ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে এনএলডিসির বৈষম্যের শিকার সিলেট

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ পিএম
বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে এনএলডিসির বৈষম্যের শিকার সিলেট
ছবি : সংগৃহীত

সিলেটে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে দিনে রাতে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা লোডশেডিং। ভাদ্র মাসের অসহনীয় নগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে এই লোডশেডিং। কিন্তু এই লোডশেডিং সমস্যার কোনো সমাধান দিতে পারছে না সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

সিলেট নগরীর একাদিক বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিলেটের এই লোডশেডিংয়ে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো হাত নেই। কারণ গ্রিড পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি) থেকে। এই এনএলডিসি থেকে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় এটা সঠিক নয়। কারণ যখন বিদ্যুতের চাহিদা পরিমাপ করা হয় তখন এনএলডিসি থেকে বলা হয়, কোনো কিছু বন্ধ করা যাবে না। এই চালু অবস্থায় যখন লোড পরিমাপ করে তখন সর্বোচ্চ চাহিদা ৩০ শতাংশ কম থাকে। কারণ তখন গ্রাহকদের ফ্রিজ, আইপিএস, ব্যাকআপ লাইট, চার্জিং ফ্যান লোড নেয় না। কিন্তু যখন বিদ্যুৎ থাকে না তখন আইপিএস, ফ্রিজ, চার্জিং লাইট ফ্যান লোড নেবে। যার ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বেড়ে যায়। কিন্তু এনএলডিসি বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেয় স্বাভাবিক সময়ের অনুপাতে। যার ফলে লোডশেডিং হয়ে যায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। কিন্তু কাগজে পত্রে এনএলডিসি দেখায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ লোডশেডিং।  

অপরদিকে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) সারাদেশের জোনভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ এবং লোডশেড শিটে দেখা যায়, সারাদেশের নয়টি জোনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কোনো লোডশেডিং দেয় না এনএলডিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিলেটসহ কয়েকটি জোনে স্থানীয় ঘাটতি দেখিয়ে চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। 

গত ৪ সেপ্টেম্বরের এনএলডিসির সারাদেশের জোনভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ এবং লোডশেড শিটে দেখা যায়, ঢাকা জোনের বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ১২২৩.৯ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি ঢাকা জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ১২২৪ মেগাওয়াট। চট্টগ্রাম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ৮৮২.০ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি চট্টগ্রাম জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ৮৮২ মেগাওয়াট। 

পক্ষান্তরে ওইদিন সিলেট জোনে বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয় ২১৫.৪ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি সিলেট জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ১৭৮ মেগাওয়াট। এবং স্থানীয় ঘাটতি দেখিয়ে সিলেটে ৩৭.৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে বলা হয়।

এনএলডিসি এর এই বৈষম্যমূলক লোড বরাদ্দ দেওয়া প্রায় বছর দেড়েক ধরে চলছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে তুলনামূলক অনেক কম চাহিদা থাকার পরও অদৃশ্য কারণে সিলেটে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ বরাদ্দ দিচ্ছে না এনএলডিসি। একদিকে তাদের সঠিক লোড পরিমাপ না করা এবং ক্রটিপূণভাবে যে লোডের চাহিদা নেওয়া হয় সেটাও পুরোপুরি না দেওয়ায় সিলেট জোনের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ২৬ লাখ। ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার থেকে চাহিদার থেকে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে পিক আওয়ারে লোডশেডিং করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধরা হয় ডে-পিক আওয়ার। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্তও থাকে পিক আওয়ার। 

এদিকে এই পিক আওয়ারের হিসেবে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমপক্ষে ১১ ঘন্টা লোডশেডিং করতে হয় সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের। অপরদিকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

অনেক সময় দায়িত্বরত প্রকৌশলী, অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধরও করেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। অনেকেই আবার ফোন করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালিও করেন বলে জানান সিলেটের বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। 

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)  সিলেট বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই লোড মেনেজন্টে করে এনএলডিসি। তারা আমাদের বলে আজ লোড মাপা হবে। আজ কোনো লাইন বন্ধ করবেন না। সব চালু  থাকবে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য ছিল মিটারে ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ লোড রেকর্ড হওয়া আছে। আপনার এই ডিমান্ড থেকে লোড দেন। কিন্তু তারা এটা থেকে নেয় না। মনে করেন আপনার বাসায় সারাদিন বিদ্যুৎ থাকলে বাসার এসি, ফ্রিজ, আইপিএস, লাইট ফ্যান সব চার্জ হয়ে থাকবে। তখন তারা কোনো লোড নেবে না। কিন্তু যখন বিদ্যুৎ থাকবে না তখন এসব বিদ্যুৎ নেওয়া শুরু করবে। তাহলেতো চাহিদা বেড়ে যাবে। ওই গ্যাপটা কারো নজরে আসতেছে না। আমরা চাচ্ছি সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে। আমরা আগেও এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি যারা ভিজিট করতে আসে তাদের মিটিং, ডিসি অফিসের মিটিংয়েও আমি এই লোড বরাদ্দের বিষয়টা নিয়ে বলেছি কিন্তু তৎকালীন ডিসি সাহেব ধমক দিয়ে আমাকে চুপ করিয়ে দেন। উনি বলতেন বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছে সিলেট।’

এ ব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্ট আমাদের হাতে নেই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগতও করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অথচ এই লোডশেডিংয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। তারপরও জনগণের ক্ষোভের শিকার আমরাই হই।’

সিলেটে বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে বৈষম্যের ব্যাপারে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের সিস্টেম অপারেশন অফিসের প্রধান প্রকৌশলী ও ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বি এম মিজানুল হাসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত দুদিন থেকে আমরা ঢাকাতেও লোডশেড দিচ্ছি। যেহেতু এখন আমাদের বিদ্যুতের ক্রাইসিস বেড়েছে সেজন্য সব জোনে লোডশেড সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ঢাকাতেও কিছু লোডশেড দেওয়া হয়েছে।’

সারা বাংলাদেশে একই অনুপাতে লোডশেড করতে কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এটাই ইমপ্লিমেন্ট করার চেষ্টা করছি। পার্সেন্টিজ অনুযায়ী লোডশেড করার পরিকল্পনা হচ্ছে। আমাদের বর্তমানে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ লোডশেডিং আছে।’

কাগজে কলমে আর গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিং চিত্র ভিন্ন কেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। এই ক্রাইসিস থাকবে না। আগামী ১৫ তারিখ পর এই ক্রাইসিস কমে যাবে।

অমিয়/

ঈদের দিন যেমন থাকতে পারে আবহাওয়া

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
ঈদের দিন যেমন থাকতে পারে আবহাওয়া
ছবি: খবরের কাগজ

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে আগামী ৭ জুন (শনিবার)। ওইদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনার পাশাপাশি গড়ম বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (৩ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

ঈদের দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়- রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো কিংবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিশ এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

মঙ্গলবারের পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, রংপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বুধবার ও বৃহস্পতিবারে পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী এবং সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমামা সামান্য কমতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তারলাভ করতে পারে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

ঈদের আগের দিন শুক্রবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

অমিয়/

খিলগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এসআই নিহত

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩৩ এএম
খিলগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এসআই নিহত
উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম

রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারে বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনায় মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে ডিউটিতে যাওয়ার পথে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ঢালে একটি বলাকা বাস ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান এসআই কামরুল।

এ ঘটনায় ওই বাস জব্দসহ চালককে আটক করে শাজাহানপুর থানার পুলিশ।

নিহত এই পুলিশ সদস্যের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার নাগরায়।
 
শাজাহানপুর থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আফজাল খবরের কাগজকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওই বলাকা বাসের চালক মো. জামাল আহমেদ টিপুকে আটক করা হয়েছে৷ বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মতিঝিল থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাদ্দাম মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে খবরের কাগজকে বলেন, এসআই কামরুল ইসলাম ডিউটিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ঢালে নামার সময় একটি বলাকা পরিবহনের বাসের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়। 

সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ জাহাঙ্গীর/অমিয়/

জবির অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম
জবির অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন
জবির অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। 

সোমবার (২ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন। আনোয়ারা বেগমের আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

জামিনের আবেদনে বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক একজন নারী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ বছর অধ্যাপনা করেছেন। তার বয়স ৭০ ও অসুস্থ। ফৌজদারি আইনের বিধানমতে তিনি জামিন পাইতে পারেন। 

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ ওই আবেদনের বিরোধিতা করলেও বিচারক ৫০০ টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। 

আদালত সূত্র জানায়, অনির্ধারিত তারিখে পুট আপ (বিশেষ বিবেচনায়) দিয়ে জামিন আবেদন করা হয়েছে। 

রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। এর আগের দিন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালানো হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটানো হয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। 

চিকিৎসা শেষে সুজন মোল্লা বাদী হয়ে চলতি বছরের গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগে এ মামলা করেন।

প্রসঙ্গত, আনোয়ারা বেগম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।

তাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে রবিবার (১ জুন) বিবৃতি দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।


এম এ জলিল উজ্জ্বল/মাহফুজ

বিচার বিভাগ সংস্কার গণমাধ্যমের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশা প্রধান বিচারপতির

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
গণমাধ্যমের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশা প্রধান বিচারপতির
ছবি: খবরের কাগজ

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগের সংস্কারের জন্য কাজ করছি। গণমাধ্যমও সংস্কারে সহযোগিতা রাখছে। আশা করছি এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

আইন, বিচার ও মানবাধিকার বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোটার্স ফোরামের (এলআরএফ) বার্ষিক প্রকাশনা ‘প্রজন্ম ২৪’-এর মোড়ক উন্মোচনের সময় এই আশা প্রকাশ করেন তিনি। সোমবার (২ জুন) প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে এই মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এসময় সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তাদের মধ্যে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. হাসানুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোসাইন ও প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরীফুল আলম ভূঞা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান জাবেদ, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মিশন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ সরোয়ার হোসেন ভূঁঞা, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম নূর মোহাম্মদসহ সাবেক ও বর্তমান নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মাহমুদুল আলম/মাহফুজ

অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা
ছবি: সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে কলমবিরতি কর্মসূচির পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত ঐক্য পরিষদ। বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে তারা খাদ্য উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা এবং বন ও পরিবেশ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

রবিবার (২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের ৩ নম্বর এবং ৬ নম্বর ভবনের মাঝে বাদামতলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পর মিছিল করে ওই দিনের কর্মসূচি শেষ করেন।

মিছিল নিয়ে তারা খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের কাছে স্মারকলিপি দেন। এরপর তারা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে স্মারকলিপি দেন। কিন্তু পরিবশে, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সচিবালয়ের দপ্তরে উপস্থিত না থাকায় তাদের দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন কর্মচারীরা।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (৩১ মে) জাপান সফর শেষে দেশে ফিরে এলে তার সঙ্গে কথা বলে ভূমিসচিব আমাদের একটা ফলাফল দেবেন। রবিবারের (গতকাল) মধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি প্রসঙ্গে একটা পজিটিভ রেজাল্ট দেওয়ার কথা। এ জন্য আজ কর্মসূচি কিছুটা শিথিল করে স্মারকলিপি দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সঙ্গে বৈঠক হবে।’ বৈঠকের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান কর্মচারী নেতারা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার, রবি ও সোমবার পাঁচ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন কর্মচারীরা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সোমবার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিসংবলিত কর্মচারীদের স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে; এমন বিধান রেখে ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।

উপদেষ্টা পরিষদের ২২ মের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর ২৪ মে থেকে আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছে। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অভিহিত করছেন।