চার দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রবিবার শারদীয় দুর্গোৎসবের পঞ্চম দিনে মর্ত্যলোক থেকে বিদায় নেন দেবী দুর্গা। বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বের হয় শোভাযাত্রা। এটি শেষ হয় পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে গিয়ে। সেখানে হয় প্রতিমা বিসর্জন।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে প্রতিমা আসতে থাকে ওয়াইজঘাটের বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে। ঢাকের তালে নেচে-গেয়ে প্রতিমা নিয়ে আসেন ভক্তরা। বিষাদময় এক আনন্দে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেন তারা। বিসর্জন ঘিরে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, নৌ-পুলিশ ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন টিম ও সোয়াট দল সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর আগে দুপুর ২টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে শঙ্খ, উলুধ্বনি আর ঢাকঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে দেবী বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা করে বুড়িগঙ্গা তীরে আসেন পুণ্যার্থীরা। ঢাকার বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদ হাজারও মানুষের শোভাযাত্রা নিয়ে আসে সেখানে।
তার আগে দুর্গাপূজায় সবশেষ রীতিতে সকাল থেকে চলে ‘দেবী বরণ’। এটি শুরু হয় বিবাহিত নারীদের সিঁদুর খেলার মাধ্যমে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা নিজ কপালে সিঁদুর লাগান। সেই সিঁদুরের কিছু অংশ দিয়ে দেবীর চরণ স্পর্শ করে থাকেন। বিবাহিত নারীরা সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গা দেবীকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর একে-অপরকে সিঁদুর মাখিয়ে দেন। বিসর্জনের আগ পর্যন্ত তারা একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে মিষ্টিমুখ করেন, নাচ, গান করেন, যেন সারাটা বছর এমন আনন্দেই কাটে দুর্গা ভক্তদের। এই সিঁদুর খেলা বিবাহিত নারীদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলেও সবাই মণ্ডপে ভিড় করেন, নেচে গেয়ে এতে অংশ নেন। অবিবাহিতরা গালে আর হাতে মাখেন সিঁদুর।
এবার ২ অক্টোবর মহালয়া থেকে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আসার ঘণ্টা বাজে। ষষ্ঠীতে তিনি ভক্তদের মাঝে অধিষ্ঠিত হন। আর দশমীতে তিনি কৈলাশে চলে যান। একই দিনে তিথি থাকায় দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার নবমীর সকালেই। গতকাল হয় প্রতিমা বিসর্জন।
কক্সবাজারে প্রতিমা বিসর্জনে সৈকতে লাখো মানুষ
কক্সবাজার প্রতিনিধি: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে দেশের ‘সর্ববৃহৎ’ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। এই বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে জেলাজুড়ে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর থেকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠান শুরু হয়। কক্সবাজার জেলা ও আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক মণ্ডপের প্রতিমা আসতে শুরু করে সৈকতে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শুরু হয় বিসর্জন। যা ঘিরে পর্যটক ও পূজারি মিলে লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম ঘটে সৈকতে। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মসহ সকল ধর্মের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় সৈকত এলাকা।
কক্সবাজারে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, পূজারি মিলে লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জন উৎসব নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন সবরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছে। প্রতিমা বিসর্জনে দুর্ঘটনা এড়াতে মহড়ায় থাকবে নৌবাহিনীর সোয়াট কমান্ড।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর উদয় শংকর পাল মিঠু বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। পূজারিরা আসতে শুরু করেছে। ২টার দিকে অনুষ্ঠানের স্থলে প্রতিমা আনা হয়।
নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে জানিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই নেতা আরও বলেন, 'প্রতি বছরের মতো এবছরও উৎসবমূখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন দিতে পেরেছি। তাতেই সবাই অনেক খুশি।
কক্সবাজার পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক দীপক শর্মা দীপুর সঞ্চালনায় বিসর্জন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, 'জেলা প্রশাসক মো. সালাউদ্দিন, কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল, জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নাসহ অন্যান্যরা।
অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রতিমা বিসর্জন পতেঙ্গায়
চট্টগ্রাম ব্যুরো: শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে উৎসবমূখর পরিবেশে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। মহানগর ও দূরদূরান্ত থেকে ট্রাকে প্রতিমা নিয়ে পতেঙ্গা সৈকতে আসেন ভক্তরা। দেবীদুর্গার শেষ বিদায়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে অনেকেই শেষবারের মতো প্রতিমাকে ভক্তি শ্রদ্ধা ও প্রণাম নিবেদন করতে দেখা যায়।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বা চসিকের উদ্যেগে পতেঙ্গার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হয় বির্সজন চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। এ উপলক্ষ্যে তিলধারণের ঠাঁই নেই পতেঙ্গা সৈকত এলাকায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনীর উদ্যেগে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সরেজমিনের দেখা যায়, পতেঙ্গা টানেল গোলচত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রতিমার গাড়ি ছাড়া অন্যান্য যানবাহন যেতে দেওয়া হচ্ছে না। হালিশহর ভেঁড়িবাধ সড়ক বা আউটার রিং রোডে সর্বসাধারণের গাড়ি চলাচলে সীমাবদ্ধতা করা হয়েছে। ওই সড়কে বিভিন্ন স্থানের পুলিশের চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। ট্রাকে ট্রাকে প্রতিমা নিয়ে ভক্তরা পতেঙ্গার দিকে আসতে দেখা যায়। কেউ ঢাক বাজিয়ে, কেউ নিত্য করে, কেউ সাউন্ডবক্সে বাদ্যবাজনা ওি গান বাজিয়ে প্রতিমার ট্রাক আসছে পতেঙ্গায়।
প্রতিমা বিসর্জনকে নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ্য করে পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (বন্দর) ডেপুটি কমিশনার শাকিলা সোলতানা খবরের কাগজকে বলেন, কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা ছাড়ায় সুষ্টু সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। চট্টগ্রামের মহানগরের বিভিন্ন পূজামন্ডপ ছাড়াও উপজেলা থেকেও গাড়ি নিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য আসে পতেঙ্গায়। সবগুলো গাড়ির সিরিয়াল করে বিসর্জনের লাইনে রাখা হচ্ছে। গাড়ি থেকে ধীরে ধীরে প্রতিমা নামিয়ে সমুদ্রের পানিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে পূজার্থীরা সমুদ্রের পানিতে ফেলে বিসর্জন দিচ্ছেন প্রতিমা।
পতেঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন দিতে এসে নগরের পাথরঘাটা সার্বজনীন পূজা উৎযাপন কমিটির সদস্য জুয়েল চৌধুরী বলেন, সকাল থেকে চট্টগ্রামের মণ্ডপে মণ্ডপে চলছিল বিষাদের সুর। মা-দুর্গাকে শেষ দেখা দেখে অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় দেয় ভক্তরা। আমরা এসেছি বিসর্জন দিতে।
দক্ষিণ নালাপাড়া পূজা মণ্ডপের উদযাপন কমিটির সভাপতি অষিত সেন খবরে কাগজকে বলেন, চট্টগ্রাম শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎযাপন সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় আমাদের প্রতিমা বিসর্জন করেছি। আমরা কল্পনাও করতে পারি নাই এভাবে এত সুন্দর ভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা করতে পারবো। সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারায় আমি বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
বিকালে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২৪ উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই বিধায় সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা করতে পারছেন ।
এ সময় চসিক প্রশাসক আরও বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিময় সম্প্রীতির জনপদ। এখানে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচরণ পালনের অধিকার আছে। এদেশে ধর্মীয় কোন ভেদাভেদ নেই। ধর্ম বর্ণ, নির্বিশেষে সবাই ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃত ধার্মিক ও মানবিক মানুষের সুদৃঢ় ঐক্যে শান্তির বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও শারদীয় দূর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে পূজামণ্ডপে পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন, পানীয়-জলের ব্যবস্থা এবং পূজার্থীদের নিরাপত্তাসহ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা নিরঞ্জনের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জির সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিখিল চন্দ্র নাথ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর ডা. মোহাম্মদ নুরুল আবসার, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী অনিক দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশুতোষ দাশ।
এদিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ছাড়াও পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকায়, কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত সহ চট্টগ্রাম জেলা বিভিন্ন উপজেলায় নদী বা পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে প্রতিমা।
ফেনীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গাপূজা
ফেনী প্রতিনিধি: উলুধ্বনি, শাঁখ আর ঢাকের বাদ্যে মুখরিত ফেনীর কালিপাল দশমি ঘাট। মঙ্গলধ্বনির সঙ্গে থেকে থেকে শোনা যাচ্ছে হাজার মানুষের আহ্বান ‘আসছে বছর আবার হবে, মা তুমি আবার এসো’।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, ফেনী পৌরসভার প্রশাসক ডিডিএলজি গোলাম মোহাম্মদ বাতেন।
ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি হীরা লাল চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন, সাধারণ সম্পাদক লিটন দাস, পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা এডভোকেট প্রিয়রঞ্জন দত্ত।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো ফেনীর কালী পালের দশমী ঘাট যেন এক মহা উৎসবে রূপ নিয়েছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, জেলায় ১৪৬টি মণ্ডপের মধ্যে ফেনী সদরে ৪৬টি, পৌরসভা ১২টি, ফুলগাজী উপজেলায় ৩৫টি, সোনাগাজীতে ২৩টি, দাগনভূঞায় ১৯টি, পরশুরামে ৫টি ও ছাগলনাইয়ায় ৭টি।
টাঙ্গাইলে প্রতিমা বিসর্জন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) দেবী মর্ত্যলোক ছেড়ে বিদায় নেবেন। অশ্রুসজল চোখে প্রতিমা বিসর্জন করবেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ, ভাঙবে তাদের মিলনমেলা।
বিজয়া দশমীতে সারাদেশের মতো টাঙ্গাইলও আয়োজকরা সন্ধ্যায় শহরের বড় পুকুরে বিজয়ার শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা বিসর্জন দেন।
এদিকে, বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী।
টাঙ্গাইল পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ গুন ঝন্টু বলেন, পুজা চলাকালীন সময়ে টাঙ্গাইলে কোথাও কোন সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জ্জন করিলাম। আমরা আজকে বিকালে শুনতে পেয়েছি কালিহাতীতে একজন যুবক নৌকা দূর্ঘটনায় মারা গেছে। আমরা শোক প্রকাশ করছি পরিবারের প্রতি।
ধামরাইয়ে প্রতিমা বিসর্জন
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি: সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা। করুণ সুরে উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে ঢাকার ধামরাইয়ে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। প্রতিমা বিসর্জনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ, ফায়ারসার্ভিস ও বেসরকারি সংগঠন 'নিরাপদ সড়ক চাই' এর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে মাধববাড়ি ঘাটে প্রথম ডাক্তার অজিত কুমার এর বাড়ির প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন শুরু করেন।
জানা যায়, ধামরাই উপজেলায় ১৯৭টি মণ্ডপে পূজা উৎযাপন করা হয়েছে। কিন্তু আজ রবিবার ১৭৭টি প্রতিমা বিসর্জন করা হবে। বাকি ১৯টি প্রতিমা পরবর্তীতে বিসর্জন দিবেন ওই ১৯টি মন্দির কমিটির লোকজন। তবে মাধব বাড়ি এলাকার সুকান্ত বনিকের বাড়ির প্রতিমা মেটালের তৈরি বলে বিসর্জন দেওয়া হয় না।
বিসর্জনের সময় ঢাকের তালে ও করুণ সুরে উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেন। কয়েক হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের শিশু থেকে নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গও ছিলেন মাধব বাড়ি প্রতিমা বিসর্জনের ঘাটে।
ধামরাই ফায়ারসার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. সোহেল রানা বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আমাদের কর্মীরা সব সময় তৈরি আছে।
নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই শাখার সভাপতি এম নাহিদ মিয়া বলেন, পূজার শুরু থেকেই নিরাপদ সড়ক চাই এর সদস্যরা মণ্ডপে মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য কাজ করেছে। পূজার সময় রাস্তায় যেন যানযট না লাগে বিশেষ করে পৌরসভার ভিতরে সেই জন্য বাজার, রাস্তায় আমাদের সদস্যরা ছিল।
ঢাকা জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলেন, এ বছরই সবচেয়ে সুন্দরভাবে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছি। শুরু থেকেই কোন প্রকার শঙ্কা ছিল না। পুলিশ, সেনাবাহিনী, আনসারসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সব সময় পাশে ছিল।