রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ ও কয়েকজন শিক্ষকের মধ্যে পদে থাকা নিয়ে বিরোধের জেরে স্কুলের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ক্লাসে থাকা শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এতে তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। শিশু শিক্ষার্থীরা ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিতে আসা গেটের বাইরে অভিভাবদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে।
বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একাধিক অভিভাবক এ প্রতিবেদককে জানান, মর্নিং শিফট ছুটি হওয়ার পর ডে শিফট শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে স্কুলের সদ্য পদচ্যুত অধ্যক্ষ দ্বীন মোহাম্মদ খান দলবল নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চান। এতে বাধা দেন কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এ সময় বাগবিতণ্ডা শুরু হলে স্কুলের ভেতরে থাকা কয়েকজন শিক্ষক মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে মর্নিং শিফট ও ডে শিফটের হাজারও শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করে।
ডে শিফটের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শব্দার্থ আচার্য গদ্যের মা ঝুমকি বসু বলেন, ‘আমিসহ একাধিক অভিভাবক তাদের ছেলেদের বাড়ি নিয়ে আসার জন্য স্কুলে যাই। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর একটা চাপা উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখি। এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ক্লাসের এক শিক্ষক আমাকে আমার ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলিয়ে দেন। তারপরও শঙ্কা কাটেনি। স্কুল ছুটির দুই ঘণ্টা পর আমার ছেলেকে পুলিশের সহায়তায় কাছে পাই।’
আরেক অভিভাবক দাবি করেন, পদচ্যুত অধ্যক্ষ আওয়ামী লীগ সরকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে স্কুলের অধ্যক্ষ দ্বীন মোহাম্মদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত ২৪ বছর ধরে আমি এই স্কুলে দায়িত্ব পালন করছি। গত ৮ সেপ্টেম্বর আমি কিছুদিনের জন্য ছুটিতে যাই। ছুটি শেষে স্কুলে ফিরলে আমাকে জোর করে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি আদালতে গেলে গত মাসে আমার পক্ষে রায় দেন আদালত। রায়ের কাগজ নিয়ে বুধবার দুপুরে স্কুলে ঢুকতে গেলে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আমাকে বাধা দেয়। এ সময় তারা স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে আমি বাসায় ফিরে আসি।’
এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে উল্লেখ করে দ্বীন মোহাম্মদ খান জানান, পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।