ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

ভারতের হাইকমিশনসহ কূটনৈতিকপাড়ায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
ভারতের হাইকমিশনসহ কূটনৈতিকপাড়ায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা
ভারতীয় হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশনগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ছবি : খবরের কাগজ

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় এখন উত্তাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঢাকার রাজপথ। প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ অবস্থায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশনগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকার গুলশান-বারিধারা তথা কূটনৈতিকপাড়ায় নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। 

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে কূটনৈতিকপাড়া ঘুরে দেখা যায়, ভারতের হাইকমিশনারসহ কূটনৈতিকপাড়ায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

ভারতীয় দূতাবাস এলাকায় দূতাবাসে যাওয়ার রাস্তা ও এর আশপাশে লেকের পাড়ে বিপুলসংখ্যক সেনা ও পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে সাঁজোয়া যানসহ (এপিসি) দাঙ্গা দমনের উপকরণ। রয়েছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এবিপিএন) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এ ছাড়া বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগ।

পুলিশের ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘কূটনৈতিকপাড়ায় সব সময় নিরাপত্তা থাকে। তবে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে বিক্ষোভ ও ন্যক্কারজনক হামলার পর এখানে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। আমরা বদলি ডিউটি করে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দিচ্ছি। এ ছাড়া ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন।’ 

যেকোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে আরও ফোর্স রেডি রাখা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। 

এ বিষয়ে গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদ আহম্মেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘সেনাবাহিনী, এপিবিএন, পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিএমও) ও গুলশান থানার পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। এই এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের হামলা বা বিশৃঙ্খলা করার সুযোগ নেই।’ 

ওসি বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। শঙ্কামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই কড়া নিরাপত্তা বহাল থাকবে।’ 

গতকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা আগরতলায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালান। এ সময় তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে ও আগুনে পুড়িয়ে দেন। পরে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন।

ঘটনার পর ঢাকার গুলশানে ভারতীয় হাইকমিশন ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট এবং খুলনার ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে ব্যাপক নিরপত্তা নেওয়া হয়েছে।
 
চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা জোরদার

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনার পর চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনার ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের পাশাপাশি ভারতীয় ভিসা সেন্টারে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। 

সোমবার বিকেল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী এলাকায় অবস্থিত সহকারী হাইকমিশন ও নগরের ২ নম্বর গেটে ভারতীয় ভিসা সেন্টারে নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা কাজী মো. তারেক আজিজ (এডিসি) বলেন, ‘ভারতের আগরতলায় ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন ও ভারতীয় ভিসা সেন্টারে নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সহকারী হাইকমিশন ও ভিসা সেন্টারের আশপাশের এলাকায় কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে।’ 

সোমবার থেকে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ রাজশাহীর সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়টিকে তিন স্তরের নিরাপত্তা দিচ্ছে। পাশাপাশি এই কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায় সাদাপোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। অন্যদিকে খুলনায় বিক্ষুব্ধ সাধারণ ছাত্র-জনতা ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের অফিসের সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এতে নগরীর শামসুর রহমান রোডে অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন ঘিরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করে। 

মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজশাহী শহরের পদ্মা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত সহকারী হাইকমিশন ভবন এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচলও সীমিত করা হয়। আর খুলনার সহকারী হাইকমিশনারের অফিসের সামনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে সশস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

রাজশাহী সহকারী হাইকমিশনের সামনে দায়িত্বরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কয়েক দিন ধরেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হামলার ঘটনার পর পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। 

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন, সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবন এবং ভিসা আবেদন কেন্দ্র ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি সাদাপোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিও চলছে আশপাশের এলাকায়। এসব স্থাপনায় হামলার কোনো শঙ্কা নেই। তারপরেও আমরা সতর্ক আছি।’

এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে খুলনার সহকারী হাইকমিশনের অফিসের সামনে যেতে চাইলে পুলিশ আহসান আহমেদ রোড ও শামসুর রহমান রোডের সংযোগস্থলে অবস্থান নিয়ে তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ইসকন ও ভারতবিরোধী স্লোগান দেন।

 

অবশেষে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
অবশেষে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক
পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি ও সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি ও সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপের সম্পৃক্ততা রয়েছে- এমন অভিযোগ আসার পর তিনি মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পদত্যাগ করলেন। ওই দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপের জড়িত থাকার তদন্তও হচ্ছে।

এর আগে তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর জোট ‘ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন’। এই জোটে রয়েছে অক্সফ্যাম, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ও স্পটলাইট অন করাপশনের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন। 

