ঢাকা ২০ আশ্বিন ১৪৩১, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

স্বস্তি ফিরেছে তৈরি পোশাকশিল্পে

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ পিএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৩ পিএম
স্বস্তি ফিরেছে তৈরি পোশাকশিল্পে
শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গাজীপুর ও সাভারের শিল্পাঞ্চল স্থবির হয়ে যায়। তবে সংকট কাটিয়ে কর্মব্যস্ততায় ফিরছে কারখানাগুলোতে। ছবি: খবরের কাগজ

গাজীপুর এবং ঢাকার সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছিল উৎপাদন। অস্থিরতার মুখে সাভারে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল দুই শতাধিক কারখানায়। তবে গত দুই দিনে এসব কারখানার অধিকাংশেরই কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছেন কারখানাগুলোর শ্রমিকরা। এদিকে গাজীপুরে বেশির ভাগ তৈরি পোশাক কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।

সাভারে অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে এখনো ২০টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প-পুলিশ। শিগগিরই সংকট নিরসনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের সব কারখানা সচল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যরা। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সর্বশেষ বন্ধ থাকা ৪৯টি কারখানার মধ্যে ২৯টিতে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিল্প-পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম। 

শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যরা আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের চলমান সংকট নিরসনে গতকাল বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।

জানা গেছে, গত শুক্রবার আশুলিয়ায় স্থানীয় নেতা ও কারখানার মালিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বিজিএমইএ সব পোশাক কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর এই অঞ্চলে সব মিলিয়ে ৪৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। তবে গতকাল বন্ধ কারখানার সংখ্যা নেমে আসে ২০টিতে।

শিল্প-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে ৪-৫টি কারখানার শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে মালিকপক্ষের সঙ্গে নানা দাবির বিষয়ে আলোচনা করতে কাজ বন্ধ করে রাখলেও পরে কাজ শুরু করেন।

শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে জেনারেশন নেক্সট, সান সোয়েটার, মাসকট ফ্যাশন ও পার্ল গার্মেন্টস। তবে আগের মতোই উৎপাদন স্বাভাবিক ছিল ডিইপিজেডসহ শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায়। 

আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকার ন্যাচারাল ডেনিমস কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সবুজ হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের কারখানায় প্রায় চার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার কিছুটা স্বাভাবিকের পর গত দুই দিন কারখানা পুরো দমে চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন আমরা হইনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও আমাদের সার্বিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছেন। আজ (গতকাল) সব কটিতেই শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। শুধু মেহনাজ নামের একটি কারখানা বন্ধ রয়েছে।’ 

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘গার্মেন্ট সেক্টরে অস্থিরতার জন্য গার্মেন্ট মালিক জড়িত আছেন কি না তা তদন্ত করে দেখা উচিত। সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই এবং ডিইপিজেড নিয়ে এই শিল্প জোনে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কারখানা আছে। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২০টি কারখানায় শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন, যা পার্সেন্ট করলে হয় মাত্র এক-দুই পার্সেন্ট। তাহলে আমার কথা হলো, মাত্র এক-দুই পার্সেন্ট কারখানায় এই আন্দোলন কেন? বারবার বিজিএমইতে আলোচনা হলেও এই কারখানাগুলোতে সমাধান হচ্ছে না কেন?’

তিনি আরও বলেন, আশুলিয়াতে গত ১৫ আগস্টের পর ডিইপিজেডের গেটে চাকরিপ্রত্যাশী ও বহিরাগতরা প্রথমে আন্দোলন করেন এবং তা কিছুদিন পর নিয়ন্ত্রণে আসে। গত ২৫ আগস্ট ডিইপিজেডের বাইরে ডংলিয়ন নামের একটি কারখানায় আন্দোলন হয় এবং ২৬ আগস্ট শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার কারণে শ্রমিকরা কাজে ফিরে যান। এই আন্দোলনের পর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কারখানায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, যা এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। 

শিল্প-পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, গতকাল এই অঞ্চলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় ১৮টি কারখানা বন্ধ এবং দুটি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। এর বাইরে শিল্পাঞ্চলের সব কারখানায় স্বাভাবিক রয়েছে উৎপাদন কার্যক্রম। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। 

আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে অনন্ত গার্মেন্টস পরিদর্শন শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক সবুর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে আমরা আশুলিয়ায় এসেছি। আমরা চাই তাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি জেনে সরকারের কাছে তুলে ধরতে। যদি সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে পূরণ করার সুযোগ থাকে তবে সেটিও আমরা সুপারিশ করব। যদি সময় লাগে তবে সেটিও সরকারকে জানাব। আমাদের প্রত্যাশা, কারখানাগুলোতে শ্রমিকরা কাজ করবেন। আমরা আশাবাদী ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

এদিকে গাজীপুর মহানগরীরসহ পুরো জেলায় তৈরি পোশাক কারখানা নারী-পুরুষ শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে কাজ শুরু করেছেন। গত শনিবার সকাল থেকে শ্রমিকদের বৃষ্টিতে ভিজে কারখানাগুলোতে যেতে দেখা গেছে। প্রতিটি কারখানার নিরাপত্তায় মোতায়েন ছিল শিল্প-পুলিশ। সেনাবাহিনী ও বিজিবির টহল ছিল। 

গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সূত্রমতে, শিল্প অঞ্চলে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক রয়েছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প-পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার বলেন, ‘টিএনজেট অ্যাপারেলস লিমিটেড শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের ব্যাপারে গত শুক্রবার রাতে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। তখন বেতন পরিশোধের অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এর মধ্যেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করার কারণে সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকরা একপর্যায়ে পাশের কারখানার শ্রমিক জড়ো করতে পাশের অন্য কারখানায় ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে দ্রুত কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কিছু কারখানায় শ্রমিক আন্দোলন ও নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ ছিল। তবে শনিবার সকাল থেকেই গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের প্রায় শতভাগ তৈরি পোশাকশিল্প কারখানা খুলেছে।’

সমাজের উন্নয়নে প্রবীণদের কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৩ পিএম
সমাজের উন্নয়নে প্রবীণদের কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ
বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি: সংগৃহীত

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রবীণদের দক্ষতা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী সমাজের উন্নয়নে তাদের কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেবে। জীবনের প্রতিটি ধাপেই সমাজের জন্য কাজ করার ও ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকে বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সমাজসেবা অধিদপ্তর এর মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, প্রবীণরা নিজেদের অক্ষম ও অপাংক্তেয় মনে করবেন না করার আহ্বান জানান। প্রবীণদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের সমাজের জন্য অনেক কিছু দেবার আছে, সেইসঙ্গে যথাযথ মর্যাদাও আপনাদের প্রাপ্য।

তিনি আরো বলেন, আপনারা নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করার চেষ্টা করবেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি, প্রয়োজনে আমরা আপনাদের সহায়তা করবো।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক শাহেদ পারভেজ। আলোচনা সভায় দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম।

এর আগে দিবসটি উপলক্ষে আগারগাঁওস্থ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তর পর্যন্ত র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালি শেষে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরর্শিদ বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। 

র‌্যালিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রবীণব্যক্তি ও প্রবীণকল্যাণে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। 

তিথি/এমএ/

সিলেটে কবর থেকে তোলা হচ্ছে আন্দোলনে নিহত ৯ জনের লাশ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১১ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২২ পিএম
সিলেটে কবর থেকে তোলা হচ্ছে আন্দোলনে নিহত ৯ জনের লাশ

সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৯ জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৬টি ও বিয়ানীবাজারের ৩টি লাশ রয়েছে। সব প্রস্তুতি শেষ হলে যেকোনো সময় ওই লাশগুলো তোলা হবে। এরই মধ্যে ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেটকে লাশ তোলার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খবর ইউএনবির।

পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর পৃথকভাবে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২-এর বিচারক আবিদা সুলতানা মলি ৬ জনের লাশ তোলার আদেশ দেন।

শেখ হাসিনার সরকার পতনের আগের দিন গোলাপগঞ্জে ছাত্র-আন্দোলনে গুলিতে নিহত হন উপজেলার নিশ্চিন্ত গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৪), দক্ষিণ রায়গড় গ্রামের মৃত সুরই মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ জয় (২০), শিলঘাট গ্রামের কায়ছার আহমদের ছেলে সানি আহমদ (২২), বারকোট গ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে তাজ উদ্দিন (৪০), দত্তরাইল বাসাবাড়ি এলাকার আলাই মিয়ার ছেলে মিনহাজ আহমদ (২৩) ও ঘোষগাঁও ফুলবাড়ি গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে গৌছউদ্দিন (৩৫)।

এসব ঘটনায় গোলাপগঞ্জ থানায় পৃথকভাবে ৬টি মামলা হয়। পরে আরও একটি মামলা করা হয় আদালতে। সবকটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ-সদস্য ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সরকার পতনের কারণে ওই সময় লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়নি। যে কারণে ময়নাতদন্তের জন্য মামলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তারা আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ তোলার আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে বিয়ানীবাজারে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজার থানা চত্বরে বিজয় উল্লাসের সময় উৎসুক জনতা বিয়ানীবাজার থানায় অগ্নিসংযোগসহ লুটপাট করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় পুলিশ। ওই সময় বিয়ানীবাজার পৌর শহরে ঘটনাস্থলেই ৩ জন মারা যান, আহত হন আরও অন্তত ১০ জন।

এ ঘটনায় নিহত তারেক আহমদ, রায়হান আহমদ ও ময়নুল ইসলামকে ৬ আগস্ট দিনের বিভিন্ন সময়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেন স্বজনরা। এসব ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় ৩টি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে। নিহত ৩ জনের লাশ দ্রুত উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আদালত থেকে নিহতদের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তাদের লাশ উত্তোলন করা হবে।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী জানান, আদালতের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনা হাতে আসেনি। পুরো আদেশ পাওয়ার পরই লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, ছেলে তারেক আহমদ নিহতের ঘটনায় ২০ আগস্ট বাদী হয়ে প্রথম মামলা করেন তার মা ইনারুন নেসা। যদিও ২২ আগস্ট এ মামলা প্রত্যাহারে সিলেটের আদালতে আবেদন করেন তিনি। যেখানে উল্লেখ করেন আসামি কাউকেই তিনি চেনেন না। অপরদিকে একই সময়ে নিহত আরও দুইজন রায়হান আহমদ এবং ময়নুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা বাদী হয়ে পৃথক দুটি হত্যা মামলা করেন।

