জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সংস্কার চাই।’
প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের একান্ত অনুরোধ, আমাদের ওপর যে সংস্কারের গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব দিয়ে আপনারা দর্শকের গ্যালারিতে চলে যাবেন না। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমরা একসঙ্গে সংস্কার করব। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। আপনারা নিজ নিজ জগতে সংস্কার আনুন। এই সংস্কারের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চাই।’
সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সরফরাজ চৌধুরী, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন।
দায়িত্ব নেওয়ার এক মাস পর বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সব অন্যায়ের প্রতিকারের প্রতিশ্রুতিও দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়িত্বকালে যথাসম্ভব সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’
ড. ইউনূসের এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো একযোগে প্রচার করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মাথায় তৃতীয় দফায় জাতির উদ্দেশে এই ভাষণ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। সরকার পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করে। সেদিনই জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর ১৭ দিন পর ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দ্বিতীয় দফায় ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই সপ্তাহ না যেতেই দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যার ধাক্কা সামলাতে হয় অন্তর্বর্তী সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে ২৫ আগস্টের দ্বিতীয় দফা ভাষণে দেশের মানুষকে বন্যা মোকাবিলায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছয় কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, পরে আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রাথমিকভাবে গঠিত কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশনপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শ সভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আগামী ১ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করছেন। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ সভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্রসমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শ সভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচনব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি, নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানাভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এর পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি।’
কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না
ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীর প্রতি আইন নিজেদের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, এমন কোনো কাজ কেউ কোনোভাবেই করবেন না।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের, আমাদের সন্তানদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর যেন আমাদের কোনো স্বৈরাচারের হাতে পড়তে না হয়, যাতে বলতে পারি আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি, আমরা যাতে সবাই দাবি করতে পারি যে এই দেশটি আমাদের- আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।’
মাঠ প্রশাসনকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে
মাঠ প্রশাসনকে জনবান্ধব, দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিমূলকভাবে গড়ে তোলার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটা প্রতিবছর তাদের করতে হবে।
গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে
গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সবার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আমি আগেও জানিয়েছি, আবারও জানাচ্ছি, গণ-অভ্যুত্থানে সব শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। সব আহত শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে। আহতদের দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন নতুন তথ্য পাওয়ার ভিত্তিতে এই তালিকা হালনাগাদ করা হতে থাকবে।’
‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে
তিনি আরও বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মৃতি ধরে রাখতে সরকার তার যাত্রালগ্নে ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। এখন সে ফাউন্ডেশন তৈরি হয়েছে। সব শহিদ পরিবার ও আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসাসহ তাদের পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব এই ফাউন্ডেশন গ্রহণ করছে। এই ফাউন্ডেশনে দান করার জন্য দেশের সব মানুষ ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
কারখানা খোলা রাখুন, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে
শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শ্রমিকদের কারখানা চালু রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান আমরা অবশ্যই বের করব। আপনারা কারখানা খোলা রাখুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। দেশের অর্থনীতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দিন। আমরা আপনাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করব।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সরকারের প্রথম মাস কাটল। দ্বিতীয় মাস থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হিসেবে নতুন শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের সূচনা করতে চাই। এটা দেশের সবার কাম্য। দেশের নতুন প্রজন্ম নির্ভয়ে যেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’
মালিকপক্ষের প্রতিও আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘মালিকপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করুন। কারখানা সচল রাখুন। অর্থনীতির দুর্বল স্বাস্থ্যকে সবল করে তুলুন।’
এক মাসে ১৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ১৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অতি স্বল্প জনবল নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করা হলেও প্রথম দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে পাঠানো বিবিধ প্রস্তাব বিষয়ে দ্রুতগতিতে এবং আইনগত সব বাধ্যবাধকতা মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত এক মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ১৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনপ্রশাসনের ১৩৫ জন অতিরিক্ত সচিব, ২২৭ জন যুগ্ম সচিব ও ১২০ জন উপসচিবকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষায় সংস্কার অব্যাহত থাকবে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ যেন উজ্জ্বল হয়, সেটা নিশ্চিত করতে শিক্ষাব্যবস্থার দিকে আমাদের পূর্ণ নজর রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে। বই সংশোধন এবং পরিমার্জনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। এ সংস্কারের কাজ অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চ প্রশাসনিক পদগুলো পূরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা বোর্ডে দখলদারত্বের রাজনীতি বন্ধ করার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’
মিডিয়া কমিশন গঠন করা হবে
সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সবাইকে (গণমাধ্যেমকে) বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা-বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে, সে জন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন। আরও যেসব কমিশন সরকারসহ অন্য সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে পারে, আমরা তাদের পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি, যাতে তারা আরও শক্তিশালী হয়, জনকল্যাণে কাজ করে।’
ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া তার ভাষণের শেষ পর্যায়ে এসে বলেন, ‘ধৈর্য ধরুন, এই কথাটি আমি মোটেই আপনাদের বলব না। আমরা সবাই অধৈর্য হয়ে পড়েছি এত সব কাজ কখন যে শেষ হবে- এটা চিন্তা করে। আমরা অধৈর্য হব। কেন হব না। কিন্তু সঠিকভাবে কাজ করব। কাজে কোনো অধৈর্যের চিহ্ন রাখব না।’
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে তিনি জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত সব শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি আপনাদের ভাইবোনদের, আপনাদের সন্তানদের যারা এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছে।’