দেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগেই প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ৪৪২ জন। সেজন্য জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার অংশ হিসেবে তামাকের ভয়াল ছোবল থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষা করা জরুরি বলে মনে করেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরাম। এ জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের তাগিদ দিয়েছেন তারা।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘নারী মৈত্রী’র আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন তারা।
সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরামের আহ্বায়ক ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব শিবানী ভট্টাচার্য, তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শাহনাজ পলি এবং যুগ্ম আহ্বায়ক আফসানা নওরিন।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নাছরিন আকতার।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী ৬ দাবি তুলে ধরে নাছরিন আকতার বলেন, দেশে বর্তমানে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। শুধু তামাক ব্যবহারজনিত রোগেই প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ৪৪২ জন। তাই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করা এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে এফসিটিসির সঙ্গে সমন্বয়ের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়ায় প্রস্তাবিত বিষয়বস্তুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় পাবলিক প্লেস এবং গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করাসহ তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধে বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা এবং তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা। পাশাপাশি ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো পণ্য আমদানি, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সব ধরনের খুচরা ও খোলা বিক্রি বন্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়।’
এ সময় তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবিতে যুববান্ধব সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরামের আহ্বায়ক শিবানী ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘ধূমপান না করেও পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। যার মধ্যে বেশি ক্ষতির শিকার হন নারী ও শিশুরা। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীদের অকালে গর্ভপাত, অপরিণত শিশুর জন্ম, স্বল্প ওজনের শিশু, গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, মৃত শিশুর জন্ম দেওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।’
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) প্রোগ্রামস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া, কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার হুমায়রা সুলতানা, লিড পলিসি অ্যাডভাইজার এবং বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরামের সদস্য, গার্লস গাইড রেঞ্জার ইউনিট, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ সদস্যসহ অংশীজনরা।
সালমান/