 

বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার আভাস

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৬ পিএম
বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার আভাস

বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ দিকে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে শেরপুরে ভুগাই নদীর পানি বাড়ছে। এর ফলে ভুগাই-কংস নদীসংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও জিঞ্জিরাম নদীসংলগ্ন জামালপুর জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। অন্যদিকে টানা বৃষ্টিতে দুর্ভোগ ছাড়ছে না রাজধানীবাসীর। বিভিন্ন স্থানে জলজট আর সড়কে যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে তাদের।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীতে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়াবিদদের হিসাবে এটি মাঝারি ধরনের বৃষ্টি। গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের নিম্ন এলাকায় শুক্রবারও ছিল জলাবদ্ধতা। ফলে পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ হয়। একই সঙ্গে বৃষ্টির কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থায়ও বিঘ্ন ঘটে। ফলে বিভিন্ন মোড়গুলোতে তৈরি হয় যানজটের। 

শুক্রবার ঢাকার বাইরে আবহাওয়ার ৪২টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনে রেকর্ড করা হয় বৃষ্টিপাত। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় টাঙ্গাইলে ২১১ মিলিমিটার। ময়মনসিংহে রেকর্ড করা হয় ১৪৯ মিলিমিটার। যা অতি ভারী বৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। 

৪ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র শুক্রবার জানায়, ময়মনসিংহ বিভাগের ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীগুলোর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভুগাই নদী শেরপুর জেলার নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়, ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং শেরপুরের ভুগাই নদীর ভাটিতে নেত্রকোনার কংস নদী এবং জামালপুরের জিঞ্জিরাম নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে ভুগাই-কংস নদীসংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা এবং জিঞ্জিরাম নদীসংলগ্ন জামালপুর জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে নদীগুলোর পানি সমতল কমে যেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।

বৃষ্টিপাতের তথ্য নিয়ে জানানো হয়, নাকুয়াগাঁও (শেরপুর) স্টেশনে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্গাপুরে ১৩৫ মিলিমিটার, জামালপুরে ৯৭ মিলিমিটার, জারিয়াজাঞ্জাইল (নেত্রকোনা) ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বাড়তে পারে বাঘের সংখ্যা, সুন্দরবনে বাঘশুমারির ফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
বাড়তে পারে বাঘের সংখ্যা, সুন্দরবনে বাঘশুমারির ফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর
ছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে। ১ হাজার ২০০-এর বেশি ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা শেষ হয়েছে। আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্টের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন অপেক্ষায় আছি কবে ফলাফলটা পাব। আশা করি, এবার বাঘ বাড়বে। বাঘ সুন্দরবনসহ প্রকৃতিকে রক্ষা করছে। সচেতনতার কারণেই বাড়ছে বাঘের সংখ্যা। তবে প্রতি তিন বছর অন্তর কোটি টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা না করে এই টাকা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে কাজ করলে আরও উপকৃত হবে।’ 

পরিবেশ রক্ষাবিষয়ক সংগঠন বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘খুলনা ফরেস্ট অফিস ২০১৫ ও ২০১৮ সালের পর তৃতীয়বারের মতো সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু করেছিল ২০২২ সালে। ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছরে বাঘ গণনা ও সংরক্ষণবিষয়ক দুটি মেগা প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। আমরা জেনেছি সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনার জন্য কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এখানে বড় ধরনের অর্থ অপচয় হচ্ছে। বাঘ গণনার নামে লুটপাট হচ্ছে দেশের কোটি টাকা। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে ১০ বছর পর পর একবার গণনা করলে সুন্দরবনের ওপর চাপ কমবে।

সুন্দরবন পশ্চিম বনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এর আগে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘ জরিপ হলেও এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরার ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়া ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঘকে রক্ষার জন্য বাঘের কেল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে ছিল ১১৪টি। সূত্র: ইউএনবি

 

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ৩১৭ জন

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ৩১৭ জন

ডেঙ্গুতে শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৭ জন রোগী। তবে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রেরিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। 

হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ ডা. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের হাসপাতালে ৩১৭ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ২৭৩ জন সরকারি হাসাপাতালে এবং ৪৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সব মিলিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৪৭৩ জন। গত ১ অক্টোবর থেকে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন, মৃত্যুর সংখ্যা ১৭৭ জন। ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৭৮৮ জন। 

অন্যদিকে ঢাকা মহানগরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি ১৬৪ জন। গত ১ অক্টোবর থেকে আক্রান্ত সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৪৭ জন। মৃত্যু ১২৩ জন। ছাড়পত্রপ্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৮ জন। বর্তমানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫৬ জন।