বিপ্লবের চেতনা নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নতুন করে শপথ নেওয়া তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এই তিন উপদেষ্টার পরিচয় ও পূর্ব কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অপসারণের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের নানা স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। অনেক রাজনৈতিক দল থেকেও নবনিযুক্ত তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ফ্যাসিবাদের দোসরদের স্থান দিয়ে শহিদদের রক্তের প্রতি অবমাননার অভিযোগ তুলে নতুন তিন উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘কাদের প্রেসক্রিপশনে এই আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন হচ্ছে? শিক্ষার্থীরা নিজেদের তাজা রক্ত রাস্তায় ঢেলে দিয়ে, শ্রমিকরা বুকের রক্ত দিয়ে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান সফল করেছে। কিন্তু আপনারা তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে, অদৃশ্য সিগন্যালে পুনর্বাসনের ম্যান্ডেট নিয়েছেন। ধানমন্ডি ৩২-কে আদর্শ মনে করা লোকদের উপদেষ্টা দেওয়া হয়। যারা ফ্যাসিবাদের দোসর, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যাদের ন্যূনতম সম্পর্ক রয়েছে, তাদের ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা কোনো ফরম্যাটেই পুনর্বাসিত দেখতে চাই না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উপদেষ্টাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘উপদেষ্টাদের কাজের স্পষ্টতা, নিয়োগ প্রক্রিয়া, দুর্নীতি দমন সবকিছু স্পষ্ট করতে হবে। আপনাদের প্রতি সপ্তাহের কাজের বিবরণী তুলে ধরতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উপদেষ্টাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
মাসউদ তার বক্তব্যে গত রবিবার যেসব উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘নতুন করে যে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তা ছাত্র-জনতাকে জানানো হয়নি। এদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’
এ ছাড়া আওয়ামী সুবিধাভোগীদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতা।
সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এরপর প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে তা মৎস্য ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। আলী ইমাম মজুমদার আওয়ামী লীগের আমলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন। তাকে সিইসি না করায় তিনি আওয়ামীবিরোধী হয়ে গেলেন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ১৩ থেকে ১৭ সালে আওয়ামী লীগ পক্ষের লেখালেখি করেছেন, গণজাগরণ মঞ্চেও ছিলেন। আর সেখ বশির উদ্দিন একজন হত্যা মামলার আসামি।’