ঢাকা ২০ আশ্বিন ১৪৩১, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

শপথ নিলাম শহিদের রক্ত ব্যর্থ হতে দেব না : ড. ইউনূস

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২০ পিএম
শপথ নিলাম শহিদের রক্ত ব্যর্থ হতে দেব না : ড. ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমাদের তরুণ বিপ্লবীরা দেশের মানুষের মনে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন জাগিয়ে দিয়েছে তা পূরণে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শহিদদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করতে চাই। এক নতুন যুগের সূচনা করতে চাই। আমরা সবাই শপথ নিলাম, শহিদদের রক্ত এবং আহত ভাইবোনদের আত্মত্যাগকে জাতি হিসেবে আমরা কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেব না। যে সুযোগ তারা আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন, সে সুযোগকে আমরা কখনো হাতছাড়া হতে দেব না। আজ তাদের স্মৃতিময় দিনে আবারও প্রতিজ্ঞা করলাম- তাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়বই।’

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আজ আমরা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম মাস উদযাপন করছি। ইতিহাসের অন্যতম গৌরবময় বিপ্লবের জন্য শত শত ছাত্র এবং সর্বস্তরের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। আজ আমি সেই সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর, পেশাজীবীদের স্মরণ করছি, যারা জঘন্য হত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিল। স্মরণ করছি আন্দোলন চলাকালে নিহত সাংবাদিকদের। আজ আমি এই বিপ্লবে শাহাদতবরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমি অভিবাদন জানাই হাজার হাজার মানুষকেও; যারা আহত হয়েছেন, প্রাণঘাতী আঘাতের শিকার হয়ে চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন কিংবা চক্ষু হারিয়েছেন।’

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের বিপ্লবীরা ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে, যার নেতৃত্বে নৃশংস একটি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। শেখ হাসিনা একটি দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র এবং একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমাদের বাংলাদেশকে পূর্ণ গৌরবে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব আমাদের। গত মাসে আমাকে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন আবু সাঈদ, মুগ্ধ এবং সমস্ত জানা ও অজানা শহিদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমার সকল সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় তরুণেরা, তোমরা তোমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নিয়েছিলে। শহর ও গ্রামীণ জনপদের দেয়ালে আঁকা তোমাদের স্বপ্নগুলো এখনো নানা রঙের সাজ নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বিপ্লবের সময়, তোমরা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ঘুমহীন রাত কাটিয়েছ এবং দিনে নিষ্ঠুর শাসনকে প্রতিহত করার জন্য পরস্পরের থেকে চির বিদায় নিয়ে রাস্তায় নেমেছ। বিপ্লব শেষ হওয়ার পর তোমরা দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয় পাহারা দিয়েছ এবং সারা দেশে ট্রাফিক পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছ। আমি জানি তোমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই এখন সময় পড়াশোনায় ফেরার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। আমি তোমাদের ক্লাস ও ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে আমাদের একটি সুশিক্ষিত ও দক্ষ প্রজন্মের দরকার।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মাত্র এক মাস হলো অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা বিপ্লবের প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। আমাদের প্রথম কাজ জুলাই ও আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করার জন্য আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা এ দেশে এসেছেন এবং তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এ ছাড়া আমি জুলাই এবং আগস্ট মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইব্যুনাল তৈরি করার প্রয়াসে শীর্ষ আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা খুনিদের প্রত্যর্পণ এবং স্বৈরাচারের সময় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও আমলারা যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে তা দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই। এ জন্য বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান দায়িত্বগুলোর মধ্যে একটি হলো বিপ্লবের সময় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হাজার হাজার মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করা। হাসিনার দুর্বৃত্তরা তাদের চোখ লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ায় অসংখ্য তরুণ শিক্ষার্থী দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব তাদের চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে। আমরা শহিদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছি। মূল তালিকা হয়ে গেছে। এখন শুধু দূর-দূরান্তে যাদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যগুলোতে পূর্ণাঙ্গতা দেওয়া হচ্ছে। আহত শত শত মানুষ যাদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন এখন তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। যাদের শাহাদতের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে আমরা তাদের কখনোই ভুলব না।’

খুন ও গুম প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সম্প্রতি আমরা বলপূর্বক গুম হওয়া থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছি। ফলে স্বৈরাচার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ‘গুম সংস্কৃতি’র সমাপ্তি ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। আলাদাভাবে আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৫ বছরে বলপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করছি। যেসব পরিবার তাদের নিখোঁজ পিতা, স্বামী, পুত্র এবং ভাইদের পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে যন্ত্রণার সঙ্গে অপেক্ষা করছেন, আমরা আপনাদের বেদনায় সমব্যথী। আয়নাঘরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আমরা বলপূর্বক গুমের শিকার ভাইবোনদের কষ্ট ও যন্ত্রণা সম্পর্কে জানতে পারব।”

