বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে বহুল আলোচিত ‘বাধ্যতামূলক ব্যাংকিং ডিপ্লোমা’ তুলে দেওয়ার নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা (সিইও)।
তবে ডিপ্লোমাধারীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫ নম্বর যোগ করা যেতে পারে বলেও অভিমত দিয়েছেন তারা।
সোমবার (১১ নভেম্বর) গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে তার কার্যালয়ে এক অনির্ধারিত বৈঠকে এমডি ও সিইওরা এ দাবি জানান বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা শিখা।
মুখপাত্র আরও জানান, এ দাবির বিষয়ে প্রয়োজনে একটি কমিটি গঠন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও এমডি ও সিইওরা উল্লেখ করেছেন। জবাবে গভর্নর তাদের তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। গভর্নর এ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে মুখপাত্র জানান।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই নিয়ম আরোপের পর গত দুই বছরে অসংখ্য কর্মকর্তা পেশাগত জ্যেষ্ঠতা ও দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার নিরসন করতেই এমডি ও সিইওরা নতুন করে প্রস্তাবনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, ওই সভায় বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ, রিজার্ভ ও বিনিময় হার সম্পর্কিত পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। শীর্ষ ব্যাংকাররা এ সময় গভর্নরকে জানান, এই মুহূর্তে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই এবং আগামী জানুয়ারি নাগাদ পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।
মুখপাত্র জানান, যেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে আমদানি দায় পরিশোধে দেরি করার অভিযোগ রয়েছে, সেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে নতুন ঋণপত্র খোলার অনুমোদন বন্ধ করে দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সতর্ক করে দেন গভর্নর।
মুখপাত্র জানান, গভর্নর এমডি ও সিইওদের অনুরোধ করেন যে সচ্ছল ব্যাংকগুলো তারল্যসংকটে ভুগতে থাকা ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করতে যেন এগিয়ে আসে। এ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিশ্রুত গ্যারান্টি কার্যকর রাখা হয়েছে। তারল্য সহায়তা পেলে দুর্বল ব্যাংকগুলো নিজেদের উন্নয়নের সুযোগ পাবে এবং ব্যাংকিং খাত নিয়ে সৃষ্ট নেতিবাচক ধারণার অবসান হবে।
সভায় সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী, ব্র্যাক, এনসিসি, এমটিবি, যমুনা ব্যাংকসহ আরও ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি ও সিইওরা যোগ দেন বলে মুখপাত্র জানিয়েছেন।