ঢাকা ৩০ কার্তিক ১৪৩১, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কমছে না পোশাকশ্রমিকদের অসন্তোষ

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
কমছে না পোশাকশ্রমিকদের অসন্তোষ
সিজল ড্রেসেস লি. গার্মেন্টসের শ্রমিকরা তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গতকাল গাজীপুরের গাজীপুরা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সেনা সদস্যরা তাদেরকে সড়ক ছেড়ে দিতে বলেন। ছবি: খবরের কাগজ

গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পোশাক কারখানার  শ্রমিকদের অসন্তোষ কোনো উপায়েই কমানো যাচ্ছে না। সরকারের উপদেষ্টা মহলের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্যবসায়ী নেতাদের সংগঠনগুলো নানা উদ্যোগ নিলেও শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়ায় বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে তাদের বিক্ষোভ-আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে স্থিতিশীল পরিস্থিতির মাঝেই মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক নারী শ্রমিক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। তবে শিল্পাঞ্চলের ডিইপিজেডসহ অন্যান্য পোশাক কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক থাকলেও বেশকিছু কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ। 

এ ছাড়া গাজীপুরে বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে দুটি ওষুধ কারখানার শ্রমিকদের পাশাপাশি পোশাকশ্রমিক এবং চট্টগ্রামের সিইপিজেড এলাকার সি টেক্স নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। চট্টগ্রাম ব্যুরো, গাজীপুর ও সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধির পাঠানো খবর:

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় ম্যাসকট গার্মেন্টস লিমিটেড, রেডিয়্যান্স ও সাউদার্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে রোকেয়া বেগম (৩৫) নামে ম্যাসকট গার্মেন্টসের এক সেলাই মেশিন অপারেটর মারা যান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, চলমান শ্রমিক অসন্তোষের জেরে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় (কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকরা বে-আইনি ধর্মঘট ডাকলে মালিক চাইলে ওই প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে পারেন। এক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা ওই সময়ের জন্য কোনো মজুরি পাবেন না) বন্ধ ছিল জিরাবো এলাকার ম্যাসকট গার্মেন্টস লিমিটেড। সকালে শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে এর সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে ম্যাসকট গার্মেন্টসের শ্রমিকদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রেডিয়্যান্স ও সাউদার্ন নামে দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মাঝে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ থেকে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ত্রিমুখী সংঘর্ষে শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে রোকেয়া বেগমসহ অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রোকেয়াকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘সকাল পৌনে ১০টার দিকে ম্যাসকট ও রেডিয়েন্স কারখানার দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। লাশ জিরাবোর পিএমকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তবে কোথাও কোনো সড়ক অবরোধ নেই।’

অন্যদিকে বিজিএমইএ ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আশুলিয়ায় ডিইপিজেডসহ অধিকাংশ কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন স্বাভাবিক রেখেছেন। তবে শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় এখনো ১৫টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। আরও চারটি কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েও অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে কাজ না করে চলে যান।

গাজীপুরে আন্দোলনে শ্রমিকরা
গাজীপুরে বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, চক্রবর্তী, গাজীপুর সদরের শিরিরচালা এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এতে মহাসড়কের বেক্সিমকো থেকে জিরানি পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়। গতকাল সকাল থেকে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলন নিরসনে দাবি দাওয়ার বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ।

গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় মাহমুদ জিন্স লিমিটেড ও নায়াগ্রা টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকরা সকালে আন্দোলনে নামেন। এ ছাড়া জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার এক্সিকিউটিভ হাই ফ্যাশন লিমিটেড এবং গাজীপুর সদরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে তাসমিয়া হারবাল লিমিটেডে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এ ছাড়া জেলার টঙ্গী খাঁ পাড়ায় সিজন ড্রেস, ভেরিটাস ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড এবং চক্রবর্তী এলাকায় বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন। এ সময় শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

চট্টগ্রামে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
চট্টগ্রামের সিইপিজেড এলাকার সি টেক্স লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। গতকাল সকাল থেকে কাজে যোগ না দিয়ে চট্টগ্রামের এশিয়ান গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সি টেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এ কারখানার তিনজন কর্মকর্তার পদত্যাগ, বেতনবৈষম্য দূর করা এবং চাকরি স্থায়ী করাসহ ১৫ দাবির জন্য শ্রমিকরা এ আন্দোলন করেন বলে জানা যায়। শ্রমিকরা এ সময় সিইপিজেড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখলে প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। 

এদিকে বেলা ১১টায় শ্রমিকদের দাবি নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (বেপজা) ডেপুটি ম্যানেজার আব্দুস সোবহান। বৈঠকে সেনাবাহিনী, শ্রমিক নেতা, শিল্প পুলিশের প্রতিনিধিও ছিলেন। এ বিষয়ে বেপজার ডেপুটি ম্যানেজার আব্দুস সোবহান খবরের কাগজকে বলেন, ‘সি টেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা কাজ না করে আন্দোলন করছেন। শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বৈঠকে বসেছি। শ্রমিকদের ছোট সব দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকরা তিনজন কর্মকর্তার পদত্যাগ চেয়েছেন। সেখানে দুজনের পদত্যাগের জন্য আমরা সুপারিশ করেছি। সবাইকে তো আর পদত্যাগ করানো সম্ভব না। তবে এ কারখানার সমস্যার সমাধান হয়েছে।’

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১০৭

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১০৭

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১০৭ জন রোগী।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫ জনের মধ্যে দুজন বরিশাল বিভাগ, একজন করে তিনজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ময়মনসিংহ বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও তিনজন নারী।

চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৭৭ হাজার ১২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে ৭২ হাজার রোগী ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর বছরজুড়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৮৪ জনের।

এ বছরের জুলাই থেকে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ওই মাসে ডেঙ্গুতে ২ হাজার ৬৬৯ জন আক্রান্ত হন। পরের মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৫২১। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ গুণ বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৯৭।

গত অক্টোবরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। ওই মাসে ১৩৫ জন চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। আর চলতি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫ হাজার ৩১০ জন। মারা গেছেন ৮১ জন ডেঙ্গু রোগী।

এমএ/

রাজধানীতে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সচেতনতামূলক কর্মসূচি

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
রাজধানীতে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সচেতনতামূলক কর্মসূচি
রাজধানীর জোয়ার সাহারায় সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর জোয়ার সাহারায় সড়কে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করেছে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা। সেই সঙ্গে জোয়ার সাহারায় বিআরটিএর ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। কর্মসূচিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা সড়কে চালক ও যাত্রীদের সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিলি করেন। 

চালকদের সঙ্গে ও বিআরটিএর প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে তারা দেখতে পান, ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও সড়ক ব্যবহারের বহু নিয়ম চালকরা ভুলে গেছেন। কোন কোন স্থানে ওভারটেকিং করা যাবে না বা গাড়ি বের করার আগে গাড়ির কোন কোন বিষয় পরীক্ষা করতে হবে- তা তাদের অনেকে ঠিকমতো বলতে পারেননি। নিকুঞ্জ এলাকায় পেশাদার গাড়িচালকদের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ গাড়ি চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু এ ধরনের কেন্দ্র আরও বাড়ানো উচিত। প্রশিক্ষণকেন্দ্রে বিআরটিএর অনলাইন সেবা সংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শন বা ভিডিওচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়নি। গ্রাহকদের অনেকে এখনো জানেন না যে তারা নিজেরাই অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারেন। এ সংক্রান্ত প্রচার আরও বাড়ানো উচিত। 

বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ক মো. মাহমুদুল হাসান জাবের বলেন, ‘বিমানবন্দর সড়কে যেখানে-সেখানে চালকরা বাস দাঁড় করিয়ে রাখেন, গতিসীমা মানেন না। এসব কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলাসহ পাশের উড়াল সেতুতেও যানজট সৃষ্টি হয়। এ কারণে বিআরটিএ, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত অভিযান না চালানোর বিষয়টি দুঃখজনক। সড়কে শৃংখলা রক্ষার জন্য ৩২টি সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীরা এর আগে ২০১৮ সালেও আন্দোলন করেছে। তারা গত ৫ আগস্টের পর থেকে অনেকদিন সড়কে দায়িত্ব পালন করেছে। এখনো বহু স্থানে তারা দায়িত্ব পালন করছে। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থাগুলোকে সুসমন্বিতভাবে অভিযান পরিচালনাসহ সচেতনতামূলক কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে পালন করতে হবে।’

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন রেজওয়ান গাজী মহারাজ, মাহমুদুল হাসান, নেওয়াজ শরীফ, সজীব প্রমূখ।

কর্মসূচি চলাকালে ছাত্ররা বিআরটিএ চত্বরে ‘সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় শিক্ষার্থীরা’ শীর্ষক প্রচারচিত্র উদ্বোধন করেন।

সালমান/

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত: ড. ইউনূস

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত: ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

গতকাল বুধবার (১৩ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। 

সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হতে পারে সে বিষয়েও মতামত তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ধনী দেশগুলো কীভাবে দরিদ্র এবং আক্রান্ত দেশগুলোর সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারে সে বিষয়েও নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন ড. ইউনূস।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে এএফপিকে এ সাক্ষাৎকার দেন তিনি। ইউনূস বলেন, ‘আমরা হলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, আর তাই মেয়াদকাল যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।’ 

বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট মাসে শিক্ষার্থী-জনতার রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর দেশ ত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই আন্দোলনে শিশু-কিশোরসহ প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। এমন উত্তপ্ত এক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেন ড. ইউনূস। বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে তিনি দায়িত্ব নেন। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।

এই প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ‘যেভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা হবে।’ 

নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু না বললেও ড. ইউনূস জানান, কত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেটি নির্ভর করবে কত দ্রুত গণতান্ত্রিক সংস্কার করা হচ্ছে তার ওপর। এ জন্য দ্রুততার সঙ্গে একটি মতৈক্য তৈরির আশা করছেন বলেও জানান তিনি।

‘মাছের বাজারের’ মতো জলবায়ু সম্মেলন

ক্ষুদ্রঋণের পথিকৃৎ ড. ইউনূস জলবায়ু সম্মেলনে আক্রান্ত দেশগুলোর অর্থায়ন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

তিনি বলেন, ‘এটি কোনো গোপন বিষয় নয় যে, ধনী দেশগুলোর উচিত দরিদ্র দেশগুলোকে পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থায়ন করা। এটি এমন নয় যে, আমরা আপনাদের দয়ায় এটি চাইছি। আমরা এই অর্থ চাইছি, কারণ এই সমস্যার মূলে রয়েছেন আপনারা।’

বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনকে তিনি ‘মাছের বাজারের মতো’ বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় বিভিন্ন দেশের কাছে এখানে সমস্যা সমাধানের জন্য সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি অপমানজনক। অথচ এই সমস্যা অন্যরা তৈরি করেছে।’ 

প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কেন দর-কষাকষির জন্য এখানে আনা হবে? আপনারা তো সমস্যাটা জানেন।’ সূত্র: এএফপি

গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ পাবেন আইডি কার্ড

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ পাবেন আইডি কার্ড
গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপদেষ্টারা। ছবি : পিআইডি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে আহত যোদ্ধাদের ইউনিক আইডি কার্ড থাকবে। তারা সব সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সারা জীবন বিনামূল্যে সেবা পাবেন। যেসব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারি চুক্তি থাকবে সেখানেও বিনামূল্যে সেবা পাবেন তারা। আগামী ১৭ নভেম্বরের পর সাপোর্ট সেন্টার থাকবে। সেখান থেকে সব ধরনের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আহতদের চিকিৎসায় সব সরকারি হাসপাতালে বেড ডেডিকেটেড থাকবে। 

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে ছয় উপদেষ্টার সঙ্গে আহতদের বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। 

এদিকে বৈঠকের আগে সচিবালয়ে যাওয়া আহতদের দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। ফলে প্রায় তিন ঘণ্টা পর বৈঠক শুরু হয়। বিকেল সাড়ে চারটার পর উভয় পক্ষ বৈঠকে বসেন। 

গতকাল বুধবার গভীর রাতে চার উপদেষ্টা  জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) গিয়ে আহতদের সঙ্গে ওই বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

৬ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার সঙ্গে ছয় উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী মো. সায়েদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে সাড়ে ৪টায় শুরু হয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে ওই বৈঠক। 

ওই বৈঠকে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, আন্দোলনে শহিদ মুগ্ধ’র যমজ ভাই ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ অংশ নেন। বৈঠকে শতাধিক আহত ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের আগে বাগবিতণ্ডা

অভ্যুত্থানে আহতদের দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বৈঠকটি শুরু হয়।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সচিবালয়ে অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে উপদেষ্টাদের বৈঠকে বসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী আহতরা বৈঠকে আসেন। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগে হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে ‘রক্তিম জুলাই’ নামে আহতদের একটি সংগঠনের নেতাদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করেন।

কিন্তু ছাত্র আন্দোলনকারীরা সম্মেলন কক্ষে তাদের ক্ষোভ জানাতে থাকেন। তারা বলেন, যারা আন্দোলনে ছিলেন না তারা বৈঠকে থাকতে পারবেন না। 

এ সময় সমন্বয়করা বলেন, অভ্যুত্থানের ঘটনায় যারা হতাহত হয়েছেন তারা কেউ আলাদা নন। সবার পরিচয় যোদ্ধা হিসেবে। তাই নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি না করে সরকারের কাছে দাবিগুলো তুলে ধরুন। এভাবে দুই পক্ষের বাগবিতণ্ডা ও তর্কবিতর্কের আড়াই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকটি শুরু হয়।