তিনি বলেন, ‘গত মাসের শেষের দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া আমার ভাষণে আমাদের সরকার এ পর্যন্ত যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার গ্রহণ করেছে আমরা তার একটা প্রতিবেদন তুলে ধরেছি। আমরা রাজনৈতিক দল, সম্পাদক, ব্যবসায়ী নেতা, সুশীল সমাজের নেতা এবং কূটনীতিকদের সঙ্গে ক্রমাগতভাবে বৈঠক করে যাচ্ছি। তারা আমাদের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করেছেন। আমরা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন পেয়ে অভিভূত হয়েছি। আমাদের সাহসী এবং দেশপ্রেমিক প্রবাসীরাও জাতি পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছেন। আমি তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, আজ এই স্মৃতিময় বিষাদ দিনে আমি শহিদদের প্রতিটি পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের প্রতি জানাই অসীম কৃতজ্ঞতা। আমি সব শহিদ পরিবারের সদস্যদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানাব, কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের সঙ্গে দেখা করব। আমি তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা কখনোই শহিদদের স্বপ্নের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুঃশাসন ও স্বৈরাচার দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত পূরণ করা। এ জন্য আমাদের প্রয়োজন একতা ও সমন্বয়।’

বিদ্যুৎসংকটে সোলার হচ্ছে একমাত্র ভবিষ্যৎ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
বিদ্যুৎসংকটে সোলার হচ্ছে একমাত্র ভবিষ্যৎ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: খবরের কাগজ

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বিদ্যুৎসংকট নিরসনে প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর কাজ করছে। এর মাঝে প্রস্তাব এসেছে, সোলার পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার। এখন বিদ্যুৎসংকট নিরসনে সোলার হচ্ছে আমাদের একমাত্র ভবিষ্যৎ।’

শনিবার (৫অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী পৌর এলাকায় বস্ত্র প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর ইউএমসি জুট মিল, তাঁত প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। 

তিনি আরও বলেন, ‘মাধবদীতে বস্ত্র প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি ঘুরে দেখে ভালো লাগল। এখানে উন্নত মানের মেশিনারি দিয়ে বস্ত্রশিল্প মালিকদের সেবা দিচ্ছে। তবে এতকিছুর ভিড়ে আনন্দ পাচ্ছি এই ভেবে যে, মাধবদীর বস্ত্র প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র লাভ করছে। তারা লসে নেই। আর এখান থেকে প্রাপ্ত লাভের টাকা অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যয় হচ্ছে। এভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো লাভজনক ব্যবসা করলে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে সরকার অনুপ্রাণিত হবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নরসিংদীতে তাঁতশিল্পে ধস ও বস্ত্র উৎপাদনে চলমান সংকট বিদ্যুৎ, তা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সোলার পদ্ধতি চালু করার জন্য আমার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিকল্পনা করেছি। তবে এক দিনে সবকিছু নিরসন হয় না। পর্যায়ক্রমে আমরা বিষয়গুলো নিরসন করব।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর রৌদ্রের তাপ রয়েছে, যে কারণে সোলার পদ্ধতি ব্যবহারের উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন, নরসিংদী জেলা প্রশাসক মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কে এম শহীদুল হক সোহাগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা সুলতানা নাসরিনসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

শাওন খন্দকার শাহিন/এমএ/

নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম
নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি
ছবি: পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেন। বেলা আড়াইটার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করে এবং প্রায় ঘণ্টাব্যাপী হয় আলোচনা। বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব জানান, আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে চেয়েছি আমরা। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের বিষয়ে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। 

শনিবার (৫ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তৃতীয় দফায় বিএনপিকে দিয়ে সংলাপ শুরু হয় দুপুর আড়াইটায়। মির্জা ফখরুল ছাড়াও আরও অংশ নেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।  

মির্জা ফখরুল বলেন, সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংস্কার করতে হবে। আগামী নির্বাচন কবে হবে তার একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি। বির্তকিত কোনো ব্যক্তি যেন সংস্কার কমিটিতে না আসে সে ব্যাপারে কথা বলেছি। এনআইডি কার্ড স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার আইন বাতিল এবং ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের দাবি জানিয়েছি। পাতানো নির্বাচন দায়ে প্রধান সিইসিসহ কমিশনদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মূলহোতা বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইনিব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।  

