
বর্তমান সংবিধানের বিভিন্ন অংশ সংশোধন করে আপাতত কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি জনগণের জন্য নতুন করে সংবিধান লেখার কথা বলেছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নাগরিক ক্ষমতায়নের জন্য সংবিধান’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সিটিজেন পাওয়ার ও বিডি পলিটি নামক সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা একমাত্র সংসদের। আর সংসদে নিজ দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া যায় না। এটা একটা একনায়কতন্ত্র। দলের নেতার বাইরে কথা বলা যাবে না। এটা স্বাভাবিক না। শেখ মুজিব নিজেই এটা করেছিলেন। সংবিধানে ১১টি ভাগ আছে। আপাতত বাংলাদেশকে চালানোর জন্য এর মধ্যে এর মধ্যে কিছু কিছু বিষয় সংশোধন করতে হবে। কিন্তু জনগণের জন্য নতুন করে করতে হবে। যদি আমরা প্রকৃত জনগণের ক্ষমতার কথা বলি। তবে সেখানে বর্তমান সংবিধানের অভিজ্ঞতা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন সংবিধানে আমাদের ইতিহাসের সার সংকলন রাখতে হবে। অনেকে মনে করেন আমাদের ইতিহাস শুরু হয়েছে দ্বি-জাতি তত্ত্ব থেকে। আবার অনেকে মনে করেন বখতিয়ার খলজি থেকে। তাই সংবিধানে আমাদের আত্মপরিচয় থাকতে হবে। আমাদের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অগ্রগতি রাখতে হবে। নতুন সংবিধান গঠনের ধারায় আমাদেরকে যেতে হবে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা বলেন, ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থান বর্তমান সংবিধানকে নাকচ করে দিয়েছে। নতুন করে সংবিধান তৈরি জন্য গণপরিষদ নির্বাচন দিতে হবে। বিগত সরকারের সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। অভ্যুত্থানের সংগঠিত শক্তি নেই। আমাদের ঐক্যের জন্য কাজ করতে হবে। পরাজিত ফ্যাসিস্টরা ঘাপটি মেরে আছে। রাষ্ট্রের মধ্যে থাকা ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদ করতে হলে নতুন সংবিধান লাগবে।
সিম্পোজিয়ামে ‘নাগরিক ক্ষমতায়নের জন্য সংবিধান’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডি পলিটির মুখপাত্র মাসুদ জাকারিয়া। এতে বর্তমান সংবিধানের গলদ, ১৯৭২ এর সংবিধানের সীমাবদ্ধতা, নাগরিক অধিকার সংকোচিত করা, নতুন সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্রীয় গঠনতন্ত্র কেমন হওয়া উচিত, ক্ষমতাধারীদের জবাবদিহি, ক্ষমতার বৈধতা ও শাসন কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ জাসদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিরুল হকের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।
কবির/এমএ/