ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

৭ ব্যাংক থেকে ঋণ ৪১ হাজার ৭৬৯ কোটি সালমানের অভ্যাস ঋণ পরিশোধ না করা

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০০ এএম
আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫১ পিএম
সালমানের অভ্যাস ঋণ পরিশোধ না করা
আওয়ামী লীগ সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান। ছবি : সংগৃহীত

দেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণখেলাপি এবং পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান সরকারি-বেসরকারি সাত ব্যাংক থেকে মোট ৪১ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা ঋণ করেছেন। নানা ফন্দি করে নতুন নতুন আইডিয়া দিয়ে ঋণ নেওয়া ছিল তার নেশা। প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির নামে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় বিপুল অঙ্কের মুনাফা করা সত্ত্বেও তার ঋণ পরিশোধের ইতিহাস অনিয়মিত। ফলে তার প্রতিটি ঋণই মেয়াদোত্তীর্ণ ও খেলাপি হয়ে পড়েছে।

দেশের প্রথমদিকের শিল্প গ্রুপ বেক্সিমকোর মালিক হওয়ার সুবাদে তিনি বিগত সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরে রাজনৈতিকভাবে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী হয়ে ওঠেন। আর এ প্রভাব কাজে লাগিয়ে তার মালিকানাধীন নানা প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ছিল তার নেশা। এ কাজে তিনি সরকারের মন্ত্রী, ব্যাংক চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের সহায়তা নিতেন। বেক্সিমকো গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি থাকা সত্ত্বেও সেগুলোসহ নামে-বেনামে নানা কোম্পানির জন্য তিনি ঋণ করেছেন। তার এই অস্বাভাবিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধ না করার বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে শুরু করে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার দাপটের সামনে কোনো প্রতিবাদ বা ঋণ অনুমোদন না করার সাহস পেত না। সর্বদা সাদা দাড়ি-গোঁফ ও সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে সরকারের শীর্ষ পর্যায়সহ মন্ত্রী-আমলা ও সরকার ঘনিষ্ঠ রাজনীতিক-ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সব সময় ওঠাবসা করায় তিনি লোকমুখে ‘দরবেশ’ নামে পরিচিত ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগে এতগুলো ভালো কোম্পানির মালিক হওয়া সত্ত্বেও এত টাকা ঋণ নিয়ে কী করতেন ‘দরবেশ সাহেব’!

গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে দেশে থাকা তার ঘনিষ্ঠজনরাও আত্মগোপনে চলে যান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের মূল ভিত্তি ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে রেহাই পেতে চেষ্টা করেন। এদের মধ্যে সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক একসঙ্গে ধরা পড়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এ সময় দেখা যায় ‘দরবেশ সাহেব’ দাড়ি-গোঁফ কামিয়ে ফেলেছেন। এরপর থেকে অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তার নেতৃত্বাধীন আইএফআইসি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা এতদিন প্রবেশ করতে পারেনি তাদের কেউ কেউ অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘দরবেশ সাহেবে’র ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছেন। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংকে বারবার যোগাযোগ করেও তার ঋণের প্রকৃত পরিমাণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অনানুষ্ঠানিক তথ্য অনুযায়ী ‘দরবেশ সাহেবে’র ঋণ রয়েছে দেশের সরকারি বেসরকারি সাতটি ব্যাংকে। এগুলো হলো রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী এবং বেসরকারি ন্যাশনাল, আইএফআইসি ও এবি (আরব-বাংলাদেশ) ব্যাংক। এর বাইরে বেসরকারি প্রাইম, শাহজালাল ইসলামী ও সাউথইস্ট ব্যাংকে তার ঋণ থাকলেও তার পরিমাণ জানা যায়নি।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, তার ঋণের পরিমাণ জনতা ব্যাংকে ২৩ হাজার কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকে ১ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকে ১ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকে ৯৬৫ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকে ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে ১১ হাজার কোটি টাকা এবং এবি ব্যাংকে ৬০৫ কোটি টাকা। ‘দরবেশ সাহেব’ তার প্রতিষ্ঠিত ভালো কোম্পানিসহ নামে-বেনামে নানা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে এসব ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠজনদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, সম্মান-সমীহ ব্যাপারটা ‘দরবেশ সাহেব’ খুব পছন্দ করতেন। তার সঙ্গে কেউ নিজেকে অধীন ও বিশ্বস্ততা দেখাতে পারলে তাকেই তিনি একটি ব্যবসার আইডিয়া দিতেন। আর বলে দিতেন, টাকা নেই, চিন্তা করো না। আমি অমুক ব্যাংকে বলে দিচ্ছি। আবেদন কর। ঋণ হয়ে যাবে। এসব ‘সাময়িক ধারণা’র প্রতিষ্ঠানে তাকে অংশীদার করা হলে তিনি সানন্দে ঋণের ব্যবস্থা করে দিতেন। এভাবেই তার নিজের ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকের তহবিল নেওয়া হতো বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের সূত্র ধরে কর্মকর্তাদের একজন খবরের কাগজকে জানান, শুধু জনতা ব্যাংকেই বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। বেক্সিমকোকে ঋণ দিয়ে রাষ্ট্রের একটি ভালো ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকটে ভুগছে। একক গ্রাহক ঋণসীমা মানা হয়নি বেক্সিমকোকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে।