আহতদের ৭ দাবি

বৈঠকে আহতরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের অতিদ্রুত মন্ত্রী বা উপদেষ্টারা আহত হলে যে মানের চিকিৎসা দেওয়া হতো সে মানের চিকিৎসা দিতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়ে নিজ খরচে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের চিকিৎসা খরচ পরিশোধ করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের সম্মাননা কার্ডের মাধ্যমে একটি প্রজন্ম পর্যন্ত মাসিক ভাতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত যোদ্ধাদের স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামে জাদুঘর নির্মাণ করে প্রতি বছর ১ জুলাই হতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহিদদের স্মরণে গণ-স্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়েছেন ও আহত হয়ে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের মেডিকেল ফাইল তদন্ত করে কোনো ডাক্তার বা মেডিকেলের অবহেলার কারণ খুঁজে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করে সেই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আগামীতে রাষ্ট্র সংস্কারে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধাদের মতামত গ্রহণ করতে হবে

গভীর রাতে নিটোরে ৪ উপদেষ্টা

বুধবার গভীর রাতে চার উপদেষ্টা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) যাওয়ার পর সড়ক ছেড়ে হাসপাতালে ফিরেন জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। গণঅভ্যুত্থানে আহতরা সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে নিটোর সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। বিক্ষোভকারীরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। 

জানা যায়, রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করতে যান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় সহকারী (স্বাস্থ্য) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. সায়েদুর রহমান। দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়ার পর আহত ব্যক্তিরা রাত সোয়া ৩টার দিকে হাসপাতালে ফিরে যান।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বুধবার পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শন করতে যান। তার সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি এ অভিযোগে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় তার পথ আটকে বিক্ষোভ করেন আহত ব্যক্তিরা। আগারগাঁও এলাকায় পঙ্গু হাসপাতাল ও পাশের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি ওই সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

আহত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, আপনাদের কথা শোনার মতো উপযুক্ত সময় এখন নয়। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে। সেই রূপরেখা ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের ব্যর্থতা, আমাদের ভুল আছে। কিন্তু চেষ্টার দিক দিয়ে আমাদের ঘাটতি ছিল না। যেকোনো কারণেই হোক আমরা পারিনি। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন।’

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘একটা ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। বহু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসুন আমরা আলোচনার ভিত্তিতে একটা রূপরেখা তৈরি করি। সেটা ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য আপনারা একটা টিম করবেন।’ 

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সহকারী মো. সায়েদুর রহমান আহত ব্যক্তিদের দেশের সেরা চিকিৎসা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। উপদেষ্টাদের আশ্বাস পেয়ে আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে ফিরতে রাজি হন। তখন উপদেষ্টারা তাদের নিয়ে হাসপাতালে ঢোকেন। রোগীদের হাসপাতালের শয্যায় পৌঁছে দিয়ে পঙ্গু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের দেখে ভোর সোয়া ৪টার পর উপদেষ্টারা বাসার উদ্দেশে যাত্রা করেন।  



আইন উপদেষ্টাকে হেনস্তা, জেনেভার শ্রম কাউন্সেলরকে প্রত্যাহার

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩ পিএম
আইন উপদেষ্টাকে হেনস্তা, জেনেভার শ্রম কাউন্সেলরকে প্রত্যাহার
মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম

সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনায় বাংলাদেশ মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে শিগগিরই ঢাকায় ফিরে আসার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ মিশনের লোকাল স্টাফ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মচারী মিজানের চাকরি ডিসমিসের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ওই ঘটনার তিন মাস্টারমাইন্ডসহ প্রায় সবাইকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান জাতিসংঘ ও পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইংয়ের মহাপরিচালক তৌফিক হাসান। 

তৌফিক হাসান আরও জানান, জেনেভা বিমানবন্দরে আইন, বিচার ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের ভিআইপি হেনস্তার ঘটনা বিদেশের মাটিতে যেন আর না ঘটে সেজন্য চিঠি দিয়ে সব বাংলাদেশ মিশনে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে দূতাবাসগুলোকে দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক করা হয়েছে। 

জেনেভা বিমানবন্দরে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনা গত ১০ নভেম্বর ড. নাশিদ রিজওয়ানা মরিনের সই করা এক আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জেনেভা, সুইজারল্যান্ডে শ্রম কল্যাণ উইংয়ে কর্মরত প্রথম সচিব (শ্রম) মোহাম্মদ কামরুল ইসলামকে প্রশাসনিক কারণে সংশ্লিষ্ট শ্রম কল্যাণ উইং থেকে প্রত্যাহার করা হলো। 

গত ৭ নভেম্বর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জেনেভা সফর শেষে দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দরে কয়েকজন তাকে হেনস্তা করে। একপর্যায়ে হেনস্তাকারীদের জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিতে দেখা যায়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।