ঢাকা ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ মাস, সংস্কার ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সমান গুরুত্ব

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ মাস, সংস্কার ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সমান গুরুত্ব
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত তিন মাসে বিশ্ব নেতা ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। নানামুখী চাপের মধ্যেও রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে গঠন করা হয়েছে একাধিক সংস্কার কমিশন। এসব কাজের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে জনশক্তি রপ্তানি, বিনিয়োগ আহ্বান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্ব দিচ্ছে। ব্যাংক খাত সংস্কারে এবং পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

গত তিন মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কাজ বণ্টন করে তা ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন না হলে তার জন্য কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে গত তিন মাসের কার্যক্রম এবং পরিকল্পনা উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। 

এই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৪০টির বেশি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেছেন। এসব আলোচনায় পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে পুরোনো চুক্তি নবায়ন এবং নতুনভাবে একাধিক চুক্তি হয়েছে। এসব চুক্তির আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আসবে এবং আর্থিক সহযোগিতা বাড়বে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। 

গত তিন মাসে সরকার আয় বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি করবহির্ভূত রাজস্ব আদায়েও জোর দিয়েছে। 

গত তিন মাসে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হয়েছে। পণ্যের দাম কমাতে কঠোর বাজার নজরদারি করা হয়েছে। লাগামছাড়া দামে পণ্য বিক্রির কারণে জরিমানা ও আটক করা হয়েছে। 

অনেক খাদ্যপণ্যের শুল্ক কম কমানো ও প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদ্যশস্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য-সহায়তা নিশ্চিত করতে ওএমএস নীতিমালা ২০১৫ ও খাদ্যবান্ধব নীতিমালা ২০১৭ সংশোধনপূর্বক আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে অনেক ওএমএস ডিলার খাদ্যশস্য উত্তোলন ও ভোক্তাদের কাছে খাদ্যসামগ্রী বিক্রি বন্ধ করে দেয়। এ দুটি নীতিমালা অনুসারে ডিলারের কার্যক্রমের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট ছিল না। এতে ডিলাররা দীর্ঘদিন নিয়োজিত থাকায় বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত হওয়ায় জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যমান এ দুটি নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে। 

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৪টি জেলার উপজেলার পৌরসভা/ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বন্যা-পরবর্তী সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রমে মোট ২৩০টি কেন্দ্রে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে মোট ৪৩ দিনে ৯ হাজার ৮৯০ টন চাল ও ৯ হাজার ৮৯০ টন আটা বিক্রির লক্ষ্যে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর ফলে খাদ্যশস্যের দাম কিছুটা সহনীয় থাকে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বিতরণব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখতে সাধারণ ওএমএস কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। সাধারণ ওএমএস খাতে বর্তমানে সারা দেশে সর্বমোট ১,১৩৩টি কেন্দ্রে খাদ্যশস্য বিক্রি করা হচ্ছে। এ কার্যক্রমের আওতায় দেশের যেকোনো নাগরিক সপ্তাহে একবার সর্বোচ্চ প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল ও প্রতি কেজি ২৪ টাকা দরে ৫ কেজি খোলা আটা সংগ্রহ করতে পারবে। ঢাকা মহানগরীতে ৫ কেজি চালের সঙ্গে খোলা আটার পরিবর্তে ২ কেজির প্যাকেট ৫৫ টাকা দরে ২ প্যাকেট আটা সংগ্রহ করা হয়েছে। খাদ্যশস্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ধান ও চালের বাজার মনিটরিং করতে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি অনলাইন সিস্টেম চালু করেছে। দেশের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ ধান ও চালের হাট-বাজারের ধান ও চালের পাইকারি মূল্য একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি করে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি বাড়াতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার এবং অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২ শতাংশ করা হয়েছে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশে নিহত ও আহত সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। চলচ্চিত্র আমদানি ও রপ্তানির সুপারিশ প্রদানের জন্য কমিটি, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ট্রাস্টি বোর্ড কমিটি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান উপকমিটি, স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। গত তিন মাসে ৬টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সনদ ইস্যু এবং ৮৩টি নিউজ পোর্টালের সনদ নবায়ন করা হয়। তথ্য অধিদপ্তর থেকে গুজব প্রতিরোধে ইকোনটেক্স করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের ওপর গ্রাফিতির অ্যালবাম প্রকাশ করা হয়েছে। 

অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব ইনস্টিটিউট’ এর নামকরণ ‘জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’ করা হয়েছে। এরই মধ্যে নেপালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা অর্জন করে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইস্পাহানী চতুর্থ বাংলাদেশ জাতীয় স্কোয়াশ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ২টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য ও ১টি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে। গত তিন মাসে ৫৬ লাখ টাকা যুব ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের সামগ্রিক সফলতা অর্জন, ক্রীড়াবিদদের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্রীড়া কৌশল ও নেতৃত্ব গুণের উন্নয়ন তথা সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন।

গত তিন মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন এবং উল্লিখিত সময়ে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন বা অন্য কোনো বঞ্চনার শিকার হয়েছেন এমন কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনাপূর্বক যথাযথ সুপারিশ প্রণয়নের জন্য সরকার কর্তৃক কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটি ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর করার লক্ষ্যে উপদেষ্টা পরিষদে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের সম্পদবিবরণী দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আশু কর্মপরিকল্পনা সকল শূন্য পদে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ; পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যায়ক্রমে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত তিন মাসে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনার জন্য কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রকৌশল, ভূতত্ত্ব, খনিজ, আইন এবং হিসাব বিষয়ে বিশেষায়িত ছাত্রদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের ক্ষমতা বিইআরসির কাছে পুনর্বহালের লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ সংশোধন করা হয়েছে। অকটেন ও পেট্রলের দাম ৬ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১.২৫ টাকা কমানো হয়েছে। জ্বালানি তেল আমদানিতে বকেয়া প্রায় ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলারে আনা হয়েছে। ভেজাল, পাচার ও অনিয়ম দূর করতে জ্বালানি তেল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্যাংকলরিতে ভেহিকল ট্যাকিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে এবং সফটওয়্যার তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

গত তিন মাসে (আগস্ট থেকে অক্টোবর ২০২৪) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় পরিবেশের সুরক্ষায় গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমে ছাত্রছাত্রী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তথ্যের প্রবাহ অবাধ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান, এনফোর্সমেন্ট, অর্থদণ্ড এবং আপিলের সিদ্ধান্তের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে। প্লাস্টিক বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পলিথিন/পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসংলগ্ন এলাকা এবং প্রধান সড়কের উত্তরার স্কলাস্টিকা ক্যাম্পাস থেকে লা মেরিডিয়ান হোটেল পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক-কে ১ অক্টোবর থেকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পলিথিন শপিংব্যাগের ব্যবহার বন্ধে পরিচালিত অভিযান মনিটরিং করার জন্য ৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ডেঙ্গুতে ঝরল আরও ৪ প্রাণ, হাসপাতালে ২৪১

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
ডেঙ্গুতে ঝরল আরও ৪ প্রাণ, হাসপাতালে ২৪১

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে ৫৪৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

কন্ট্রোল রুম জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (১২ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪১ জন। এদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৯, চট্টগ্রামে ২১, ঢাকা বিভাগে ৬১, ঢাকা উত্তরে ৪১, ঢাকা দক্ষিণে ৪৬, খুলনায় ৪৪, ময়মনসিংহে ৮, রাজশাহীতে ৮, রংপুরে ১ ও সিলেটের হাসপাতালে ২ জন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৭১৯ জন। চলতি বছরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮ হাজার ১৮৮ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত ৪ জনের ১ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। এ নিয়ে চলতি মাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৯৫ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে ৯৫ হাজার ৮৬১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।

ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। সে বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যান। ২০২২ সালে মারা যান ২৮১ জন। ২০২১ সালে মারা যান ১০৫ জন। ২০২০ সালে করোনার কারণে তেমন একটা ডেঙ্গুর প্রভাব বোঝা যায়নি। তবে ২০১৯ সালে ৩০০ জনের মৃত্যু হয়।

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৬ এএম
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। ছবি: সংগৃহীত

‘রক্তের কাফনে মোড়া- কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে/সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।’ কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ভাষায় ‘বাতাসে লাশের গন্ধ পাই’।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। চারদিকে একের পর এক এলাকা হানাদারমুক্ত হওয়ার খবরের মাঝেই আসে দুঃসংবাদ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। 

দেশের মেধাবী সন্তানদের একাত্তরের এই দিনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও পথ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ এবং বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে হানাদার বাহিনী স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সহযোগিতায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’

জাতির সূর্যসন্তান, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি স্মরণ করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বলেন, ‘আমি শহিদ পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আজ শনিবার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। 

শহিদ বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।’

বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের নেতৃত্বে শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেখান থেকে তারা রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এর আগে গত বুধবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে শহিদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবসের পবিত্রতা রক্ষায় শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহার না করতে জনসাধারণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই দিন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা হবে।

উপদেষ্টা জানান, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। দিবসটি উপলক্ষে এদিন সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্য বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ (বিএনপি) অন্য রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হবে। 

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ডা. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রাশীদুল হাসান, আবুল খায়ের, ডা. মোহাম্মদ মুর্তজা, ডা. আজহারুল হক, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এস এ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ অনেকে।

নাবিল/এমএ/

৩ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ চলবে আরও দুই দিন

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ এএম
৩ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ চলবে আরও দুই দিন
রাজধানীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সন্তানদের ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করতে গরম পোশাক পরিয়ে রিকশায় চড়ে গন্তব্যে চলেছেন এক মা। ছবিটি শুক্রবার ইস্কাটন গার্ডেন রোড থেকে তোলা -মাসুদ মিলন

পৌষ ছুঁইছুঁই দিনে রাজশাহী, পঞ্চগড় ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আরও বিস্তৃত হয়ে দুই-তিন দিন চলতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, আরও দুই-তিন দিন শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তার হবে। কাল, পরশু তাপমাত্রা কমবে। এরপর তিন থেকে চার দিন বাড়ার পর আবার কমবে। কুয়াশার কারণে শীত বেশি লাগবে।’

মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কর্মজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাদের আয়-উপার্জন কমে গেছে। শীতে বেশি ভুগছে শিশু ও বয়স্করা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে মৃদু শৈতপ্রবাহ। হিমেল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনমজুরসহ শ্রমজীবী মানুষ খুব কষ্টে আছেন। গতকাল সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ। চলতি মৌসুমে এটিই জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। কুয়াশার কারণে সড়কগুলোতে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।


সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, ‘এবার ৪ বিঘা জমিতে ইরি ধান লাগিয়েছি। ভোর থেকেই পরিচর্যা করতে হচ্ছে। হাত-পা যেন বরফ হয়ে যাচ্ছে।’

ভ্যানচালক দীন ইসলাম বলেন, ‘কনকনে ঠাণ্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে ডিপ ফ্রিজের মধ্যে আছি।’

ঠাকুরগাঁও

জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশু ও বয়স্করা। প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

জেলা শহরের রিকশাচালক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শীতের কারণে ভোরে কাজ শুরু করতে পারি না। রাস্তায় যাত্রীও কম। দিনে আয় অনেক কমে গেছে।’

আবহাওয়া অফিস কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহ আরও তীব্র হতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে।’

পঞ্চগড় 

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গত কয়েক দিন ধরেই ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর হালকা হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে জেলার ওপর দিয়ে। গতকাল সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সকালের পরেই দেখা মেলে সূর্যের। আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমবে।

জেলা শহরের ভ্যানচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রাতে অনেক ঠাণ্ডা পড়লেও দিনে গরম পড়ে।’

