ঢাকা ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম
বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ
বিশ্ব খাদ্য দিবস। প্রতীকী ছবি

আজ ১৬ অক্টোবর, বিশ্ব খাদ্য দিবস। দিবসটির উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলা। কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচিতে পালিত হবে দিবসটি।

খাদ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার’।

এ ইপলক্ষে বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। 

কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

দেশের ২০ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।

সিলেট ও বরিশাল অঞ্চলে এ হার সবচেয়ে বেশি (২৪ শতাংশ)। 

এতে আরও বলা হয়, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে প্রয়োজনের চেয়ে কম খাদ্য গ্রহণ করছে দেশের ৩০ শতাংশ জনগোষ্ঠী। 

দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে কম খাচ্ছেন।

দেশের আট বিভাগের এক হাজার ২০০ জনের ওপর পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে জাতিসংঘ বলেছে, সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষি ও অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি হয়েছে।

জাতিসংঘের জরিপ বলে, খাদ্য কেনার জন্য ৪২ শতাংশ মানুষকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ করতে হচ্ছে। আর খাবার কেনার খরচ মেটাতে গিয়ে স্বাস্থ্য ব্যয় কমিয়েছেন ২৬ শতাংশ মানুষ।

সবশেষ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। আর এসব মানুষের মধ্যে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা সবচেয়ে বেশি।

অন্যদিকে বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে তিন ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ক্ষুধা মেটানোর সক্ষমতার দিক দিয়ে ১২৭টি দেশের মধ্যে চলতি বছর বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম। সূচকমতে, বর্তমানে ‘মাঝারি মাত্রার’ ক্ষুধা মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ। গত ১১ অক্টোবর গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) বা বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

অমিয়/

প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন যাচ্ছেন ৯ জুন

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম
আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম
প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন যাচ্ছেন ৯ জুন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে আগামী ৯ জুন লন্ডন যাচ্ছেন। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে কিংস চার্লস হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া তিনি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকে সে দেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।

প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফর নিয়ে বুধবার (৪ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার এই সফর চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সহায়তা করবে। এতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী এবং দুই দেশের অর্থনীতি সচল হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১২ জুন বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস। ওইদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে কিংস চার্লস হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন ড. ইউনূস। আগামী ১১ জুন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এ ছাড়া সফরকালে তিনি যুক্তরাজ্যের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউস আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেবেন।

গত সরকারের যেসব নেতা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন, তাদের ফেরানোর বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমাদের এ মুহূর্তে প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার। আমরা ব্যক্তি বিষয়ে যতটা বেশি পদক্ষেপ নিচ্ছি, তার চেয়ে বেশি পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করাটা বেশি জরুরি। আমরা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সব দেশের সঙ্গে চেষ্টা করে যাচ্ছি। তার অংশ হিসেবে অবশ্যই যুক্তরাজ্যে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিষয়টি উপস্থাপন করব।’ 

পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যেসব দেশে বাংলাদেশের অর্থ পাচার হয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে এমএলএ (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স) আওতায় আমরা কাজ করছি। এসব বিষয়ে সময়ের স্বল্পতার কারণে সর্বোচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ে এত বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ থাকে না। সে জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো ছাড়া আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কোনো সমঝোতা স্মারক বা কোনো চুক্তি হচ্ছে না বলেও জানান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। লন্ডন সফর শেষে ১৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় ৩ সদস্যের কমিটি

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫, ০২:১৭ পিএম
চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় ৩ সদস্যের কমিটি
চাকরি অধ্যাদেশে পর্যালোচনায় গঠিত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আন্দোলন করে আসছে বাংলাদেশ সচিবালয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত ঐক্য ফোরাম। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও আন্দোলনরত সংগঠনসমূহের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বুধবার (৪ জুন) ওই কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।

প্রজ্ঞাপনে কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিবকে বলা হয়েছে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