২০১০ সালে সালমান রাতারাতি আইএফআইসি ব্যাংক দখলে নেন। এরপর নানা প্রতিষ্ঠানের নামে যে ঋণ নেন তার পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকে বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও বেক্সিমকো কমিউনিকেশন লিমিটেডের ঋণ দাঁড়িয়েছে মোট ১ হাজার ৪০৯ কোটি। ন্যাশনাল ব্যাংকে বেক্সিমকোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্লুম সাকসেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ৮৩৬ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকটিতে বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণ ৮২৩ কোটি টাকা এবং বেক্সিমকো এলপিজির ঋণ ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা রয়েছে। বেসরকারি এবি ব্যাংকে বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণ রয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, এসব ঋণ খেলাপি হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও অধিকাংশ ব্যাংক তা করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকও এ ব্যাপারে মৌন ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন মুখপাত্রকে এই ব্যাপারে বিস্তারিত চেয়ে টেক্স্ট পাঠানো ও ফোনে যোগাযোগ করা হলেও গত এক সপ্তাহে তারা কোনো সাড়া দেননি।

 

খিলক্ষেত-কুড়িল সড়ক ২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
খিলক্ষেত-কুড়িল সড়ক ২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে
ছবি: সংগৃহীত

এমআরটি লাইন-১ এর ইউটিলিটি স্থানান্তর কাজের জন্য ২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে খিলক্ষেত থেকে কুড়িল-বসুন্ধরামুখী সড়ক। এ সময় বিকল্প পথ ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ জানান ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-১) প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কাসেম ভূঞা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমআরটি লাইন-১ এর ইউটিলিটি স্থানান্তর কাজের জন্য ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১৮ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত (মোট ২৯ ঘণ্টা) খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ও বসুন্ধরা অভিমুখী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এসময় বিকল্প হিসেবে রেডিসন হোটেলের সম্মুখে ইউটার্ন করে কুড়িল ফ্লাইওভার অথবা অন্য বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

জয়ন্ত সাহা/এমএ/

সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষকদের বদলির আবেদন শুরু

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষকদের বদলির আবেদন শুরু

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের এক জেলা থেকে আরেক জেলায় (একই বিভাগের মধ্যে) অনলাইন বদলির আবেদন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে শিক্ষকরা অনলাইনে বদলির আবেদন করতে পারছেন। আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত এ আবেদন প্রক্রিয়া চলবে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুনের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বাসসের।

চিঠিতে জানানো হয়, ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সহকারী উপজেলা বা থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যাচাই সম্পন্ন করতে হবে। আর ২৪ ও ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ২৬ ও ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং ২৮ এপ্রিল সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয় মনোনয়ন শেষে ২৯ ও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগীয় উপপরিচালক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। আদেশে আরও বলা হয়, শিক্ষকরা পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ তিনটি বিদ্যালয় পছন্দ করবেন। কোনো শিক্ষকের একাধিক পছন্দ না থাকলে শুধু একটি বিদ্যালয় পছন্দ করতে পারবেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলির আদেশ জারি হলে তা বাতিল করার জন্য পরবর্তী সময়ে কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

এদিকে যাচাইকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সর্বশেষ ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা, ২০২৩’ অনুযায়ী আবেদনকারীর আবেদন ও অন্য কাগজপত্রাদি যাচাই করে পাঠাবেন। যাচাইকারী কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করবেন। যাচাইপূর্বক প্রেরণ করার পর পরবর্তী সময়ে তা পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

