আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির-মণ্ডপে পাহারা দিতে সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তৎপর হলেও এর নেতিবাচক দিক নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের নেতারা।
তারা বলছেন, দুর্গাপূজায় পাহারা দেওয়া হলে তা স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চার বিরোধিতা করা হবে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্ম নেবে। তখন পাহারায় পুজো হবে অর্থহীন।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের নেতারা এসব কথা বলেন। তুমুল বৃষ্টির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয় এ সমাবেশ।
সংগঠনের সভাপতি শিমুল সাহার সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, মতিলাল রায়, বলরাম বাহাদুর, জহরলাল দাশ, শ্যামল কুমার কুণ্ডু, সুজন রায়, কৃষ্ণ সুর, তাপস রায়, সজীব সরকার, অপূর্ব নন্দ রায়, দীপঙ্কর চন্দ্র শীল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর এলাকায় দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা রাণা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তারা জানান, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় মামলার কথিত ঘটনার দিন ও সময় ১৯ জুলাই। সেদিন তিনি ছিলেন চট্টগ্রামে। ওই দিন দুপুরে চিকিৎসা নিতে কলকাতায় যান রাণা দাশগুপ্ত। ঢাকার মিরপুর মডেল থানার ঘটনা ৫ আগস্টের। সেদিন রাণা দাশগুপ্ত ট্টগ্রামে ছিলেন বলে জানানো হয় সমাবেশে।
ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, এ দুই মামলায় রাণা দাশগুপ্তকে পরিকল্পিতভাবে জড়ানো হয়েছে। মানবাধিকার আন্দোলনের অগ্রগণ্য নেতা হিসেবে তার কণ্ঠকে স্তব্ধ করার জন্য এ মামলা দুটি করা হয়েছে।
সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চলমান রয়েছে উল্লেখ করে ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, ধর্ম অবমাননার কল্পিত অভিযোগে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সামনে উৎসব মণ্ডলকে একদল সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্ত পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। মেয়েদের অপহরণ করা হচ্ছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিপীড়নের অভিযোগে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি আসে সমাবেশ থেকে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে স্বর্ণা দাস ও জয়ন্ত কুমার সিংহ নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সমাবেশে তীব্র ক্ষোভ জানানো হয়। বক্তারা অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান। সমাবেশ থেকে আগামী শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাকাসহ সারা দেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিমুল সাহা।