পরোক্ষ ধূমপানে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে তাই পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে শিশু রক্ষায় সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নারী মৈত্রীর প্রধান কার্যালয়ে ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নারীর কণ্ঠস্বর বলিষ্ঠকরণ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের শেষে এ দাবি জানান তারা।
২০ জন নেত্রীর সমন্বয়ে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বয়ে প্রশিক্ষণের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আবদুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রামস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ।
প্রশিক্ষণে তামাকের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নাসরিন আকতার।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত খসড়ায় যে বিষয়গুলো প্রস্তাব করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সব পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রি বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় তিন কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। যেখানে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আর তামাকের কারণে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন ৪৪২ জন। এই অকাল মৃত্যু রোধ করতে এবং পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে নারী-শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, গর্ভপাত এবং সন্তান জন্মদানে মা ও শিশু উভয়ই মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের জন্য আমাদের সবার দাবির কণ্ঠস্বর বলিষ্ঠ হতে হবে।
আবদুস সালাম মিয়া বলেন, শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। বিশেষ করে জন্ম থেকেই সংস্পর্শে আসা মানুষগুলোর ভাষা থেকে শুরু করে আচার-ব্যবহারই তারা অনুকরণ করে। শিশুরা যা দেখে তাই শিখে বড় হয়। তাই বাবা, বড় ভাই, চাচা, মামা কিংবা অন্য কেউ ধূমপান করলে সেই শিশুটিও ধূমপানে আকৃষ্ট হয়। তাই এখনি সময় সচেতন হওয়ার।
এ ছাড়াও ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের তাগিদ জানান নারী নেত্রীরা।