উল্লেখ্য, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে- এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ জারি করা হয়। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:১০ পিএম
টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ
টিউলিপ সিদ্দিক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশে ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া শ্যামলীর রিং রোডে জনতা হাউজিং সোসাইটিতে টিউলিপের নামে থাকা একটি ফ্ল্যাটের রাজউকের কাগজপত্রও জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (৪ জুন) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনুসন্ধানের প্রয়োজনে কর্মকর্তা চাইলে যেকোনো আয়কর নথি জব্দ করে যাচাই করতে পারেন।’

সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দায়ের করা মামলায় জব্দ করা এসব নথিতে ‘ঘুষ’ হিসেবে নেওয়া ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ঢাকার গুলশানের ফ্ল্যাটের তথ্য রয়েছে।

গত মঙ্গলবার দুদকের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন কর অঞ্চল-৬-এর অধীন কর সার্কেল-১২২-এর উপকর কমিশনারের কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার এসব নথি জব্দ করেন।

জব্দ করা আয়কর নথিতে ২০০৬-০৭ করবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত দাখিল করা রিটার্ন এবং সংশ্লিষ্ট নথি সংযুক্তি রয়েছে। মোট ৮৭টি পৃষ্ঠার এসব নথির মধ্যে ২০০৬-১৫ করবর্ষ পর্যন্ত প্রতিটি আয়কর রিটার্নে ‘অ্যাডভান্স টুওয়ার্ডস ডেভেলপার্স’ শিরোনামে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য রয়েছে।

২০১৫-১৬ করবর্ষে গুলশানের ফ্ল্যাটটি তার ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিককে হেবা (দান) হিসেবে দেওয়ার তথ্য দেওয়া হয়, যার একটি নোটারি করা দলিল (রেজি. নং-০১, তারিখ ২১-০৬-২০১৫) সংশ্লিষ্ট নথিতে সংযুক্ত আছে। তবে ২০১৮-১৯ করবর্ষের পর থেকে টিউলিপ সিদ্দিক আর কোনো আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি বলে নথিতে বলা হয়েছে।

ঢাকার গুলশানের একটি প্লট ‘অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা’ করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুষ’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করে দুদক।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড থেকে ৭১ নম্বর রোডের ১১এ, ১১বি ফ্ল্যাটটি (পুরোনো ঠিকানা- ফ্ল্যাট নম্বর বি/২০১, বাড়ি নম্বর ৫এ ও ৫বি) কোনো টাকা পরিশোধ না করেই তিনি নিয়েছেন।

এ মামলায় রাজউকের দুই কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে, যারা রেজিস্ট্রির মাধ্যমে মালিকানা গ্রহণে টিউলিপকে সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
ঢাকা ও যুক্তরাজ্যে ফ্ল্যাট ও প্লটে ‘অনিয়ম’ এবং প্রকল্পে ‘দুর্নীতির’ তালিকায় নাম আসা টিউলিপের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান ২ নম্বরের এ ফ্ল্যাটের অভিযোগের অনুসন্ধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ওই প্লটের হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে।

গত ১৩ এপ্রিল ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচলে ৩০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

টিউলিপ যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তবে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন।

রেলে উপচেপড়া ভিড়, কমলাপুরে চরম অব্যবস্থাপনা

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম
আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
রেলে উপচেপড়া ভিড়, কমলাপুরে চরম অব্যবস্থাপনা
দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহা উপলক্ষে রেলযাত্রার ষষ্ঠ দিনে কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। ভিড় সামলাতে গিয়ে স্টেশনের সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোর থেকে স্টেশনে এ দৃশ্য দেখা যায়। 

রেলওয়ের নিরাপত্তা কর্মী (আরএনবি), রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি),  র‍্যাব সদস্যদের যথেষ্ট উপস্থিতি থাকলেও তারা উচ্ছৃঙ্খল যাত্রীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষার জন্য তিন স্তরের তল্লাশি ব্যবস্থা থাকলেও বৃহস্পতিবার সকালে তা অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। 

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অনেক পরিশ্রম করেও বিনা টিকিটের যাত্রী ঠেকাতে পারছেন না। তারা বেশ কয়েকজন যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে জরিমানা করলেও তাদের যাত্রা বাতিল হয়নি। 