এর আগে ২১৬টি উপজেলা বা থানায় ১০ শতাংশের বেশি শিক্ষক অন্য উপজেলা থেকে বদলি হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলো আন্তজেলা বদলির আওতাবহির্ভূত থাকবে এবং অবশিষ্ট ২৭১টি উপজেলা বা থানায় বদলি কার্যক্রম চলমান থাকবে।

 

সাকিবের আ.লীগে যোগদান শুধু ভুল সিদ্ধান্ত নয়, নৈতিক ব্যর্থতাও বটে: প্রেস সচিব

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
সাকিবের আ.লীগে যোগদান শুধু ভুল সিদ্ধান্ত নয়, নৈতিক ব্যর্থতাও বটে: প্রেস সচিব
সাকিব আল হাসান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে যোগদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল পছন্দের সিদ্ধান্ত কেবল ভুল পদক্ষেপ ছিল না, বরং এটি নৈতিক ব্যর্থতাও বটে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার (১৬ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন।

দীর্ঘ ওই পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না। একজন নাগরিক হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার অধিকার তার রয়েছে। সাকিব রাজনীতিতে যোগদান করেছেন, সেটি সমস্যা নয়, বরং বড় প্রশ্ন হলো, রাজনীতিতে যোগ দিতে গিয়ে তিনি কাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।

প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব যখন গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত-যেমন গণহত্যা, গুম, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, বিরোধীদের নামে মিথ্যা মামলা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, পদ্ধতিগত দুর্নীতি, এমনকি ব্যাংক ডাকাতির মতো অপরাধও অন্তর্ভুক্ত, তখন সেই দলে সাকিবের যোগদানের সিদ্ধান্ত নৈতিকভাবে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। কেবল এটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না, এটি ছিল আন্তর্জাতিক মহলের কড়া নজরদারির মধ্যে থাকা শাসন ব্যবস্থার প্রতি মৌন সমর্থন।

তিনি আরও লেখেন, একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনো দেশের শীর্ষ ক্রীড়াবিদের কথা মনে পড়ে না, যিনি স্বেচ্ছায় এমন একটি সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।

শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, সাকিব কেবল দেশের মানুষের মনোভাব বুঝতে ভুল করেছেন তা নয়, তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতা উপেক্ষা করেছেন। এর থেকে দুটি বিষয় বোঝার ইঙ্গিত দেয়, হয় তিনি রাজনৈতিকভাবে ভীষণ অজ্ঞ বা সরল অথবা খারাপ কিছু, যা ব্যক্তিগত লাভের জন্য এক ধরনের সুবিধাবাদী পদক্ষেপ।

প্রেস সচিব আরও বলেন, বড় উদ্বেগের বিষয় সাকিবের কাছ থেকে কার্যকর জনসংযোগ বা কৌশলগত যোগাযোগের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। সাকিব চাইলে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্পোর্টস ও ইমেজ ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির পরামর্শ নিতে পারতেন, যারা বিশ্ববিখ্যাত সেলিব্রিটিদের কৌশলগত দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। তারা নিশ্চয়ই তাকে এমন একটি সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখত, যা এখন তার মর্যাদা ও ব্র্যান্ড উভয়কেই কলুষিত করেছে। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ সময়ে তিনি কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। তাই প্রফেশনাল পিআর পরামর্শ নেওয়া কখনো তার নাগালের বাইরে ছিল না।

তিনি বলেছেন, তবে যেটি এসব কিছুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিকটুভাবে চোখে পড়ে, তা হল তার নীরবতা। বিশেষ করে তার সরকার এবং তার নিজের শহর মাগুরায় তার সমর্থকদের দ্বারা সংগঠিত সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে। মাগুরায় বেশ কয়েকজন বিরোধীকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, তবুও সাকিব কিছুই বলেননি। কোনো নিন্দা নেই, ন্যায়বিচারের জন্য আহ্বানও অনুপস্থিত। কোনো ক্ষমা প্রার্থনা নেই। তার নীরবতা কেবল হতাশাজনক ছিল না, এটি বধির ছিল।