দিনমজুর আসিয়া বেগম বলেন, ‘এখন তো অনেক রোদ। তবে সন্ধ্যা হলে তীব্র শীত অনুভূত হয়।’

আসছে আরও দুই শৈত্যপ্রবাহ

ডিসেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মাসে দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

নাবিল/এমএ/

বিদ্যমান ভোটার তালিকায় অসংগতি রয়েছে: বদিউল আলম মজুমদার

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পিএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
বিদ্যমান ভোটার তালিকায় অসংগতি রয়েছে: বদিউল আলম মজুমদার
খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা। ছবি: খবরের কাগজ

বিদ্যমান ভোটার তালিকায় কিছু অসংগতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, জনসংখ্যার বিবেচনায় ভোটার তালিকায় নারী ভোটারের সংখ্যা কমে গেছে। তালিকা সঠিক না হলে নির্বাচন ব্যাহত হবে।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) তিনি খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে এই নির্বাচনিব্যবস্থাকে কীভাবে সংস্কারের মাধ্যমে কার্যকর করা যায়, সে উদ্দেশ্যে ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। দায়িত্ব অনুযায়ী সব অংশীজনের মতামত গ্রহণ করে আমরা এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেব। কীভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে এটি স্বাধীন ও কার্যকরভাবে তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে সে বিষয়ে আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে। একই সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে তা দূর করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, 'ভোটার তালিকা সংশোধন, জনগণের অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নির্বাচনি আচরণবিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন, নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ে সবার পরামর্শ ও মতামত জানা একান্তভাবে দরকার। নির্বাচনি অপরাধের সুযোগ বন্ধ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে পদ্ধতিগত অসংগতি থাকলে সেগুলোর পরিবর্তন করা আবশ্যক। তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত ছিল। সে সময়ে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তারা সংবিধান অনুযায়ী তাদের নিরপেক্ষতার শপথ ভঙ্গ করেছেন।'

মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য মীর নাদিয়া নিভিন, সদস্য সাদিক আরমান, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মাহবুবুর রহমান, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই) এম এম শাকিলুজ্জামান।

বাংলাদেশ তুরস্কের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে: বিএনপি

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ পিএম
বাংলাদেশ তুরস্কের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে: বিএনপি
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘তুরস্কে ১২ হাজারের মধ্যে ৪ হাজার বিচারককে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ১ লাখ ২৫ হাজার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ কী করবে না করবে, তার বোঝার ও চিন্তার বিষয় আছে। আমরা মনে করি, বিগত দিনে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে। বিচারব্যবস্থা ঠিক না থাকলে বাকি কিছু ঠিক থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তাই তুরস্কের সঙ্গে আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘বিএনপির  ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সঙ্গে সফররত তুরস্ক ইন্টারন্যাশনাল জুরিস্ট ইউনিয়নের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। 

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর যারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, তাদের বিষয়ে আলাপ হয়েছে। তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে কীভাবে তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে তাও উঠে এসেছে। দেশে যারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আছেন এবং রাজনীতিবিদ স্বৈরাচারের সঙ্গে একাত্মতা দেখিয়ে কাজ করে এত লোকের প্রাণহানি ঘটিয়েছেন। গুম, খুন, হত্যা, মিথ্যা মামলা, পুলিশি হেফাজতে হত্যাকাণ্ড, জেলে চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে মারা যাওয়াসহ সার্বিকভাবে যে কাজগুলো হয়েছে, যেটা অনেকটাই তুরস্কেও হয়েছিল।’

বৈঠকে চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নেতৃত্বে অংশ নেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাজভীরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দীন অসীম। 

এ ছাড়া তুরস্কের জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলে ছিলেন রিসাট পেটেক, আহমেত সরগুন, হুসনু টুনা, ডক্টর রফিক কোরকুসুজ, কামাল কেয়া, রাসিম আইটিন, হান্না একবুলাটসহ ১৬ জন।

নাবিল/এমএ/

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });