দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচারসহ আট দফা দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। একই দাবিতে আগামী শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিলের ডাক দিয়েছে সব সনাতনী সংগঠন ও সনাতনীদের ঐক্য মোর্চা সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলায় একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সনাতনী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার এসআই সাহানুর খবরের কাগজকে জানান, বিকেল সোয়া ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তারা শাহবাগ অবরোধ করেন। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে অবরোধকারীরা স্থান ত্যাগ করলে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক প্রদীপ কান্তি দে বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে আমাদের আট দফা দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে উত্থাপন করি। সেই সময় বলা হয় আমাদের দাবি যৌক্তিক। অবিলম্বে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এক মাস পেরিয়েছে এখন পর্যন্ত দাবি বাস্তবায়ন তো দূরে থাক, এখনো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। ১৮ কোটি মানুষের এ দেশে ২ কোটি হিন্দুর কেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না। আমরা এ দেশের নাগরিক, অবিলম্বে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, আমরা এ দেশের ভূমিপুত্র।’
সনাতন সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সরকার পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন এবং দুর্গাপূজায় ছুটি পাঁচ দিন করা।
আগামী শুক্রবার কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রদীপ কান্তি দে বলেন, ‘আমরা শাহবাগ অবরোধ করতে চাই না। আমরা নিরাপত্তা চাই। আগামী শুক্রবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে একই দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মশাল মিছিল পালন করা হবে। সারা দেশে একযোগে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের এক ব্যানারে ৬৪ জেলায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। আশা করি, সরকার এর আগেই আমাদের দাবি পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’