বাংলাদেশের সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্ব অটুট রাখতে মন্দির-মাজারসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত সক্রিয় হতে অনুরোধ জানিয়েছেন দেশের ৪৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় যৌথ বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েরও এ ক্ষেত্রে নিশ্চুপ থাকার সুযোগ নেই।
মন্দির-মাজারসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক স্থাপনায় হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা সমাজের গভীরের ক্ষতকে বিস্তৃত করবে বলে বিশিষ্টজনদের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। তারা বলেন, ‘গত কয়েক দিনে দেখা গেছে সামাজিকমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে সংগঠিত হয়ে মাজারসহ আধ্যাত্মিক স্থাপনায় হামলা হচ্ছে। এর আগে আমরা দেখেছি মন্দিরে হামলা হতে। এসব কোনো ঘটনায় কাউকে বিচারের আওতায় আনতে বা মামলা করার খবরও পাওয়া যায়নি। মাজারে হামলার কোনো ঘটনায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভেতর বিভাজন আরও বাড়াবে; যা আগের মতো অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতে বাংলাদেশকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করবে।’
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে একাধিক হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার নিন্দাও জানান বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, ‘নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার সমাজে গভীর বিভাজন সৃষ্টির জন্য এসব করেছিল বলে অনেকের ধারণা। হয়তো সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় থাকতে হয়েছিল। কিন্তু হাজারও শহিদের রক্তে অর্জিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নতুন সময়ে তারা কেন নিশ্চুপ, সেই উত্তর মিলছে না।’
বিশিষ্টজনদের মধ্যে রয়েছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, কবি আব্দুল হাই শিকদার, কবি কাজল শাহনেওয়াজ, কথাসাহিত্যিক মশিউল আলম, শিল্প-সমালোচক মুস্তাফা জামান, শিল্পী অরূপ রাহী, লেখক ও সম্পাদক রাখাল রাহা, নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, কবি ও সম্পাদক সাখাওয়াত টিপু, কবি ও সম্পাদক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোশরেকা অদিতি হক প্রমুখ।