বৈচিত্র্যকে স্বীকৃতি দিয়ে ধর্মীয় বিরোধের ন্যায্য মীমাংসা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় আইন ও নীতিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে আমাদের ধর্ম নির্দেশিত অভেদগুলো অর্জন করতে হবে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সভাকক্ষে সাংস্কৃতিক সংগঠক ‘সংস্কৃতিবাংলা’ আয়োজিত 'বৈচিত্র্যে বহুত্বে বাংলার সংস্কৃতি: ইসলামের অভেদ ভাব' শীর্ষক আলোচনা সভায় ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষকরা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের বক্তা লেখক ও গবেষক নূরুননবী শান্ত বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সহাবস্থানের শিক্ষা দেয়। মুসলমান সম্প্রদায়ের নিজেদের মধ্যে প্রেম, সদ্ভাব ও একতা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ গুরুত্ব দেয় যাতে করে একই সমাজে ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও একে অপরকে সহযোগিতা করা যায়। জীবনাচারে সহিষ্ণুতা, মানবিক সম্পর্ক, মানবিক মর্যাদা, সাম্য ও সমতার প্রতিফলন ইসলামের অনন্য বিশেষত্ব।’
তিনি বলেন, ‘ভেদাভেদ দিয়ে কোনো জাতি বা রাষ্ট্র যেমন উন্নতি করতে পারে না, তেমনি ভেদাভেদ দিয়ে দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণ তো আসেই না সাথে সাথে আখেরাতের কল্যাণও হাসিল হয় না৷ ইসলাম তো সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে সম্প্রীতি সুরক্ষার তাগিদ দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠাই পারস্পরিক শান্তির প্রধান পথ। উদারতা, সৎব্যবহার ও শান্তি অন্বেষণই ইসলামের উদ্দেশ্য।’
এছাড়াও অন্যান্য বক্তারা বলেন, ধর্মচর্চায় স্থান, কাল ও সমাজভেদে পার্থক্য তৈরি হতেই পারে। জগতের বৈচিত্র্যের প্রেক্ষিতে সব ভিন্নতার ন্যায্য অন্তর্ভুক্তি আমাদের কাম্য। মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ এবং ধর্মসহ সব ধরনের আধ্যাত্মিক রীতির সঙ্গে সংহতি সমুন্নত করা আমাদের উদ্দেশ্য।
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় ধারনাপত্র উপস্হাপন করেন লেখক ও গবেষক নূরুননবী শান্ত। আলোচক ছিলেন ঢাকার আশেকে রাসুল (সা.) জামে মসজিদের খতিব ফজলে রাব্বী মো. ফরহাদ, আল আজহার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারি, সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও প্রকৃতি রক্ষা পরিষদের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, সুফি সাধক কাজী জাবের আহম্মেদ আল জাহাঙ্গীর, লেখক ও শিক্ষক জগলুল আসাদ, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট তুহিন খান, ঢাকার আল মোজাদ্দেদিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মো. মূর্তাজা ইবনে মোস্তফা সালেহী এবং আলেম ও চিন্তক শেখ সাইফুল ইসলাম।
জয়ন্ত সাহা/সুমন/এমএ/