টিউলিপ যুক্তরাজ্যের ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ দেশটির অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। অথচ খোদ তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন নামের ওই জোট গত সোমবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে টিউলিপ সিদ্দিককে দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, টিউলিপ যুক্তরাজ্যের অর্থ পাচারবিষয়ক নীতি ও আর্থিক অপরাধ রোধসংক্রান্ত সংস্থার দায়িত্বে আছেন। তিনি এমন সময়ে ওই দায়িত্ব পালন করছেন যখন দুর্নীতিতে তার প্রত্যক্ষ সম্পর্কের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আর ওই ক্ষমতাচ্যুত শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপের জড়িত থাকার তদন্ত হচ্ছে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দায়িত্ব নিয়ে টিউলিপ শপথ ভাঙলে সেটাই তার পদত্যাগের জন্য যথেষ্ট। তার দুর্নীতি নিয়ে স্বাধীন উপদেষ্টার তদন্তের ফলাফলের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই। বর্তমান দায়িত্বের আওতায় যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুনাম রক্ষায় জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। 

টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। সর্বশেষ সামনে আসা অভিযোগটি হলো, বাংলাদেশে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে পাওয়া একাধিক ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন টিউলিপ। এটি সামনে আসার পরপরই তা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক। 

শুধু আবাসনবিষয়কই নয়, বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে টিউলিপের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এর আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা কার্যালয়ের প্রোপ্রাইটি অ্যান্ড এথিকস টিম (পিইটি)।  

এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতারাও টিউলিপকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার তার বন্ধু টিউলিপকে রক্ষা করছেন- এমন অভিযোগও করেছেন তারা। 

টিউলিপের বিরুদ্ধে আবাসনবিষয়ক অভিযোগ ওঠার পর তিনি নিজেই যুক্তরাজ্যের ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্টারিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস পদে থাকা লরি ম্যাগনাসকে চিঠি দেন। টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেন। 

টিউলিপের প্রতি আস্থা জানিয়ে এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার বলেন, তিনি (টিউলিপ) ‘সম্পূর্ণ সঠিক’ কাজ করেছেন। এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্রিটিশ গণমাধ্যম সানডে টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের সম্পত্তিগুলোর বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। যদি তিনি সেগুলো ‘স্পষ্টভাবে ডাকাতি’ করে অর্জন করে থাকেন, তবে তা সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক বৃহস্পতিবার: মাহফুজ আলম

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক বৃহস্পতিবার: মাহফুজ আলম
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সর্বদলীয় বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘আলোচনার স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি। খসড়া ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াত, গণতন্ত্রমঞ্চসহ রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার সঙ্গে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে।’

এর আগে গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না। সরকার ঘোষণাপত্রের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করছে। ঘোষণাপত্র আসবে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। সেজন্য সংগঠন দুটির কর্মীরা সারাদেশ থেকে শহিদ মিনারে জড়ো হয়েছিল। এ ঘোষণাপত্র নিয়ে তখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং তখন এ উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছিল।

গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।ওই রাতেই বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তাই এ লক্ষ্যে জনমত তৈরিতে সারা দেশে প্রচারপত্র বিতরণ ও জনসংযোগ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

মাহফুজ/এমএ/

এলপি গ্যাসের দাম বাড়ল

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
এলপি গ্যাসের দাম বাড়ল
ছবি : সংগৃহীত

তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজির সিলিন্ডারের ভোক্তাপর্যায়ে ৪ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৫৯ টাকা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দামের ঘোষণা দেয় বিইআরসি। আজ সন্ধ্যা থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৫৯ টাকা, যা মাসের শুরুতে নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪৫৫ টাকায়। 

এছাড়া বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ প্রতি কেজি গ্যাসের দাম ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা ও রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহ করা গ্যাসের দাম ১১৭ টাকা ৮১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়াও গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬৭ টাকা ২৭ পয়সা, যা আগে ছিল ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা।

এমএ/

জাতীয় নির্বাচনে ইসিকে সহায়তা দেবে ইউএনডিপি

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
জাতীয় নির্বাচনে ইসিকে সহায়তা দেবে ইউএনডিপি
নির্বাচন কমিশনে কথা বলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসির চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সহায়তা দেবে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি- ইউএনডিপি। অন্যদিকে আগামী নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা তৈরি, টেকনিক্যাল ও প্রযুক্তিগত সাপোর্ট, প্রশিক্ষণ কার্যক্রমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইউএনডিপির কাছে সহায়তা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইউএনডিপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য জানান জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এবং ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

