ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৩৭০ জন ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ছয়জনের। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে ৩২৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম জানায়, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ১৩৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে একজন করে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের দুজন পুরুষ ও চারজন নারী। পুরুষদের একজনের বয়স ৫৬ থেকে ৬০ বছর, আরেকজনের বয়স ৬১ থেকে ৬৫ বছর। নারীদের একজনের বয়স ৩৬ থেকে ৪০ বছর, একজনের ৪৬ থেকে ৫০, একজনের ৫৬ থেকে ৬০ এবং আরেকজনের ৬৬ থেকে ৭০ বছর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৩৬৮ জন, ঢাকা উত্তরে ২৫৯ জন, ঢাকা দক্ষিণে ২৪৮ জন, বরিশাল বিভাগে ১২২ জন, চট্টগ্রামে ১৪৪ জন, খুলনায় ১৩৫ জন, ময়মনসিংহে ৩৯ জন, রাজশাহীতে ২৪ জন এবং রংপুর ২৭ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৩০৫ জন। এ নিয়ে ৬২ হাজার ৬১০ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছরে অসময়েই চলছে ডেঙ্গুর পিক সিজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই বছরের জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ৫৫ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, মৃত্যু হয় ১৪ জনের; ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৩৯ জন ভর্তি হন, মৃত্যু হয় ৩ জনের; মার্চে ৩১১ জন ভর্তি হন, মৃত্যু হয় ৫ জনের; এপ্রিলে ভর্তি হন ৫০৪ জন, মৃত্যু ২ জনের; মে মাসে ভর্তি হন ৬৪৪ জন, মারা যান ১২ জন। জুন মাসে ৭৯৮ জন ভর্তি হন, ৮ জন মারা যান; জুলাই মাসে ভর্তি হন ২ হাজার ৬৬৯ জন, মৃত্যু হয় ১২ জনের।
আগস্টে এসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। জুলাইয়ের তুলনায় অনেক বেশি রোগী শনাক্ত হন। এই মাসে ভর্তি হন ৬ হাজার ৫২১ জন, মৃত্যু হয় ২৭ জনের; সেপ্টেম্বরে ভর্তি হন ১৮ হাজার ৯৭ জন, মৃত্যু ৮০ জনের এবং অক্টোবরে ভর্তি হন ৩০ হাজার ৮৭৯ জন ও মৃত্যু হয় ১৩৪ জনের। আর চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম ৫ দিনে ডেঙ্গু নিয়ে ৫ হাজার ৩২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের।
ডেঙ্গু জ্বরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। সে বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যান। এর আগে ২০২২ সালে মারা যান ২৮১ জন। ২০২১ সালে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে তেমন একটা ডেঙ্গুর প্রভাব বোঝা যায়নি।