্টরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র যদিও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সমর্থন জানিয়ে আসছে তার পরও সরকার এই সমর্থন অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা চাইবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা মিত্ররাও যেন সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে, সেই নিশ্চয়তা চাইতে পারে ঢাকা। 

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ওপর পুরো পশ্চিমা ব্লক, এমনকি জাতিসংঘের সমর্থনও নির্ভর করে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের বোঝাপড়াটা গুরুত্বপূর্ণ। 

ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়ে সরকারের প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন। জাতিসংঘ তদন্ত দল পাঠিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুলির ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। 

ঢাকার প্রতি নয়াদিল্লির সহায়তাপূর্ণ মনোভাব তৈরিতে ভূমিকা 

ঢাকার প্রতি নয়াদিল্লির নমনীয় মনোভাব তৈরিতে ভূমিকা রাখতে ওয়াশিংটনের কাছে সহায়তা চাওয়া হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। ভারত শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখায় পতন মেনে নিতে পারেনি। তাই নানা কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে দেশটির। 

সম্প্রতি ‘পানি আগ্রাসন’ ও ‘সীমান্ত হত্যা’ নিয়ে সম্পর্ক যথেষ্ট নাজুক দুই দেশের মধ্যে। এ অবস্থায় নয়াদিল্লির মনোভাব যাতে ঢাকার প্রতি নমনীয় হয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। 

আজ আসছে প্রতিনিধিদল 

ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল আজ আসছে। তাদের সঙ্গে থাকছেন ডোনাল্ড লু। তবে তিনি সরাসরি ওয়াশিংটন থেকে আসবেন না।

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। এটা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয় তার একটা বড় প্রতিফলন। আমাদের সঙ্গে তাদের আলোচনাটা বহুমাত্রিক হবে। এটা শুধু একটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সেভাবেই আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

আলোচ্যসূচিতে কোন বিষয়ে গুরুত্ব পাবে- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলব এবং তার মধ্যে বহুমাত্রিকতা হবে। কিন্তু আমি আলোচনার আগে বা প্রতিনিধিদল বসার আগে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচির বিষয় প্রকাশ করে আলোচনাকে প্রভাবিত করতে চাই না।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ কাল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামীকাল রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, আজ শনিবার মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার পর কাল বেলা ১১টার দিকে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

গত ৮ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করছে। সফরকালে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তিনি এখন নয়াদিল্লি সফর করছেন।

প্রতিনিধিদলে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন।