বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘একপক্ষ চলে যাওয়ার পর আরেকপক্ষ এসে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তাদের সাবধান করে দিতে চাই। দুর্নীতিবাজরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন। তাদেরও সতর্ক করতে চাই। আমাদের আন্দোলন অসাম্যের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, সিন্ডিকেট, অনিয়ম ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে। বিগত ১৬ বছর যারা দুর্নীতি করেছেন, এখন আরেকটি দলের ছত্রছায়ায় এসে যদি দুর্নীতি করার চেষ্টা করেন, ছাত্র-জনতা আপনাদের ছাড়বে না। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে কামার, কুলি, দিনমজুরসহ শিক্ষিত সমাজও ছিল।’
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সবাইকে হাতে হাত রেখে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার হলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
পুলিশদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশদের সহযোগিতা করতে চাই। সব পুলিশ কিন্তু ডিবি হারুন বা বেনজির নয়। সুতরাং পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করব এবং রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।
এ সময় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা দেখেছি, যখন বিপ্লব দরকার তখন আমরা এক হয়ে যাই। যেমন ৪৭-এর দেশভাগ, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে আমরা এক হয়ে গিয়েছিলাম। ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের আগে আমাদের মাঝে কোনো ধরনের বিভেদ, বিভাজন ছিল না। যখন রাষ্ট্র সংস্কারের ও পুনর্গঠনের প্রশ্ন এসেছে, তখনই বিভাজন তৈরি হয়েছে। আমরা শুনি, সবাই বলে, ‘আমরা ক্ষমতায় এলে এটা করব, ওটা করব।’ কিন্তু সবার বলা উচিত, ক্ষমতায় এলেও দেশের স্বার্থে কাজ করব, ক্ষমতায় না এলেও দেশের স্বার্থে কাজ করব।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঠিক করবে আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হবে। রাষ্ট্র সংস্কার কাজে আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা যদি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দর করে সাজাতে পারি, তা হলে তার ধারাবাহিকতায় পুরো বাংলাদেশকে সাজাতে পারব। যদি ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক দল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তা হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিহিত করব।’
মতবিনিময় সভায় অতিদ্রুত উপাচার্য নিয়োগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থিতিশীলতা ফেরানোর দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হয়।