রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ডাক দিয়েছিল দুই পক্ষ। এক পক্ষ প্রয়াত মাওলানা জোবায়ের হাসানের অনুসারী এবং আরেক পক্ষ দিল্লির মাওলানা মুহাম্মদ সাদ কান্ধলভীর অনুসারী। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক বছর পর তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (৪ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দুই পক্ষকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। বৈঠক অংশ নিয়ে সমাবেশ স্থগিত করার ঘোষণা দেন সাদপন্থিরা। তবে এ বৈঠকে অংশ নেননি মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ‘উলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ’ ব্যানারে এ মহাসমাবেশ করবেন মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা। সম্মেলন থেকে কওমি মাদ্রাসা-মসজিদে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে।
অপরদিকে একই দিনে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে ষড়যন্ত্র ও দেশের বিভিন্ন জেলায় ইজতেমা ও মারকাজে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন তাবলিগ জামাতের সাদপন্থি অংশের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিশ্ব ইজতেমা এবারও দুই পর্বে ঘোষণা দেওয়ায় সমাবেশ স্থগিত করেছেন সাদ অনুসারী।
মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম খবরের কাগজকে বলেন, হেফাজতের মাওলানা মামুনুল হকের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কারণেই এই সমাবেশের ডাক দিয়েছে একটি গ্রুপ। সমাবেশের মাধ্যমে মামুনুল হকের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হবে। কিন্তু আমরা এসবে যেতে চাই না। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিশ্ব ইজতেমার তারিখের সমাধান হয়েছে। কিন্তু কারা কোন পর্বে পালন করবে এটা চূড়ান্ত হয়নি। আমরা কোথাও মার দিইনি, সব সময় মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের মার খেয়ে এসেছি, এমন কথাও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানিয়েছি। ‘হক’-এর অজুহাত দেখিয়ে তারা আজকে আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেনি। কিন্তু আগের ৭ বছর ঠিকই বৈঠক করেছে।
মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী শুরায়ী নেজামের মিডিয়াবিষয়ক সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান খবরের কাগজকে বলেন, সাদ অনুসারীরা তো সমাবেশের জন্য ডিএমপি থেকে পারমিশন পায়নি। একই স্থানে সমাবেশের ডাক দিয়ে তারা নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
তিনি বলেন, এ মহাসম্মেলনে সারা দেশ থেকে আলেম ও মুসল্লিরা অংশ নেবেন। শীর্ষ স্থানীয় আলেমরা উপস্থিত থেকে ধর্মপ্রাণ সবাইকে সুচিন্তিত দিকনির্দেশনা দেবেন। তৌহিদি জনতার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি একটি মহাসমুদ্রে পরিণত হবে ইন্শাআল্লাহ।