এর আগে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যদের প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিবের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন।

আলোচনা শেষে লুইস সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে সহায়তা চেয়ে জাতিসংঘে ইসির পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে আমরা এসেছি। কমিশন কীভাবে নির্বাচন আয়োজন করতে চায়- আমরা তা বোঝার চেষ্টা করছি। আইটি সক্ষমতা উন্নয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজের জন্য কারিগরি সহায়তা চেয়ে অনুরোধ করেছে ইসি। অপতথ্যের বিস্তৃতিরোধেও সহায়তা চেয়েছে তারা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে কমিশনের আরও কী কী সহযোগিতা প্রয়োজন, সেগুলোর মূল্যায়ন আমরা করবো। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন এবং সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তারা এই মূল্যায়ন সম্পন্ন করতে চান। ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও অপতথ্য মোকাবিলায় সহযোগিতাসহ বিস্তৃত বিষয়ে সহায়তা দিতে পারে ইউএনডিপি।

নির্বাচন ইউএনডিপির কাছে কমিশনের সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘ইউএনডিপির কাছে আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য ভোটার তালিকা তৈরির কার্যক্রম, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা চেয়েছি। তার মধ্যে রয়েছে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন, যোগাযোগ, এসডিজির কিছু গোল অর্জনের মতো কিছু বিষয়। তবে ইভিএম বিষয়ে এবং অর্থনৈতিক সহায়তার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। প্রতিনিধি দলটি এ সব প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা করতেই এসেছে। সংস্থাটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করবে না, বরং ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজে তথ্য প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা করবে। তাদের সহযোগিতা নিতে আমাদের এখানে তাদের একটা ক্যাম্প অফিস স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তারা নিয়মিত কাজ করবেন।

এ সময় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইসির পরিকল্পনা জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ধারাবাহিকভাবে আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা আমাদের যে গাইডলাইন দিয়েছেন, আমরা তার ভেতর কাজ করছি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছর জুন অথবা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, সংস্কার সীমিত আকারের করা হলে ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব হবে।

এলিস/নাবিল/এমএ/

বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে একত্রিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে একত্রিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
যমুনায় ড. ইউনূসের সঙ্গে ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংয়ের সাক্ষাৎ। ছবি: পিআইডি

দেশে অধিকহারে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং এবং কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

সাক্ষাতে কিহাক সাং বেশ কিছু সমস্যা উত্থাপন করে বলেন, এসব সমস্যা বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে। তিনি বড় আকারে বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা কিহাক সাং-কে জানান, কোরিয়ান ইপিজেডের ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যা শিল্প পার্কে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এর সমাধান করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই কোরিয়ান ইপিজেড সবার জন্য একটি মডেল হোক। আমরা আশা করি এটি বড় বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং এতে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

কোরিয়ান ইপিজেডের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় প্রশংসা করেন কিহাক সাং। তিনি বলেন, ‘আরও কোরিয়ান বিনিয়োগকারী এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন।’

কিহাক সাং বলেন, ‘এটি অন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য দরজা খুলে দেবে। কোরিয়ান ইপিজেড অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি মডেল হবে।’

ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান সরকারকে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য শিপমেন্ট প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের বৃহত্তম বন্দরে ধীর কার্যক্রমের কারণে শীর্ষস্থানীয় গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো উচ্চমানের ও ফ্যাশন পোশাকের অর্ডার দিতে আগ্রহী নয়।

তিনি বলেন, ফ্যাশন পোশাকের দ্রুত রপ্তানি কার্যক্রম সম্পন্ন করা প্রয়োজন, সেটি ১০-১৫ দিনের মধ্যে হতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে কখনও কখনও শিপমেন্ট সম্পন্ন করতে কয়েক মাস সময় লাগে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কিহাক সাং ভিয়েতনামের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, সেখানে তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় বিনিয়োগ করেছেন। দেশটি রপ্তানি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বন্দরের কার্যক্রমে দক্ষতা বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী চট্টগ্রাম বন্দরকে এই অঞ্চলের শীর্ষ বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

কিহাক সাং ও ব্রিটিশ বিনিয়োগকারী মোহাম্মদ এ মতিন সকল বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থাকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তারা বলেন, এটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একক সেবা প্রদান নিশ্চিত করবে।

কিহাক সাং বলেন, ইয়াংওয়ান বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে নির্মাণ করেছে, যেখান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি তরুণ প্রশিক্ষণ নেবে। তিনি জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে।

কিহাক সাং অধ্যাপক ইউনূসকে ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সূত্র: বাসস