বাংলাদেশ পুলিশের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, অনুপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) রয়েছেন ১ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি ৭ জন, পুলিশ সুপার ২ জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ১ জন, সহকারী পুলিশ সুপার ৫ জন, পুলিশ পরিদর্শক ৫ জন, এসআই ও সার্জেন্ট ১৪ জন, এএসআই ৯ জন, নায়েক ৭ জন ও কনস্টেবল ১৩৬ জন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। থানা-পুলিশের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয় বিভিন্ন জায়গায়। দেশের অন্য এলাকায়ও পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যরা থানায় আসতে সাহস পাননি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। এর ফলে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা হয়। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরপর পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের অনেকে আত্মগোপনে চলে যান। যে কারণে পুলিশিং কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর পুলিশের কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে আনতে ১১ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, পুলিশের যেসব সদস্য কাজে যোগ দেননি, তাদের জন্য শেষ সময় হচ্ছে ১৪ আগস্ট। ওই দিনের মধ্যে মধ্যে যদি কেউ যোগ না দেন, তাহলে ধরে নেওয়া হবে তারা চাকরিতে ইচ্ছুক নন।
এর আগে ৭ আগস্ট পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের ৮ আগস্টের মধ্যে নিজ নিজ ইউনিটে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ৪০ দিন পরও পুলিশের ১৮৭ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী কর্মস্থলে গরহাজির রয়েছেন ৪৯ জন, স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে অনুপস্থিত আছেন ৩ জন, ছুটি শেষ হয়ে গেলেও কাজে ফেরেননি ৯৬ জন। এ ছাড়া অন্যান্য কারণে পুলিশের ৩৯ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।