আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারে উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগসহ তিন দফা দাবি তুলেছেন উত্তরবঙ্গের সাধারণ ছাত্র-জনতা। ছবি: সংগৃহিত
আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারে রংপুর-রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো থেকে উপদেষ্টা নিয়োগসহ তিন দফা দাবি তুলেছেন উত্তরবঙ্গের সাধারণ ছাত্র-জনতা। দাবি না মানলে উত্তরবঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনে ৩ দফা দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সমাবেশে ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে যারাই সরকারে এসেছিল, তারাই উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করে শোষণ করেছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ স্বাধীনের পর নতুন সরকার গঠনের পরও আমাদের সঙ্গে বৈষম্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, এটি আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি।’
ব্লকেডের হুঁশিয়ারি দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাবি শিক্ষার্থী মাহিন সরকার বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ থেকে কোনো উপদেষ্টা নেই। উত্তরবঙ্গের সন্তানরা কেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসার সুযোগ পাবেন না? সচিবালয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে মাত্র ২ জন সচিব। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করেছি কিন্তু এর পরও বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। উপদেষ্টা নিয়োগে যারা বাড়াবাড়ি করছে, তাদের বলব যমুনা সেতু ব্লকেড দিয়ে পুরো উত্তরবঙ্গ ব্লক করে দেওয়া হবে। উপদেষ্টা পরিষদে যেভাবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, মনে হচ্ছে এটি যেন চিটাগং ক্লাবে পরিণত হয়েছে।’
আরেক সমন্বয়ক আবু সাইদ লিয়ন বলেন, ‘মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর থেকে বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে। আমরা শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকারের তিন ছাত্র উপদেষ্টার (আসিফ-নাহিদ-মাহফুজ) সঙ্গে বসব, সেখানে সমাধান না পেলে আমরা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার কাছে সাহায্য চাইব। আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি কোনো সমাধান না পাই, আমরা উত্তরবঙ্গ ব্লকেডে চলে যাব।’
সমাবেশে ঢাবিসহ রাজধানীর অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ওই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। এ সময় তিন দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো, সুষম উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের দুই বিভাগ থেকে কমপক্ষে ২ জন করে ৪ জন উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে; সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমলা ও কর্মকর্তা নিয়োগে আঞ্চলিক বৈষম্য করা যাবে না। সেই সঙ্গে প্রত্যেক উপদেষ্টার কার্যক্রমের অগ্রগতি সাপ্তাহিক জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে; বিতর্কিত ও জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে না, এমন কোনো উপদেষ্টাকে অন্তর্বর্তী সরকারে রাখা যাবে না ও পলিসি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। এই ২৪ জনের মধ্যে ১৪ জনের বাড়িই চট্টগ্রাম বিভাগে।