দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন চা-শ্রমিকরা।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠক করে ‘চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি’র নেতারা এসব দাবি জানান। সচিবালয়ে শ্রম উপদেষ্টার কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ কাফি রতন, সমন্বয়ক এস এম শুভ, আহ্বায়ক এবং খাদিম চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সবুজ তাঁতি, মালনিছড়া চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি জিতেন সবর, বুরজান চা-কারখানা পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বিলাস ব্যানার্জি, ছড়াগাংগ চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কমল চাষা, বুরজান চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রতিলালা নায়েক, কালাগুল চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রঞ্জু নায়েক, গুলনি চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় কুর্মি ও সাধারণ সম্পাদক মংগল মুন্ডা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য কৃষ্ণদাশ অলমিক, কেন্দ্রীয় সংগঠক মনীষা ওয়াহিদ প্রমুখ।
শ্রম উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে চা-শ্রমিকরা চা-বাগানে তাদের ভূমির অধিকারসহ দশ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন বলে জানিয়েছেন মনীষা ওয়াহিদ।
শ্রমিক নেতারা বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের ২০২৩-২৪ মেয়াদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে প্রায় ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও বাগান মালিকদের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। গেজেট অনুযায়ী ২০২৪ সালে ৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হলে চা-শ্রমিকরা আন্দোলনে যাবে, তা বাগান মালিকরা জানত। তাই বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগে মালিকরা হুট করে চা-শ্রমিকদের বিরোধিতা সত্ত্বেও বিগত সরকারের গৃহীত গেজেট অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে। অর্থাৎ মাত্র ৮ টাকা ৫০ পয়সা বাড়িয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর তা বিজ্ঞপ্তি আকারে শ্রমিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন বেতন কাঠামো গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে, যা ২০২৮ সালের ৮ আগস্ট পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে জানা গেছে।’
বৈঠকে দাবিগুলো তুলে ধরে চা-শ্রমিকরা বলেন, ‘চা-শ্রমিকরা ১৭০ বছর পরেও ভূমির মালিকানা থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ন্যূনতম চিকিৎসার অধিকার বাগান মালিকরা নিশ্চিত করেনি। চা-শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অপুষ্টিতে ভুগছে। অতি নিম্ন মজুরিতে চা-শ্রমিকদের জীবনযাপন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাই দুই বেলা দুমুঠো খাবারের নিশ্চয়তার জন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরি হওয়া দরকার।’ শ্রমিকদের দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা না হলে চা-শ্রমিকরা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
পরে শ্রম উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া চা-বাগান শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেন।