বাংলাদেশের ৮৫ ভাগ এলাকা এখনো স্থানিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বাইরে রয়েছে বলে জানা গেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপির) এক গবেষণায়।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপির সেমিনার কনফারেন্স হলে ‘সমগ্র দেশের পরিকল্পনা করি, বৈষম্যহীন সুষম বাংলাদেশ গড়ি’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপির সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন।
বিআইপির সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে জাতীয় সেমিনারটির আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, থাইল্যান্ডের অ্যাশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ইমিরেটাস অধ্যাপক এ টি এম নুরুল আমিন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইপির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
সেমিনারে সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন বলেন, ‘বাংলাদেশের ৮৫ ভাগ এলাকা এখনো স্থানিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা দুর্যোগপূর্ণ। এই বিশাল এলাকা এখনো পরিকল্পনার বাইরে থাকার মূল কারণ হল, আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর দুর্বলতা। শহর ও গ্রামীণ পরিকল্পনার মধ্যেও বিস্তর ব্যবধান রয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে পল্লী উন্নয়ন পরিকল্পনায় দেখা যায়, ২০ বছর আগে অ্যাজেন্ডা নেওয়া হয়, এরপর ওই এলাকাটি যখন পুরান ঢাকার মতো হয়ে যায় তখন তারা এলাকাটিকে পৌরসভা বানাতে চান। স্থানিক পরিকল্পনায় রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রশাসনের পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে। এটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ডিটেইল অ্যারিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) নিয়ে রাজউক এখন অনেক চাপে আছে। বিগত দিনে ড্যাপে বিশেষ কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এসে বলেছেন, সংশোধিত ড্যাপ প্ল্যান বাদ দেন, ২০০৮ সালের আগে ফিরে যান। এ ছাড়া ড্যাপ অ্যারিয়াতে যাদের জমি পড়েছে, তারা এখন জমি ছাড়তে নারাজ।’
উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজধানীর পূর্বাচলে আবাসন অবকাঠামোর অনেক কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে আইনি দিকটি সমাধান হলে পূর্বাচলের পাশাপাশি উত্তরা, ঝিলমিলে রাজউকের প্রকল্প এলাকায় ৫০ লাখ নাগরিককে আবাসন সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ড্যাপ বাস্তবায়নের পথে নগরীর চারটি নদী পাড়ের এলাকায় বিশেষ গুরুত্ব দেবে রাজউক। নদী পাড়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করে নগরের মধ্যভাগে জনঘনত্ব কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে ড্যাপের খসড়ায়।’
রাজউক চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে নগরীর জলাভূমি সুরক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে করে বলেন, ‘জলাভূমি দখল করে কেউ পার পাবেন না।’
তুরাগের ওপাড়ে যারা বালু তুলে জলাভূমি ভরাট করছে তাদের হুশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে রাজউক সেই বালু তুলে বিক্রি করে দেবে।’
জয়ন্ত/পপি/