রেলের কর্মীদের উৎকোচ দিয়ে তারা ট্রেনে উঠে পড়েছেন। জরিমানার পরে কেউ কেউ আবার ট্রেনের ছাদেও উঠে গেছেন। 

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ২৩টি আন্তঃনগর ও কমিউটার ট্রেন ছেড়ে গেছে।

রেলের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিষেধ থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি ট্রেনের পাওয়ার কার ও বুফেকারে ঠেসে যাত্রী তোলা হয়েছে। মেইল, কমিউটার, আন্তঃনগর- সব ট্রেনের ছাদে যাত্রী উঠেছেন। এদের সবাই বিনা টিকিটের যাত্রী। 

জিআরপি পুলিশের দলগুলো যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উচ্ছৃঙ্খল যাত্রীরা উল্টো তাদের দিকে তেড়ে এসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, সাড়ে ৬টার দিকে নীলফামারীর চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস, সকাল ৭টায় সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ও সাড়ে ১১টায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, সকাল সাড়ে ১০টায় পঞ্চগড়গামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এবং পরে লালমনিরহাটগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস, ভুয়াপুরগামী জামালপুর এক্সপ্রেস, রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো অন্তত ৩০ মিনিট দেরিতে প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে বলে জানা গেছে। 

যাত্রীদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, বগির ফ্যান ঘুরছে না। ওয়াশরুমের বিকট গন্ধে দরজার পাশের সিটের যাত্রীরা নাকে রুমাল দিয়েও টিকতে পারছেন না। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিতে এসি নষ্ট হয়ে আছে। 

আবার বিনা টিকিট বা ভুয়া টিকিটের যাত্রী আসন দখল করায় ট্রেনের কামরায় হাতাহাতির খবরও পাওয়া গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. সাজেদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘কমলাপুরে যে যাত্রী চাপ রয়েছে, ট্রেনগুলো ওয়াশপিটে নিয়ে ওয়াশ করে লোকোশেডে গিয়ে প্রতিটি বগি পরীক্ষা করে প্ল্যাটফর্মে দিতে গেলে অনেক সময় লেগে যাবে। তাই কিছুটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ট্রেনগুলো ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এতে আমার কিছুটা ত্রুটি থেকে যায়।’ 

অভিযোগ রয়েছে, মেইল, কমিউটার ট্রেনে একটি আসনের বিপরীতে চারটি আসনের টিকিট কাটতে বাধ্য করা হচ্ছে যাত্রীদের। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আর ভ্রাম্যমাণ আদালতেও এমন কেউ এসে কোনো অভিযোগ জানাননি।’ 

রেলের স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রীদের বিভিন্ন ট্রেনে যাওয়ার কথা। কিন্তু তারা প্ল্যাটফর্মে যে ট্রেনটি প্রথমে পাচ্ছেন, সে ট্রেনটিতে উঠার চেষ্টা করছেন। এতে একটি ট্রেনের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে হচ্ছে। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ না করতে আমরা যতই অনুরোধ করি না কেন, যাত্রীরা তা শুনবেন না। ছাদে ভ্রমণ ঠেকাতে আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকলেও তা শতভাগ সফল হয়নি। এখানে আমাদের ব্যর্থতা থেকেই যায়।’ 

সাজেদুল জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে সারা দিনে ৬৩টি আন্তঃনগর ও কমিউটার ট্রেন ছেড়ে যাবে। 

ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ৬৫ হাজার যাত্রী রেলপথে বাড়ি ফিরছেন বলে জানান তিনি। 

এদিকে, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। এ সময় তিনি রেলযাত্রার সার্বিক চিত্র দেখে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তখন অনেক যাত্রী তাকে রেলপথের দুর্ভোগের কথা জানান।

পরে ব্রিফিংয়ে সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আজ সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো রেলের ছাদে কেন এত মানুষ ভ্রমণ করবেন। আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে সব ব্যবস্থা নিয়েছিলাম ছাদে যাত্রী উঠা ঠেকাতে। কিন্তু ঈদযাত্রার সময় বিষয়টা মানবিকও কিছুটা। কোনো এক যাত্রী ছাদে উঠে নামতে চাইলেন না। আমরা তাকে নির্যাতন করে নামিয়ে দিলাম। তখন তো আপনারাই (সাংবাদিকরা) নিউজ করবেন।
 
এবার ঈদযাত্রায় রেলওয়েতে ৪০টি অতিরিক্ত কোচ বিভিন্ন ট্রেনে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেনও পরিচালনা করা হচ্ছে৷

তবুও রেলযাত্রায় যাত্রীদের অস্বস্তির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, এবারের ঈদযাত্রা শতভাগ স্বস্তির হয়েছে এ কথা বলা যাবে না। রেলে লোকোমোটিভ নেই, কোচ নেই। তার পরও আমরা ট্রেনের বগির সংখ্যা বাড়িয়েছি। সামনে আমাদের আর কিছু বগি, লোকো আসবে। সামনের ঈদে হয়তো আরও ভাল সেবা দিতে পারবে রেলওয়ে।

জয়ন্ত/পপি/

মাইজভাণ্ডারি ট্রাস্টের উদ্যােগে ডায়ালাইসিস সুবিধা বাড়ছে চমেক হাসপাতালে

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
মাইজভাণ্ডারি ট্রাস্টের উদ্যােগে ডায়ালাইসিস সুবিধা বাড়ছে চমেক হাসপাতালে
ছবি: সংগৃহীত

শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (রহ.) ট্রাস্টের বদৌলতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা আরও বাড়ছে। এতে এখন থেকে আরও নিরবচ্ছিন্ন সেবা পাবেন কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগীরা। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগে যুক্ত হচ্ছে আরও তিনটি নতুন ডায়ালাইসিস মেশিন। এর ফলে কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস সেবার পরিধি বাড়বে এবং অপেক্ষমাণ রোগীদের ভোগান্তিও কমবে।

বুধবার (৪ জুন) দুপুরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (র.) ট্রাস্ট তাদের অর্থায়নে শয্যাসহ তিনটি ডায়ালাইসিস মেশিন, ডায়ালাইজার, ব্লাড লাইন এবং ডায়ালাইসিস এক্সেসরিজ প্রদান করে। যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৫৫ লাখ টাকা।

এগুলো দিয়ে এক হাজার রোগী ডায়ালাইসিস করতে পারবেন। ইতোমধ্যে হাসপাতালের তৃতীয় তলার ১৭ নম্বর নেফ্রোলজি বিভাগে এগুলো স্থাপন করা হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এসব মেশিন উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন, নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা, ট্রাস্টের সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এম ডি জাফর, ট্রাস্টের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, ডা. মোনায়েম ফরহাদ, আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিয়াসাদ শাহাবুদ্দিন, আবাসিক সার্জন ডা. মাইমুন রিদয়ান, ডা. ইব্রাহিম, ডা. মামুন, ডা. সামিউল করিমসহ হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক ও ট্রাস্টের কর্মকর্তারা।

বর্তমানে চমেক হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে ১৯টি ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি সচল। বাকি চারটি মেশিনের ত্রুটি মেরামতের কাজ চলমান। নতুন এই তিনটি মেশিন যুক্ত হওয়ায় ওয়ার্ডটিতে মোট ডায়ালাইসিস মেশিনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২টিতে। তবে বর্তমানে নতুন মেশিনসহ সচল আছে ১৪টি। নতুন তিনটি মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ২৫ জন রোগী অতিরিক্ত সেবা পাবেন। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন জানান, রোগীদের চাপ অনেক বেশি। নতুন মেশিন যুক্ত হওয়ায় অপেক্ষমাণ রোগীদের সেবা দিতে আরও সক্ষম হব। জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (র.) ট্রাস্টের এই মহতী উদ্যোগের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

ট্রাস্টের সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এম জাফর বলেন, মানুষের সেবাই আমাদের লক্ষ্য। কিডনি রোগীরা অনেক কষ্টে দিন পার করেন। অনেকে অর্থাভাবে ডায়ালাইসিস করাতে পারেন না। তাই আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। সামর্থ্যবান সবাই এগিয়ে এলে আরও অনেকের উপকার হবে। এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা থাকবে।

অমিয়/