প্রেস সচিব লেখেন, সাকিব বাংলাদেশের সর্বকালের সবচেয়ে প্রতিভাবান ক্রিকেটার হতে পারেন। কিন্তু প্রতিভা ও জাতীয় দলের হয়ে পারফর্ম করা কিন্তু দায়মুক্তি দেয় না। একটি সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে, যাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে-তিনি দেশের ইতিহাসের কিছু অন্ধকার অধ্যায়কে বৈধতা দিয়েছেন। শফিকুল আলম লেখেন, এ মুহূর্তে, তার কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা হলো লোভ। তার রাজনৈতিক পদক্ষেপে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে তার সম্পর্ক সবকিছু একই দিক নির্দেশ করে। সেটি হলো ব্যক্তিগত লাভ, জনসেবা নয়।

প্রেস সচিব পোস্টের ইতি টানেন এটি লিখে, একদিন সাকিবকে ফিরে আসতে হতে পারে। সম্ভবত তখন তিনি অবশেষে সত্যের মুখোমুখি হবেন আর জানবেন আওয়ামী লীগে তার যোগদানের সিদ্ধান্ত কেবল একটি ভুল পদক্ষেপই ছিল না, বরং একটি বিশ্বাসঘাতকতা ছিল।

 

 

গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমল

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমল
গ্রামীণ ব্যাংকের লোগো

গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশে সংশোধনী এনেছে সরকার। এতে সরকারের মালিকানা ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের সুবিধাভোগীদের জন্য ৯০ শতাংশ রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বা অর্থনৈতিক অপরাধ যে গোষ্ঠীগুলো করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক কাজগুলো হয়েছে। এখন ফিন্যান্সিয়াল অপরাধে যারা জড়িত ছিলেন তাদের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করতে আলাদা কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া করপোরেট এবং ব্যাংকিং সেক্টরে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা আনার জন্য ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার জন্য এই ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ আজকে আমরা পাস করেছি। আমরা আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনায় সাধারণ আমানতকারীদের বিপদে পড়তে না হয় সেজন্য এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা কেমন করে আনা হবে, বাংলাদেশ ব্যাংককে কতটুকু ক্ষমতা দেওয়া হবে, প্রতিষ্ঠানটি কোনো পর্যায়ে গিয়ে ইন্টারভেন (হস্তক্ষেপ) করবে সেগুলো এতদিন স্পষ্ট ছিল না আইনে, এখন স্পষ্ট করা হলো।

একইসঙ্গে দেওয়ানী মামলার আইন ‘দ্য কোড অব সিভিল প্রসিডিউর - ১৯০৮’ (সিপিসি) এর ক্ষেত্রে বেশ কিছু সংশোধনী এনে আধুনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

তিনি জানান, মামলায় কতবার সময় নেওয়া যাবে এমন বিষয় সংশোধন করা হয়েছে। লিস্টে পূর্ণ শুনানি ও আংশিক শুনানির মামলা কতবার আসবে সেগুলো সুনিদিষ্ট করা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া অনেকাংশেই সেকেলে রয়ে গেছে। বিচার প্রক্রিয়াকে আধুনিকায়নের কথা বলা হয়েছে। এখন থেকে সমন জারি টেলিফোন, এসএমএস ও আধুনিক ডিভাইসের মাধ্যমে করা যাবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া কাউকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য যেসব মামলা করা হয় তার শাস্তি আগে ২০ হাজার টাকা ছিল। এখন সেটি পরিবর্তন করে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, অভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুইটি আইন রয়েছে। এর একটিতে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন

 

বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে: আমনা বালুচ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৬ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম
বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে: আমনা বালুচ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। বৈঠকে পাকিস্তানকে ক্ষতিপূরণ দিতে ও ১৯৭১ এ গণহত্যায় ক্ষমা চাওয়ার কথা তুলেছে বাংলাদেশ। আজ দুদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় এ প্রসঙ্গ তোলে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা জানান। বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকটি শুরু হয়।

বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ তার দেশের নেতৃত্ব দেন। এর আগে বুধবার ঢাকায় পৌঁছান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ।

এদিকে দীর্ঘ সময় পর দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনাকে ইতিবাচক অবস্থান থেকে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশকেই মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া আলোচনায় একাত্তরের অমীমাংসিত বিষয়গুলোও আসতে পারে।

সর্বশেষ ২০১০ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

‎এদিকে ‎পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চলতি মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করবেন বলে জানা গেছে। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটিই হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।

রবিউল হক/এমএ/