তিনি বলেন, প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের নিয়োগকৃত দোসররা এখনো রয়েছে। তাদের অবিলম্বে সরিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে বসানোর কথা বলেছি। জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা দুর্নীতির খবর বের হয়েছে, তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া এবং আমরা নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কথা বলেছি। গত ১৫ বছরের যাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়নি পাননি তাদেরকে পদোন্নতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। গণঅভ্যুত্থানের চালিকাশক্তি যারা নষ্ট করা চেষ্টা করছেন তাদের নিয়োগ বাতিলের কথা বলেছি।   

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিচারবিভাগে ৩০ জন বিচারপতি ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় নিয়োগকৃত, দলকানা এসব বিচারপতিদের দ্রুত অপসারণ দাবি জানিয়েছি। নতুন পিপি ও জিপি নিয়োগ কথা বলেছি। এ ছাড়াও শেখ হাসিনার পতনের পর যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন তাদের আবারও জামিন দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি।  

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৭ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। প্রশাসনের কাদের সহায়তায় দুর্নীতিবাদ এমপি-মন্ত্রীরা বিদেশ পালাচ্ছেন তা দেখা এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে এ ব্যাপারে ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি। গুমের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গেপ্তার এবং জাতিসংঘের টিমকে সহযোগিতা করছে না প্রশাসন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার ও নিশ্চিতকরণে প্রস্তাব করেছি। 

শফিকুল ইসলাম/এমএ/

অনুসন্ধানে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম
অনুসন্ধানে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মামলার অনুসন্ধানে যে দোষী সাব্যস্ত হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরা এপিবিএন সদর দপ্তরে শহিদ মীর মুগ্ধের স্মরণ সভা, মিলাদ মাহফিল, মীর মুগ্ধ ভবন ও এপিবিএন স্কুল এন্ড কলেজের প্রবেশ তোরণ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিগত সরকারের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা আগেই যারা পালিয়ে গেছেন, তারা ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট পালিয়ে গেছেন। এখন পালানো দুরূহ হয়ে গেছে। বর্ডার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

রাজধানীসহ দেশে যেসব মামলা হচ্ছে তার মধ্য অনেককে ভুয়াভাবে আসামি করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরেক বলেন, এখন কোন মামলা পুলিশ বাদি হয়ে করছে না। এ মামলাগুলো করছে সাধারণ জনগণ। তারা (জনগণ) ১০ জনের নাম দিচ্ছেন, হয়ে যাচ্ছে ১০০ জনের নামে মামলা। অনুসন্ধানে যে দোষী সাব্যস্ত হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সাবেক প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। তারা কোথায় আছেন, তারা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন না জানতে চাইলে জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের তথ্য দিন। আমাদের দায়িত্ব তাদের গ্রেপ্তার। আপনাদের দায়িত্ব আমাদের তথ্য দেওয়া। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে, আপনারাও অনুসন্ধান সাংবাদিকতা করেন। পলাতকদের তথ্য পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছে তাদের প্রত্যেকের চিকিৎসা সরকার করবে। প্রয়োজনের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে, কোন কিছুতে কার পূর্ণ করা হবে না।

খাজা/এমএ/

৩২ হাজার পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২০ পিএম
৩২ হাজার পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার
ছবি: সংগৃহীত

শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের ৩২ হাজার ৬৬৬টি পূজামণ্ডপে ২ লাখ ১২ হাজার ১৯২ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। 

তিনি বলেন, সারাদেশে ৬৪টি জেলায় যেকোনো আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাটালিয়ন আনসারদের মোট ৯২টি টিম মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। প্রতিটি টিমে ৬ জন করে সদস্য থাকবে। 

শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তরে শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। 

আনসার এর মহাপরিচালক জানান, দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সব নিরাপত্তা সংস্থার মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় পূজা মণ্ডপগুলোতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে ৮ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে ৬ জন ও সাধারণ মণ্ডপে ৬ জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া বিশেষ বিবেচনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ৩২টি মণ্ডপে ৫৩ হাজার ১৪৮ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য ৬ ও ৭ অক্টোবর পর্যন্ত কাজ করবে।

তিনি আরও জানান, পূজায় ৮ দিন নিয়মিত নিরাপত্তা টহলের মাধ্যমে সব পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা সমন্বয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরি সেবা প্রদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। এ বছর প্রথমবারের মতো মোতায়েন করা সদস্যদের প্রাপ্য ভাতা পূজা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিতরণ করা হবে, যা গুরুত্বপূর্ণ ডিউটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের আরও বেশি উৎসাহ ও মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। 

