হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব দুই বছরের জন্য দেওয়া হয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে। বিমানের সেবার মান নিয়ে বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর উদ্বেগের কারণে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানকে এ দায়িত্ব দেওয়ার কথা এর আগে ভাবা হয়েছিল। তবে দুই বছরের জন্য বেশ কিছু কি প্রেফারেন্স ইন্ডিকেটর পূরণ করার শর্তে বিমানকে এই কাজ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গতকাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বিমানকে সেবাদানের সক্ষমতা দেখানোর সুযোগ দিয়েছে। এ জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও শর্ত। কিছু কি প্রেফারেন্স ইন্ডিকেটর দেওয়া হয়েছে তাদেরকে, যেগুলো সবসময় মনিটরিং করবে বেবিচক। এসব শর্ত বা কি প্রেফারেন্স দুই বছর ঠিকভাবে পূরণ করতে পারলে বিমানের হাতেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং থাকবে। আর বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সক্ষমতার প্রমাণ দিতে না পারলে যৌথ দায়িত্ব দেওয়া হবে অন্য কাউকে।’
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য কেনাকাটা, জনবল নিয়োগসহ নানা প্রস্তুতি শেষ করেছে বেবিচক।
বিমান বাংলাদেশের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম গতকাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘থার্ড টার্মিনালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ১০৫টি নতুন যন্ত্র ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান। ডিসেম্বরের মধ্যে এসব যন্ত্র চলে আসবে। এতে সেবার মান আরও উন্নত হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতার উন্নয়নে বিভিন্ন ধাপে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ইক্যুইপমেন্ট কেনার প্রক্রিয়া চলমান আছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ইক্যুইপমেন্ট বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। গ্রাউন্ড সার্ভিস ইক্যুইপমেন্ট (জিএসই) বহরে ফ্রান্স থেকে সদ্য আমদানি করা ৬টি ব্র্যান্ড নিউ বেল্ট লোডার সংযোজিত হয়েছে। এই বেল্ট লোডার ছোট ও মাঝারি মাপের উড়োজাহাজ যেমন: বোয়িং ৭৩৭, বোয়িং এ-৩২০ এবং ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজে কার্গো ও ব্যাগেজ উত্তোলন ও অবতরণ কাজে ব্যবহৃত হবে।
এ ছাড়া বিমানের জিএসই বহরে বর্তমানে ২ হাজারের মতো মটরাইজড ও নন-মটরাইজড ইক্যুইপমেন্ট রয়েছে। হাইলোডার, কনটেইনার প্যালেট ট্রান্সপোর্টার, এয়ার কন্ডিশনিং ভ্যান, প্যাসেঞ্জার স্টেপ, ওয়াটার কার্ট, ফ্লাশ কার্ট, অ্যাম্বুলিফটসহ আরও অন্য ইক্যুইপমেন্ট কেনার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। থার্ড টার্মিনালকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন ইক্যুইপমেন্ট কেনার পাশাপাশি জিএসই অপারেটর, মেকানিক
নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জিএসই বিভাগের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিজস্ব ফ্লাইটের পাশাপাশি দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস পরিচালনা করছে।
হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে জানিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের প্রস্তুতি ও টার্মিনালের সম্পূর্ণ কাজ শেষে আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ এ টার্মিনাল চালু করা সম্ভব হতে পারে।’