তিনি আররও জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি অনেক পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি। সেসব পূজামণ্ডপে আনসার সদস্যরা অধিকতর গুরুত্ব সহকারে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজামণ্ডপের আশেপাশে এবং পূজামণ্ডপে কোনো ঘটনা ঘটলে যেন সঙ্গে সঙ্গে তা ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়। এসব ভিডিও আমরা সংগ্রহ করবো যাতে কোনো ধরনের গুজব ছড়িয়ে না পড়ে। দেশের সকল নাগরিকদের এ সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সময়োচিত তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে সহায়তা করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মলেন এসময় ভিডিপির অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আল-আমীন/এমএ/

সংস্কারের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না: মতিউর রহমান চৌধুরী

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
সংস্কারের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না: মতিউর রহমান চৌধুরী
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রতিযোগীদের সঙ্গে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক  মতিউর রহমান চৌধুরী ও  ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সংস্কারের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না, তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর এফডিসিতে গণতন্ত্র সুরক্ষায় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। 

মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, সংবিধান পুনঃলিখন নয়, সংস্কার করা যেতে পারে। পুনঃলিখন করলে বিপদ হবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। তবে দেশে সেনা শাসন আসার কোনো শঙ্কা নেই। এখনকার যুগে সেনাশাসন সম্ভব নয়। সেনাশাসন হলে উন্নয়ন সহযোগিরা সহায়তা বন্ধ করে দেবে। আমেরিকা, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেনা শাসনের বিপক্ষে। তবে বিপ্লব ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। আর বাংলাদেশ ব্যর্থ হলে আমরা অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হব।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনুসকে পাওয়ায় আমরা গর্বিত। তিনি একজন বিশ্বনন্দিত ভাল লোক। তবে প্রশাসন পরিচালনা করার জন্য আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সংস্কারের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না। নির্বাচন বিলম্ব হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই।

মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক বলেন, জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার বিলম্ব হলে ফ্যাসিস্টরা আবার ফিরে আসার ঝুঁকি রয়েছে। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রাপ্তিতেও সংশয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে এবং স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে। 

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সীমাহীন অন্যায়-অত্যাচার, জুলুম, হামলা-মামলা, গুম-খুন করার চরম পরিণতিতে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে এক কাপড়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে পতিত সরকারের প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। বিগত সরকারের শাসনামলে অন্যায়, দুর্নীতি, দুঃশাসন প্রতিরোধের অংশ হিসেবে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু করেছে বর্তমান সরকার। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতদিন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমি মনে করি এক-দেড় বছরের আগে নির্বাচন হলে বিদ্যমান ব্যবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটা যৌক্তিক সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়া উচিত। তা না হলে ছাত্র-জনতা যে ম্যান্ডেট দিয়ে বর্তমান সরকারকে দায়িত্ব প্রদান করেছে, সেই কাঙ্খিত লক্ষ্য সরকার অর্জন করতে পারবে না। তবে অবশ্যই যতদ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দূরত্ব বাড়লে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাবে। সকল রাজনৈতিক দলকে খেয়াল রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা হলে স্বৈরাচারের পতনের সুফল বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ মুক্তি পেলেও আমাদের মুক্তির আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। আমি আর ডামি নির্বাচন যারা করেছে, দিনের ভোট রাতে নিয়েছে, শতভাগ ভোট কাস্ট করেছে, মৃত মানুষের ভোট দিয়েছে, নাবালক শিশুদের দিয়ে ভোট দেওয়ানো হয়েছে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। যারা দুর্নীতির লক্ষ্যে গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করেছে, আয়নাঘর সৃষ্টি করেছে, গুম-খুন হত্যার রাজনীতি করেছে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির আন্দোলন শেষ হবে না। জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের ন্যায্য বিচার না করা পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলবে। তাই পতিত সরকারের আমলে যেসব রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতা হত্যায় মদদ দিয়েছে সেই দলগুলোর ভবিষ্যতে রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার থাকবে কি-না তা জনগণ বিচার করবে। বিএনপি জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যদি নিজেদের মধ্যে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ না থাকে তাহলে আবারও স্বৈরাচারের দোসররা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে পারে। তবে নির্বাচনের রোডম্যাপসহ দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার যে সংলাপ শুরু হয়েছে তার মধ্যদিয়ে হয়তো আগামী নির্বাচন কবে হবে সে জল্পনা কল্পনার কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘রাষ্ট্র সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচন গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে তার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে সাহসী, সততা ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। 

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, অধ্যাপক শিরিনা বীথি, সাংবাদিক রাসেল আহমেদ, সাংবাদিক মো. হুমায়ুন কবীর ও সাংবাদিক আমেনা আক্তার হীরা। 

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়। 

অমিয়/